সুন্দরবন, 21 জানুয়ারি: সুন্দরবনে প্রতি বছর পৌষ সংক্রান্তির শেষে বনবিবির পুজো শুরু হয়েছে (Bonbibi Festival in Sundarbans) ৷ বনবিবি সুন্দরবনবাসীর ইষ্টদেবী ৷ বলা যেতে পারে অভিভাবক তিনি ৷ মাছ ধরতে বা মধু সংগ্রহে যাওয়ার আগে বনবিবির আরাধনা বহুকাল ধরে চলে আসছে ৷ আর এই মাঘ মাসের শুরুতে জাঁকযমকের সঙ্গে বনবিবির পুজো করেন সুন্দরবনবাসী ৷ বনবিবির বার্ষিক পুজো ‘বনবিবির উৎসব’ হিসেবেই গ্রামবাংলায় প্রচলিত রয়েছে ৷ প্রতিবারের মতো, এবারেও বনবিবির উৎসব উপলক্ষ্যে সুন্দরবনে বসেছে মেলা ৷
সেই মতো শুক্রবার থেকে শুরু হয়েছে দক্ষিণ 24 পরগনার জয়নগরের রামরুদ্রপুরের অতি প্রাচীন বনবিবির মেলা ৷ গত দু’বছর করোনার জন্য মেলা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল ৷ সংক্রমণের রেষ কমতেই আবারও শুরু হয়েছে বনবিবির মেলা ৷ বেশ কয়েকদিন ধরে চলবে এই মেলা ৷ সাধারণত সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকাতে মাঘ মাসের এক তারিখ থেকে বনবিবির মেলা বসে ৷ আর মেলার পাশাপাশি চলে বনবিবির পুজো ৷
সুন্দরবনের গ্রামের মহিলারা সকাল থেকে উপস করে ব্রত পালন করেন ৷ নতুন মাটির পাত্রে ক্ষীর রান্না করা হয় দেবীর জন্য ৷ বনবিবির পুজো সাধারণত করা হয় উলটো পুঁথি পাঠ করে ৷ দেবীর আরাধনায় পুরোহিতের চল নেই ৷ গ্রামের মহিলারা পুঁথি পাঠ করে দেবীর পুজো করেন ৷ বনবিবির উৎসব উপলক্ষ্যে মূর্তির দোকানেও এবার মানুষজনের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো ৷ বিভিন্ন মাপের দেবীর মূর্তি বিক্রি হচ্ছে ৷
আরও পড়ুন: সুন্দরবনে বনবিবির পুজো দিলেন মুখ্যমন্ত্রী, করলেন বৃক্ষরোপণ
বনবিবির উৎসব উপলক্ষ্যে সুন্দরবনের গ্রামে গঞ্জে শুরু হয়েছে মেলা ৷ সুন্দরবনের বাসিন্দাদের হাতে তৈরির নানান সামগ্রীর পসরা বসে এই মেলায় ৷ জয়নগরের রামরুদ্রপুরের বনবিবির মেলায় ৷ নানান ধরনের খাবারের দোকান বসেছে ৷ সেখানে জিলিপি, গজা, নানান ধরনের খাজা-সহ রকমারি খাবারের পসরা বসেছে ৷ উল্লেখ্য, 1361 সালে প্রথম বনবিবির পুজো হয় রামরুদ্রপুরে ৷ তখন থেকেই রামরুদ্রপুরের বাসিন্দাদের প্রতিটি প্রজন্ম সেই রীতিপালন করে চলেছেন ৷