গঙ্গাসাগর, 26 ডিসেম্বর: ক্রমশ দূরত্ব কমছে কপিলমুনি আশ্রম ও সাগরের ৷ এই দূরত্ব কমাকে কেন্দ্র করে উদ্বিগ্ন দক্ষিণ 24 পরগনা জেলা প্রশাসন ৷ এই পরিস্থিতিতে দ্রুত স্থায়ী কোনও ব্যবস্থার ভাবনাচিন্তার দাবি উঠেছে ৷ তবে, এই মুহূর্তে গঙ্গাসাগর মেলার প্রস্তুতি চলছে ৷ মকর সংক্রান্তি উপলক্ষ্যে 10 জানুয়ারি গঙ্গাসাগর মেলা শুরু হবে ৷ তার আগে গঙ্গাসাগরের 2-5 নম্বর স্নানঘাটে অস্থায়ী বাঁধ মেরামতির কাজ চলছে ৷ প্রশাসন সূত্রে খবর, এই মুহূর্তে কপিলমুনির আশ্রম ও সাগরের দূরত্ব কমে 200 মিটারের মধ্যে চলে এসেছে ৷
অস্তিত্ব সংকটের মুখে গঙ্গাসাগরের ঐতিহাসিক কপিলমুনির আশ্রম ৷ একের পর এক প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও নদী ভাঙনের কারণে সাগর ক্রমশ এগিয়ে আসছে কপিলমুনির মূল মন্দিরের দিকে ৷ নদী ভাঙনের কারণে উদ্বিগ্ন জেলা প্রশাসন ইতিমধ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ নিয়েছে ৷ তবে, এই মুহূর্তে রাজ্যের সেচ দফতর অস্থায়ীভাবে সাগরের বাঁধ মেরামতির ব্যবস্থা করেছে ৷ এর জন্য 1 কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে ৷ সেই কাজ এই মুহূর্তে চলছে ৷ পরবর্তী সময়ের জন্য বেশ কিছু পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে প্রশাসনের তরফে ৷
স্থানীয় বাসিন্দা মোকসেদুল খান বলেন, ‘‘আসন্ন গঙ্গাসাগর মেলাকে মাথায় রেখে অস্থায়ীভাবে বাঁধ মেরামতির কাজ শুরু করেছে রাজ্য সরকার ৷ কিন্তু, এই অস্থায়ী বাঁধ মেরামতির কাজ কখনও সুরাহা হতে পারে না ৷ কপিলমুনির মন্দিরকে রক্ষা করার জন্য স্থায়ী কংক্রিটের বাঁধ একমাত্র সমাধান ৷ বর্তমান কপিলমুনি মন্দিরের সঙ্গে বঙ্গোপসাগরের দূরত্ব কমে 200 মিটারে এসে দাঁড়িয়েছে ৷ আগে যে দূরত্ব ছিল প্রায় তিন থেকে চার কিলোমিটার ৷ এই নদী ভাঙনের কারণে এর আগেও চারটি মন্দির নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে ৷ ভরা কোটালের সময় কপিলমুনি মন্দির প্রাঙ্গন পর্যন্ত সাগরের জল চলে আসে ৷ একে বাঁচাতে হলে একমাত্র স্থায়ী কংক্রিট বাঁধ দিতে হবে ৷’’
গঙ্গাসাগর গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হরিপদ মণ্ডল বলেন, ‘‘প্রতিবছর গঙ্গাসাগর মেলাকে কেন্দ্র করে লক্ষ লক্ষ পুণ্যার্থীদের ভিড় হয় এই কপিলমুনির আশ্রমে ৷ কিন্তু, যেভাবে নদী ভাঙন হচ্ছে, তাতে আগামী দিনে কপিলমুনির মন্দির রক্ষা করা নিয়ে সংশয় রয়েছে ৷ ইতিমধ্যে, গঙ্গাসাগর মেলাকে মাথায় রেখে প্রায় এক কোটি টাকা ব্যয়ে এক নম্বর স্নানঘাট থেকে পাঁচ নম্বর স্নানঘাট পর্যন্ত নদীবাঁধ অস্থায়ীভাবে মেরামতির কাজ শুরু হয়েছে ৷ ঐতিহাসিক ও পৌরাণিক কাহিনী সঙ্গে যুক্ত কপিলমুনি মন্দিরকে রক্ষা করার জন্য স্থায়ী কংক্রিটের নদী বাঁধ প্রয়োজন ৷ মাননীয় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আমাদের অনুরোধ, দিঘার অনুকরণে সমুদ্র সৈকতকে অক্ষত রেখে স্থায়ী কংক্রিটের বাঁধ নির্মাণ করা হোক ৷ তাহলে আগামী দিনে কপিলমুনি মন্দিরকে বাঁচানো যাবে ৷’’
আরও পড়ুন: