ডায়মন্ড হারবার (দক্ষিণ 24 পরগনা), 25 ফেব্রুয়ারি : ডায়মন্ড হারবার মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে গবেষণার জন্য হুগলির এক বৃদ্ধের মরণোত্তর দেহ দান করল তাঁর পরিবার। বুধবার ডায়মন্ড হারবার মেডিকেল কলেজের পক্ষ থেকে ওই দেহ গ্রহণ করা হয়েছে ৷ মেডিকেল কলেজের পড়ুয়াদের গবেষণার কাজে দেহটি ব্যবহার করা হবে বলে জানিয়েছেন কলেজের অধ্যক্ষ উৎপল দাঁ । আগামী দিনে দেহ দানে উৎসাহ দিতে মেডিকেল কলেজের পক্ষ থেকে ধারাবাহিক প্রচার চালানো হবে ।
হুগলির উত্তরপাড়ার শান্তিনগর এলাকার বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত রেলকর্মী আটাত্তর বছরের বিমলেন্দু রায়চৌধুরি ৷ গত 20 ফেব্রুয়ারি কলকাতার মানিকতলায় জে এন রায় হাসপাতালে বার্ধক্যজনিত কারণে মৃত্যু হয় বিমলেন্দুবাবুর । তাঁর ইচ্ছেতেই এনআরএস হাসপাতালের চিকিৎসক কৌস্তব ডাকুয়ার উদ্যোগে দেহ দান করা হয়েছে এদিন । রাজ্যের স্বাস্থ্য দফতরও এ বিষয়ে উদ্যোগ নিয়েছিল।
শান্তিনগরের বাসিন্দা বিমলেন্দুবাবুরা তিন ভাই। অকৃতদার বিমলেন্দুবাবু একাই থাকতেন । দুই ভাই কর্মসূত্রে মুম্বইয়ে থাকেন। মারা যাওয়ার আগে বিমলেন্দু রায়চৌধুরি তাঁর দেহটি দাহ না করে, দান করার কথা জানিয়ে যান চিকিৎসক ও পরিবারের সদস্যদের কাছে । সেইমতো মৃত্যুর পর রাজ্য স্বাস্থ্য দফতরের কাছে আবেদন জানান বিলেন্দুবাবুর পরিবার । উদ্যোগ নেন চিকিৎসক কৌস্তব ডাকুয়া । সেইমতো কলকাতার বিভিন্ন মেডিকেল কলেজকে দেহ দানের কথা জানানো হয় । কিন্তু করোনা পরিস্থিতিতে কোনও হাসপাতাল সাড়া দেয়নি । তখন ডায়মন্ড হারবার মেডিকেল কলেজকে প্রস্তাব দেওয়া হয় । প্রস্তাব পাওয়া মাত্র কলেজ কর্তৃপক্ষ রাজি হয়ে যান । বুধবার সেই দেহ গ্রহণ করে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ।
এদিন দেহ দানের সময় উপস্থিত ছিলেন বিমলেন্দুবাবুর ভাই অমলেন্দু রায়চৌধুরি । তিনি বলেন, ‘‘দাদার মৃত্যুর আগে আমাদের কাছে তাঁর ইচ্ছার কথা জানিয়েছিলেন । সেই জন্য মৃত্যুর পর আমরা উদ্যোগ নিই । স্বাস্থ্য দফতর এই কলেজের কথা জানান । আজ দেহ দান করলাম ।’’ বিমলেন্দুবাবুর মেজো ভাই নির্মলেন্দু রায়চৌধুরিও মরণোত্তর দেহ দানের অঙ্গিকার করেছেন। আপাতত বিমলেন্দুবাবুর দেহটি ডায়মন্ড হারবার মেডিকেল কলেজে সংরক্ষণ করে রাখা হবে । পাঁচ বছর পর্যন্ত দেহটি সংরক্ষণ করে রাখা সম্ভব।
আরও পড়ুন : মৃত্যু মায়ের, ব্যক্তির তৎপরতায় চক্ষু-দেহদান বালুরঘাটে
এদিন মেডিকেল কলেজে উপস্থিত ছিলেন অধ্যক্ষ, সহকারী অধ্যক্ষ রমাপ্রসাদ রায়, মহকুমা শাসক সুকান্ত সাহা । অধ্যক্ষ উৎপল দাঁ বলেন, ‘‘কলেজের কাছে এই দিনটি খুব উল্লেখযোগ্য । কারণ দেহ না পাওয়া গেলে মেডিকেল পড়ুয়াদের সমস্যা হয় । আমরা চাই, আগামী দিনে মানুষের মধ্যে দেহ দানের প্রবণতা বাড়ুক ৷’’