সুন্দরবন, 30 মার্চ: এলাবাসীদের স্বনির্ভর করে তুলতে এগিয়ে এল জয়নগর নিমপীঠ কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র। সুন্দরবনের নদী-খাঁড়িতে মাছ-কাঁকড়া ধরে জীবিকা নির্বাহ করেন বহু মানুষ। তবে তাঁদের মাছ ধরার এলাকা নির্দিষ্ট করা রয়েছে। জঙ্গলের গভীরে বা 'কোর' এলাকায় মাছ ধরতে বা অন্য কোনও কারণে ঢোকা নিষিদ্ধ। কিন্তু অভিযোগ, বেশি মাছ-কাঁকড়ার লোভে অনেক মত্স্যজীবীই নিষিদ্ধ এলাকায় ঢুকে পড়ছেন। গত কয়েক বছরে 'কোর' এলাকায় ঢুকে বাঘের হামলার মুখে পড়ে প্রাণও হারিয়েছেন অনেকে। সেই কারণে এগিয়ে এসেছে জয়নগর নিমপীঠ কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র ৷
নিমপীঠ কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের এক বিজ্ঞানী প্রবীর কুমার গড়াই জানান, যেভাবে সুন্দরবনের গভীর অরণ্যে মধু সংগ্রহের উদ্দেশ্যে মৌলরা যান, বিপদ থাকলেও তাঁদের কিছুই করার থাকে না। কিন্তু তাঁরা মধু সংগ্রহ করেন। বাঘেদের কোর এরিয়ায় ঢুকে পড়ার কারণে প্রচুর মৌলরা মারা যান যার কারণে নিমপীঠ কৃষিবিজ্ঞান থেকে সেই সব মৌলদের নিয়ে এই কৃষিবিজ্ঞান অফিসে সেমিনার করা হয়। সেখানে তাঁদেরকে গভীর জঙ্গলে না-গিয়ে ঘরে বসে কীভাবে মৌমাছি পালন করে, মধু সংগ্রহ ও বিক্রি করে বেশি টাকা আয় করা যায় সেই তথ্য দেন নিমপীঠ কৃষি বিজ্ঞানের বিজ্ঞানীরা।
আরও পড়ুন: সরকারি উদ্যোগে মৌমাছি চাষ, মুখে হাসি ফুটছে সুন্দরবনের মউলেদের
এপ্রিল, মে ও জুন এই তিন মাস মধু সংগ্রহ করা হয় সুন্দরবনের জঙ্গল থেকে ৷ যেখানে তাঁদের বৈধ পাশ দিয়ে জঙ্গলের মধ্যে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ যে জঙ্গলে বাঘ থাকে না, সেই সমস্ত জঙ্গলে তাঁদেরকে নিয়ে যাওয়া হয় ৷ বনদফতরের নিরাপত্তা দিয়ে সেখানে তাঁরা মৌমাছির বাক্স বসিয়ে গরান, গেঁওয়া ইত্যাদি গাছে প্রচুর মৌমাছি মৌচাক বানায়। এই তিন মাস সেখান থেকে তাঁরা মধু সংগ্রহ করে প্রায় কয়েক লক্ষ টাকা উপার্জন করেন। পাশাপাশি তাঁরা এপ্রিল, মে, জুন এই তিন মাস ছাড়া বাকি 9 মাস বিভিন্ন সিজনের ফুল, ফল যেখানে হয়ে থাকে সেখানে বাক্স বসিয়ে এই মৌমাছি চাষ করে মধু সংগ্রহ করেন ৷ এর থেকে তাঁরা প্রতি মাসে হাজার হাজার টাকা ইনকাম করেন।