কুলতলি, 10 জুলাই: ভোটের রাজনীতি কেড়ে নিয়েছে তাঁর বাবাকে । এখন সেই রাজনীতি থেকেই দূরে সরে আসতে চাইছেন তৃণমূলকর্মী আবু সালেম খানের ছেলে হজরত খান । এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে বাংলা দেখেছে রক্তঝড়া গণতন্ত্র অধিকারের লড়াই । সেই লড়াই প্রাণ কেড়েছে বছর 48 এর আবু সালেমর । রোজগেরে বাবার মৃত্যুতে দিশেহারা ছেলে হজরত ।
ওই বুথেই সোমবার পুনরায় নির্বাচন হয়েছে। আবু সালেম খানের ছেলে হজরত খান বলেন, "শনিবার পঞ্চায়েত নির্বাচনকে কেন্দ্র করে এলাকায় ঝামেলা শুরু হয়েছিল । বোমাবাজিও হয় । আমার বাবাকে এলাকায় কোনওরকম গণ্ডগোল হলে সালেসি ও মীমাংসা করার জন্য ডাকত । ভোটের দিন যখন গণ্ডগোল হয় তখন আমার বাবা ওখানে গিয়েছিল । তারপর বিরোধীরা আমার বাবাকে মেরে দিয়েছে। কীভাবে পরিবার চলবে তা বুঝে উঠতে পারছি না। দল করলেও কোনওরকম রাজনৈতিক দায়িত্ব থেকে আমি সরে থাকব। পরিবার এখন দিশাহারা হয়ে পড়েছে।"
পঞ্চায়েত ভোটে বাংলায় মৃতের সংখ্যা ক্রমশ বেড়ে চলেছে । এবারের ঘটনাস্থল দক্ষিণ 24 পরগনার কুলতলি। স্থানীয় সূত্রে খবর, 8 জুলাই শনিবার বুথ দখলকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে জড়ায় তৃণমূল এবং বিজেপি। এই সংঘর্ষের মাঝে পড়ে মৃত্যু হয়েছে আবু সালেম খান নাম এক তৃণমূল কর্মীর ।
মৃতের স্ত্রী হাফিজা খান বলেন, "সকালে ভোট দিয়ে বাড়িতে এসেছিল । দুপুরে খাওয়ার কথা ছিল ওনার । তারপর ফোন করে বুথের কাছে ডাকে বেশ কয়েকজন। আর সেই ফোন পাওয়া মাত্রই বুথের কাছে ছুটে যান উনি । তারপর এলাকায় ব্যাপক বোমাবাজি-গুলির আওয়াজ শোনা যায়। আমরা ভয়ে বাড়ি থেকে বের হতে পারছিলাম না। তারপর শুনি এই রকম ঘটনা ঘটেছে। এই খুনের পিছনে যারা জড়িত আছে তাদের উপযুক্ত শাস্তি দিক প্রশাসন। এই আবেদন করি।"
স্থানীয় সূত্রে খবর, ভোটগ্রহণ পর্বের শেষ দিকে শনিবার সন্ধ্যায় কুলতলির জালাবেড়িয়া-1 নম্বর পঞ্চায়েত এলাকার পশ্চিম গাবতলায় শাসক এবং বিরোধী দলের গণ্ডগোল শুরু হয়েছিল। বুথ দখল করে ছাপ্পা ভোটকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের গোলমালে শুরু হয় ভাঙচুর। তৃণমূলের তরফ থেকে অভিযোগ করে বলা হয়েছে, বিজেপি এবং সিপিএম কর্মীরা মিলে বুথ দখলের চেষ্টা করেছিল।
আরও পড়ুন: ভোট দিতে বাধা, আতঙ্কে কেঁদে ফেললেন সিপিএম প্রার্থী
সেই খবর পেয়ে পাশের গ্রাম থেকে তৃণমূল কর্মী আবু আসেন। বাধা দিতে গেলে তাঁকে পিটিয়ে পরে গুলি করে মারা হয়েছে বলে অভিযোগ। অন্যদিকে, বিজেপির পালটা দাবি, তৃণমূলই বুথ দখল করে ছাপ্পা মারছিল। সাধারণ মানুষ তার প্রতিবাদ করেছে। তা নিয়েই গোলমাল বেধে যায়। এই ঘটনায় বিজেপির এক জেলা পরিষদের মহিলা প্রার্থী-সহ বেশ কয়েক জন জখম হয়েছেন বলে অভিযোগ।