পাথরপ্রতিমা, 26 সেপ্টেম্বর: জলে কুমির আর ডাঙ্গায় বাঘ এটাই সুন্দরবনের মানুষের জীবন যাপনের রোজনামচা। দক্ষিণ 24 পরগনার পাথরপ্রতিমা দ্বীপের মানুষদের যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম হল নদীপথ। প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই যাতায়াত করতে হয় নিত্যদিন। কিন্তু এতদিন সেই জেটিঘাটগুলির অবস্থাও ছিল তথৈবচ ৷ বারবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হওয়ার পর অবশেষে মিলেছে সমাধান ৷ পাথরপ্রতিমার প্রান্তিক এলাকার মানুষদের জন্য চারটি আধুনিক জেটি নির্মাণের কাজ শুরু করল রাজ্যের পরিবহন দফতর।
মঙ্গলবার জেটি নির্মাণের কাজের শিলান্যাস করেন পরিবহনমন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তী। এদিনের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন পাথরপ্রতিমার বিধায়ক সমীর জানা, জেলার সভাধিপতি-সহ একাধিক বিশিষ্ট জনেরা। আগামী 6 মাসের মধ্যে এই জেটি নির্মাণের কাজ সুসম্পন্ন হবে বলে জানা গিয়েছে। এ বিষয়ে মন্ত্রী স্নেহাশীষ চক্রবর্তী বলেন, "উত্তরে পাহাড় আর দক্ষিণে সাগর ৷ আর সুন্দরবনের অন্যতম সুন্দর একটি দ্বীপ হল পাথরপ্রতিমা। এখানে দুর্গম রাস্তাঘাট ৷ অ্যাম্বলেন্স ছাড়া অনান্য পরিষেবা দিতে অসুবিধা হয় ৷ সাধারণের মানুষের যাতায়াতের সুবিধার্থেই এখানে চারটে জেটি ঘাট তৈরি করা হবে ৷ সেখানে যেমন মানুষ পারাপার করতে পারবে ৷ তেমনি বড় গাড়িও পারাপার করতে পারবে ৷"
এ বিষয়ে স্থানীয় বাসিন্দা বিজয়কৃষ্ণ সাউ জানান, জেটি নির্মাণের পর কলকাতার সঙ্গে পাথরপ্রতিমা যোগাযোগ ব্যবস্থা অনেকটাই সুগম হবে। এর ফলে সাধারণ মানুষ খুব উপকৃত হবে। এতদিন যাতায়াতে খুব সমস্যা হতো ৷ আশা করছি, তাড়াতাড়ি এই জেটিঘাট তৈরি হয়ে যাবে ৷
পাথর প্রতিমার দ্বীপের যে সকল জেটিঘাটগুলি রয়েছে সেগুলির অবস্থা বেহাল। সাধারণ মানুষের যাতায়াতের ক্ষেত্রে এই বেহাল জেটির কারণে কার্যত ভাটার সময় কাদার মধ্যে দিয়ে চলাফেলা করতে হয়। বেশ কয়েকবার মানুষজনদের কুমিরের আক্রমণের শিকার হতে হয়েছিল। প্রান্তিক দ্বীপ এলাকার বাসিন্দারা জেটি সংস্কারের জন্য বারবার প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছিল। অবশেষে মিলেছে সুরাহা ।
আরও পড়ুন: বাঘেদের অত্যাধুনিক চিকিৎসায় সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল, উদ্বোধন সম্ভবত চলতি বছরের শেষেই
রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে প্রায় 44 কোটি টাকা ব্যয়ে পাথরপ্রতিমায় চারটি আধুনিক জেটি নির্মাণের কাজ শুরু করল পরিবহন দফতর। এই জেটিগুলিতে থাকবে আধুনিক ব্যবস্থাপনা। পাথরপ্রতিমা দ্বীপের অচিন্ত্য নগর থেকে বনশ্যামনগর খেয়াঘাটে আধুনিক জেটি নির্মাণ করা হবে। এছাড়াও কালীবঙ্গাল ঘাট ও চাঁদমারি ঘাটে আধুনিক মানের জেটি নির্মাণ করা হবে।