সুন্দরবন, 14 সেপ্টেম্বর: সম্প্রতি দিল্লিতে অনুষ্ঠিত হয়ে গেল জি20 সম্মেলন। আর এই সম্মেলনে যোগ দিতে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা হাজির হয়েছিলেন ভারতে। তাঁদের হাতে উপহার হিসাবে তুলে দেওয়া হয়েছে স্বদেশী জিনিসপত্র। সেই উপহার তালিকায় রয়েছে দেশের বিভিন্ন প্রান্তের হস্তশিল্পের নিদর্শন ও দেশের সেরা কিছু প্রাকৃতিক পণ্য। কাশ্মীরের পশমিনা শাল, অন্ধ্রপ্রদেশের আরাকু ভ্যালির কফি, উত্তরপ্রদেশের জিগহরানা আতরের পাশাপাশি জায়গা করে নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবনের মধুও। রাষ্ট্রপ্রধানদের হাতে মধু তুলে দেওয়ায় উৎসাহিত হয়েছেন সুন্দরবনের মৌলরা।
জীবনের ঝুঁকি নিয়ে মধু সংগ্রহ করেন তাঁরা। গত কয়েক বছরে সেই মধু সংগ্রহ করে কয়েকটি যৌথ বন পরিচালন কমিটি মিলে কো-অপারেটিভের মাধ্যমে মধুকে পরিশোধিত করে 'বনফুল' নাম দিয়ে বাজারজাত করার পদক্ষেপ করেছে বন দফতর। সেই 'বনফুল'ই উপহার পেয়েছেন রাষ্ট্রপ্রধানরা।
বনফুল অ্যাগ্রো প্রোডাকশন কোম্পানির অন্যতম সদস্য দীপক মণ্ডল বলেন, "এটি আমাদের বাড়তি উৎসাহ জোগাবে। আমাদের এই মধুর চাহিদা আরও বাড়বে।"
দক্ষিণ 24 পরগনা বনবিভাগের ডিএফও মিলনকান্তি মণ্ডল বলেন, "এটি সত্যিই সাফল্যের কাহিনি। সুন্দরবনের প্রত্যন্ত গ্রাম থেকে একটি কো-অপারেটিভের মাধ্যমে উৎপন্ন বনফুল বিভিন্ন দেশের কাছে পৌঁছে গিয়েছে রাষ্ট্রপ্রধানদের মাধ্যমে।" বেশ কয়েক দশক ধরে সুন্দরবনের মধু বিশ্বখ্যাতি অর্জন করেছে। বন দফতরের তত্ত্বাবধানে উৎকৃষ্ট পরিমাণের মধু তৈরি করা হচ্ছে। সুন্দরবনের গর্ব এখন শুধু রয়েল বেঙ্গল টাইগার নয়, তার পাশাপাশি এখন সুন্দরবনের মধুর খ্যাতি জগৎজোড়া।
জি20 শীর্ষ সম্মেলন উপলক্ষে 9 ও 10 সেপ্টেম্বর নয়া দিল্লিতে উপস্থিত হয়েছিলেন বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা। এই বিদেশি অভ্যাগতদের ঐতিহাসিক সম্মেলনের স্মারক হিসেবে এক বিশেষ উপহারের বাক্স দিয়েছে ভারত সরকার। সেই উপহারের বাক্সে তুলে ধরা হয়েছে ভারতের শতাব্দী সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য, ভারতীয় কারিগরদের অতুলনীয় হাতের কাজ, আমাদের দেশের অনন্য জীববৈচিত্র্যকে। সুন্দরবনের মধুর পাশাপাশি বাংলার দার্জিলিং-এর চাও উপহার হিসাবে দেওয়া হয়েছে বিদেশি অতিথিদের ৷ 3000 থেকে 5000 ফুট উচ্চতায় কুয়াশাচ্ছন্ন পাহাড়ে অবস্থিত বাগানের চা, গোটা বিশ্বে সম্বৃদ্ধ।
আরও পড়ুন: ভারতের কাছে জি20 শীর্ষ সম্মেলন বড় উপলক্ষ্য ছিল, জানালেন হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা