ক্যানিং, 5 জুন: ম্যানগ্রোভ (Mangrove) বাঁচিয়েছে সুন্দরবনকে (Sundarban), ম্যানগ্রোভই বাঁচাবে সুন্দরবনকে ৷ বুঝেছেন সুন্দরবনের মানুষ ৷ তাই ফের ক্যানিংয়ে নদীর তীরে জোর কদমে চলছে ম্যানগ্রোভ রোপণের কাজ ৷
আমফানের পর সুন্দরবনে নদী তীর বরাবর 3 হাজার হেক্টর জমিতে 5 কোটি ম্যানগ্রোভ লাগানোর নির্দেশ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) ৷ সেই মতো রাজ্যের বন দফতর ও দক্ষিণ 24 পরগনা জেলা প্রশাসনের মহাত্মা গান্ধি ন্যাশানাল রুরাল এমপ্লয়মেন্ট গ্যারান্টি অ্যাক্ট (MGNREGA)-এর যৌথ উদ্যোগে সুন্দরবনের নদীগুলির ধারে ম্যানগ্রোভ রোপণ হয় ৷ তাই যশে ক্ষতি হয়নি সেই সব নদী বাঁধের, যেখানে ছিল ম্যানগ্রোভের পাহারা ৷ যশের পর মুখ্যমন্ত্রী ফের আকাশপথে সুন্দরবনের দুর্যোগ বিধ্বস্ত অঞ্চল পরিদর্শন করেন । এরপর নবান্ন থেকে আরও বেশি ম্যানোগ্রোভ রোপণের জোর দেন ।
দক্ষিণ 24 পরগনার জেলা শাসক পি উলগানাথন বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী আরও বেশি ম্যানোগ্রোভ রোপণের বিষয়ে জোর দিয়েছেন । এই কাজের সঙ্গে সেচ দফতরকে নেওয়া যায় কিনা তা ভাবা হচ্ছে ।''
এমজিএনআরইএ দফতরের জেলার নোডাল অফিশার সৌরভ চট্টোপাধ্যায় বলেন, "সুন্দরবনের মানুষই পারবে সুন্দরবনকে বাঁচাতে । তাই মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ মতো আমরা নদী সংলগ্ন এলাকার আমরা ম্যানগ্রোভের প্রাচীর তৈরির কাজ করাচ্ছি । সাফল্য পাচ্ছি ।"
আরও পড়ুন: ম্যানগ্রোভ কেটে মেছো ভেড়ি তৈরি, রাজনৈতিক তরজা কুলতলিতে
সৌরভবাবু জানান, সুন্দরবন ব্যাঘ্র প্রকল্প দফতর 500 হেক্টর জমিতে, দক্ষিণ 24 পরগনা বন দফতর 2 হাজার হেক্টর জমিতে এবং সুন্দরবন অধ্যুষিত তেরোটি ব্লক এলাকার পঞ্চায়েতগুলি 500 হেক্টর জমিতে ম্যানগ্রোভ অরণ্য তৈরি করেছে । আরও রোপনের কাজ চলছে । এবারও প্রায় 5 হাজার হেক্টর জমিতে নতুন করে ম্যানগ্রোভ চারা তৈরির উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে । ইতিমধ্যে কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে ।
সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, আয়লায় সাড়ে 3 হাজার কিলোমিটার নদীবাঁধের মধ্যে 778 কিলোমিটার নদীবাঁধ ভেঙে গিয়েছিল । এরমধ্যে 178 কিমি বাঁধ ধুয়েমুছে সাফ হয়ে গিয়েছিল । পরে নতুন করে বাঁধ মেরামত হয় । নতুন বাঁধগুলির ধারে ম্যানগ্রোভ রোপণের কারণে এবারের দুর্যোগে ক্ষতি হয়েছে কম ।
এমজিএনআরইএ দফতরের জেলার নোডাল অফিসার সৌরভ চট্টোপাধ্যায় দাবি করেন, "ম্যানগ্রোভ রোপণের কারণেই ক্যানিং 1 ব্লকের নিকারিঘাটা, গোসাবা ব্লকের ছোট মোল্লাখালি পঞ্চায়েত এলাকার নদীবাঁধগুলি রক্ষা পেয়েছে ।"
সুন্দরবন উন্নয়ন মন্ত্রী বঙ্কিম হাজরা (Bankim Hazra) বলেন, "যশে ক্ষতি হয়নি সেই সব নদী বাঁধেরই, যেখানে ছিল ম্যানগ্রোভের পাহারা ৷ ফলে ম্যানগ্রোভ রোপণ চলবে ৷"