নামখানা, 19 ফেব্রুয়ারি : প্রশাসনের চোখে ফাঁকি দিয়ে সুন্দরবনে দিনের পর দিন ম্যানগ্রোভ ধ্বংসের অভিযোগ ৷ ম্যানগ্রোভের জঙ্গল পরিষ্কার করে মাছের ভেড়ি তৈরির অভিযোগ উঠেছে বেশ কিছু অসাধু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে (Sundarbans Mangrove Crisis because of fisheries) ৷ আর তাঁদের পিছনে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের হাত রয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে ৷ ঘটনা সুন্দরবনের নামখানার লালপুরের সুন্দরিকা-দোয়ানিয়া খাল এলাকার ৷ খালের দু’পাশের ম্যানগ্রোভ কেটে সেখানে বেআইনিভাবে মাছের ভেড়ি গজিয়ে উঠছে বলে অভিযোগ করেছেন বহু গ্রামবাসী ৷
সুন্দরবনের ম্যানগ্রোভ অরণ্যের কারণে বহু ঘূর্ণিঝড়ের ধ্বংসলীলা থেকে রেহাই পেয়েছে দক্ষিণবঙ্গ ৷ এ বার সেই ম্যানগ্রোভই অস্তিত্ব সংকটে ৷ কিছু অসাধু ব্যবসায়ী প্রভাবশালীদের মদতে ম্যানগ্রোভ পরিষ্কার করে মাছের ভেড়ি তৈরি করছে বলে অভিযোগ ৷ নামখানার লালপুল এলাকার সুন্দরিকা-দোয়ানিয়া খালের দু’পাশে নির্বিচারে ম্যানগ্রোভ নিধন চলছে বলে অভিযোগ করেছেন স্থানীয়রা ৷ এমনকি চন্দ্রনগর, চন্দনপিড়ি, হরিপুর এলাকাতেও একইভাবে ম্যানগ্রোভ কেটে বেআইনি মেছোভেড়ি তৈরি কাজ চলছে ৷ অভিযোগ উঠেছে, প্রশাসনের তরফে কোনও নজরদারি চালানো হচ্ছে না ৷
আরও পড়ুন : সুন্দরবনে ম্যানগ্রোভ ধ্বংস করে মাছের ভেড়ি, রায়দিঘিতে হাইকোর্টের প্রতিনিধি দল
উল্টো দিকে, আমফান এবং ইয়াসের তাণ্ডবের পর রাজ্য সরকারের তরফে সুন্দরবন এলাকায় ম্যানগ্রোভ গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে ৷ লক্ষাধিক গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে প্রশাসনের তরফে ৷ যা পরবর্তী সময়ে এমন প্রাকৃতিক দুর্যোগ এড়ানো যায় ৷ কিন্তু, সুন্দরবন এলাকার একদল অসাধু ব্যবসায়ী ফের বৃক্ষ নিধন শুরু করেছে ৷ কিন্তু, প্রশাসনের নজর এড়িয়ে কীভাবে এই কাজ চলছে ? সেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ৷ স্থানীয়দের অভিযোগ, প্রশাসনকে এ নিয়ে ইতিমধ্যে অভিযোগ করা হয়েছে ৷ কিন্তু, এখনও কোনও ব্য়বস্থা নেওয়া হয়নি ৷ এমনকি ম্যানগ্রোভ কাটার কাজ রাতে করা হচ্ছে ৷ যন্ত্রচালিত কাটার দিয়ে নিমেষের মধ্যে আস্ত গাছ কেটে সাফ করে দেওয়া হচ্ছে ৷
আরও পড়ুন : World Mangrove Day : সুন্দরবনে পালিত হল বিশ্ব ম্যানগ্রোভ দিবস
এ নিয়ে নামখানার ব্লক ডেভলপমেন্ট অফিসার শান্তনু সিং ঠাকুরকে প্রশ্ন করা হলে তিনি জানান, যে সব অসাধু ব্যবসায়ীরা এই কাজ করছে, তাঁদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে ৷ পাশাপাশি, প্রশাসনের উদ্যোগে প্রায় আড়াই হাজার হেক্টর জমিতে 12.51 কোটি ম্যানগ্রোভ গাছের চারা লাগানো হয়েছে ৷ বন দফচরের সাহায্যে একশো দিনের কাজের আওতায় স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাগের দিয়ে এই কাজ করানো হয়েছে ৷