দক্ষিণ 24 পরগনা, 8 জানুয়ারি: ভাঙড়ে ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকায় বেআইনি অ্যাসিড কারখানায় হানা দিল পুলিশ। আর এই নিয়ে গোটা ঘটনায় লেগেছে রাজনৈতিক রঙ। বিরোধীদের দাবি তৃণমূলের মদতে অবৈধভাবে অ্যাসিড কারখানা চলত ভাঙড়ের বহিরামপুরে। গোপন সূত্রে খবর পেয়ে ভাঙড় থানার পুলিশ, ডিএসপি ক্রাইম তমাল সরকারের নেতৃত্বে ফরেনসিক টিম নিয়ে হানা দেয় ওই অ্যাসিড কারখানায়।
অ্যাসিড কারখানায় হানা দিয়ে হতবাক ফরেন্সিক আধিকারিকরা। ফরেন্সিকের সিনিয়র আধিকারিক দেবাশিস সিনহা জানান, সেখানে ক্লোরিন গ্যাস দিয়ে বিভিন্ন রকমের অ্যাসিড তৈরি করা হয়। এই ক্লোরিন গ্যাসের সিলিন্ডার লিক হলে, বহু মানুষের মৃত্যু হতে পারে জানিয়েছেন ফরেন্সিক আধিকারিক। ঘন জনবসতিপূর্ণ এলাকায় কিভাবে এই অ্যাসিড কারখানা চলছে? সেই নিয়েও তিনি প্রশ্ন তোলেন তিনি। পুরো ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে প্রশাসন।ডিএসপি ক্রাইম তমাল সরকার জানান, খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই তারা বেআইনি সেই কারখানায় হানা দেন। তারপর সেখান থেকে একাধিক নমুনা সংগ্রহ করছে ফরেন্সিক দল। নমুনা পরীক্ষার পরেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।
অন্যদিকে অ্যাসিড কারখানা চলার পিছনে তৃণমূলের মদত আছে বলে দাবি করেন স্থানীয় সিপিআইএম নেতা আসলাম ঘরামি। তিনি জানান ভাঙড়ে শুধু অ্যাসিড কারখানা নয়, পাশেই অবৈধভাবে চামড়ার কারখানা চলছে। সবগুলোই তৃণমূল নেতাদের মদতে চলে। প্রশাসন কড়া হাতে ব্যবস্থা নিলে এগুলি সব বন্ধ হয়ে যাবে। তবে, এই অভিযোগ অস্বীকার করে তৃণমূল নেতা বাহারুল ইসলাম দাবি করেন, এসবের পিছনে তৃণমূল মদত দেয়না। যদি তৃণমূলের কেউ এর পিছনে থাকে, পুলিশ তাদের গ্রেপ্তার করুক।
স্থানীয় বাসিন্দা এবং প্রশাসন সূত্রে খবর, দীর্ঘদিন ধরে এখানে এই অ্যাসিড কারখানা চলে আসছে। সোনালী কেমিক্যাল নামে অবৈধভাবে এই কারখানা চলছে। পুলিশ ওই কারখানা বন্ধ করে দিয়েছে। অবৈধভাবে কারখানা চালানোর জন্য কারখানার এক কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে ভাঙড় থানার পুলিশ। অন্যদিকে, ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি আধিকারিকরা নমুনা সংগ্রহ করে কলকাতার নিয়ে এসেছে পরীক্ষার জন্য। এ নিয়ে নলমুড়ি ব্লক স্বাস্থ্য কেন্দ্রের আধিকারিক অনিমেষ হোড় জানান, ক্লোরিন গ্যাসের যে দুর্গন্ধ তা থেকে মানুষের ক্যান্সার পর্যন্ত হতে পারে। এর পাশাপাশি ওই সিলিন্ডার লিক হলে যেকোনো মুহূর্তে বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারত। পুলিশ গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে।