বাসন্তী, 25 জানুয়ারি: আবারও শাসকদলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে উত্তপ্ত বাসন্তী । গুরুতর জখম যুব তৃণমূল কর্মী । ঘটনাটি ঘটেছে মঙ্গলবার রাতে বাসন্তী থানার আমঝাড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের ঢুঁড়ি এলাকায় । ঘটনায় গুরুতর জখম হয়েছেন মোরসেলিম সেখ নামে এক যুব তৃণমূল কংগ্রেস কর্মী (one injured in Faction fight of TMC) । বর্তমানে ওই কর্মী ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন । এলাকায় উত্তেজনা ।
গত 18 জানুয়ারি বিজেপির ডাকে বাসন্তীতে একটি মিছিল ও জনসভা হয় । সেই জনসভায় উপস্থিত ছিলেন বিজেপির কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা তথা অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী ও রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার । বিজেপির সেই জনসভার পালটা দিতে তৃণমূল কংগ্রেসের উদ্যোগে রবিবার বিকেলে জনসভার আয়োজন হয় বাসন্তীতে । উপস্থিত ছিলেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য ।
রবিবার মন্ত্রী যখন বাসন্তীর সভাস্থলে যাচ্ছিলেন, সেই সময় বেশকিছু তৃণমূল কর্মী-সমর্থক তাঁর (Chandrima Bhattacharya) গাড়ি আটকে ভাঙনখালির কলতলা এলাকায় বিক্ষোভ দেখায় । মূলত তৃণমূল কংগ্রেসের একটি অংশকে জনসভা সম্পর্কে না জানানোর কারণেই হয় ওই বিক্ষোভ । যদিও সে কথা অস্বীকার করেছেন বাসন্তীর বিধায়ক শ্যামল মণ্ডল । এই প্রসঙ্গে বিধায়ক বলেন, "সকলকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল ।"
প্রথমত, রবিবার জনসভায় উপস্থিত না হওয়ার জন্য এলাকার যুব তৃণমূল কর্মীদের একাংশের উপর হামলা হয় বলে অভিযোগ । এরপর সোমবার বাসন্তীর ভাঙনখালির কলতলা এলাকায় মাদার গোষ্ঠীর লোকজনের হাতে আক্রান্ত হয়েছিলেন জয়নুদ্দিন মণ্ডল নামে এক যুব তৃণমূল কর্মী । যদিও কলতলার ঘটনাকে পারিবারিক বিবাদ বলে জানিয়েছেন বিধায়ক শ্যামল মণ্ডল । ঘটনার সঙ্গে রাজনৈতিক কোন যোগ নেই বলেও তিনি মন্তব্য করেন ।
পরপর দু'দিন এই দুটি ঘটনার পর মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢুঁড়ি বাজারে চা খেতে গিয়েছিলেন মোরসেলিম সেখ নামে এক যুব তৃণমূল কর্মী । অভিযোগ সেখানে তৃণমূলেরই জনা কুড়ি সমর্থক মোরসেলিমকে লাঠি, লোহার রড, কোদালের বাঁট দিয়ে বেধড়ক মারধর করে । ঘটনায় গুরুতর জখম হন তিনি । পরে স্থানীয়রা তাঁকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য ক্যানিং মহকুমা হাসপাতালে নিয়ে যায় । মোরসেলিমের দাবি করেন, 'ঢুঁড়ি এলাকায় বেশ কিছু দুষ্কৃতী এবং সমাজবিরোধী রয়েছে । যারা বিগত দিনে আরএসপি, সিপিএমের ছত্রছায়ায় ছিল । বর্তমানে তৃণমূলের ছত্রছায়ায় রয়েছে । তাদের ইচ্ছামতো দল করতে হবে । তাদের ইচ্ছাকে প্রাধান্য না দেওয়ায় এমন অত্যাচার চালাচ্ছে । ঘটনার বিষয়ে পুলিশকে জানিয়েছি ।"
অন্যদিকে, যুব তৃণমূল কংগ্রেসের স্থানীয় কর্মী বাবলু কয়াল বলেন, "এলাকায় লাল্টু বায়েন, বেনে কয়াল, ছট্টু কয়ালদের মতো বেশকিছু সমাজবিরোধী রয়েছে । যারা বিগত দিনে খুনের ঘটনায় জড়িত । বর্তমানে জামিন নিয়ে তারা তৃণমূল কংগ্রেসের মাদার দলের ছত্রছায়ায় থেকে এলাকা দখলের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে । আর সেই কারণেই যুব তৃণমূল কর্মীদের উপর আক্রমণ চালাচ্ছে । পুলিশকে জানিয়েও কোনও সুরাহা হয়নি ।"
আরও পড়ুন: ফের গোষ্ঠীকোন্দল প্রকাশ্যে, বাসন্তীতে আক্রান্ত তৃণমূল কর্মী