বারুইপুর, 18 নভেম্বর: প্রাক্তন নৌসেনাকর্মীর দেহের ঊর্ধ্বাংশ উদ্ধারের ঘটনায় (Former Navy Worker Body Part Recovered) চাঞ্চল্য ছড়াল দক্ষিণ 24 পরগনার বারুইপুর থানা (Baruipur Police Station) এলাকায় ৷ পরিবারের সদস্যদের অনুমান, ওই ব্যক্তিকে খুন করা হয়েছে ৷ তবে, কে বা কারা এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত হতে পারে, তা বুঝে উঠতে পারছেন না তাঁরা ৷ কারণ, মৃতের সঙ্গে পাড়া পড়শি-সহ অনেকেরই ঝামেলা ছিল ৷ এমনকী, তাঁকে একাধিকবার একাদিক জায়গায় চাকরি থেকে তাড়িয়েও দেওয়া হয়েছিল ৷ মৃতের নাম উজ্জ্বল চক্রবর্তী ৷ বয়স 55 বছর ৷
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বারুইপুরের একটি পুকুর থেকে উজ্জ্বলের দেহের ঊর্ধ্বাংশ উদ্ধার করা হয় ৷ তাতে মাথা এবং বুকের অংশটুকু ছাড়া আর কিছুই নেই ! উধাও দুই হাত এবং বুকের নীচের বাকি অংশ ! খুব সম্ভবত, দেহটি পুকুরে ফেলার আগে টুকরো টুকরো করে কাটা হয়েছে ৷ দেহের এমন দশা দেখে আতঙ্কিত এলাকাবাসী ৷ বারুইপুর থানা এলাকার মল্লিকপুর রোডের ডিহি মদনমল্য গ্রামের এক বাসিন্দা পুলিশকে জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার তিনি পুকুরের পাশের রাস্তা ধরে হেঁটে যাচ্ছিলেন ৷ তখনই পুকুরে 'কিছু একটা' ভাসতে দেখে সন্দেহ হয় তাঁর ৷ এরপর আশপাশের কয়েকজন বাসিন্দা এবং তিনি লাঠি দিয়ে সেই 'জিনিসটি' পাড়ের দিকে টেনে আনেন ৷ তখনই বোঝা যায়, ভাসতে থাকা 'জিনিসটি' আদতে মানুষের দেহের ঊর্ধ্বাংশ ৷ এরপরই থানায় খবর দেওয়া হয় এবং পুলিশ এসে দেহাংশটি উদ্ধার করে নিয়ে যায় ৷
আরও পড়ুন: তিনদিন নিখোঁজ থাকার পর পুকুরে থেকে ভেসে উঠল গৃহবধূর দেহ, আত্মহত্যা নাকি খুন ?
পরবর্তীতে জানা যায়, মৃতের নাম উজ্জ্বল চক্রবর্তী ৷ মৃতের ছেলে জয় চক্রবর্তী সাংবাদিকদের বলেন, "আমার বাবা আগে নৌসেনায় কাজ করতেন ৷ পরে নিরাপত্তাকর্মীর চাকরি নেন ৷ কিন্তু, সেখানে মারপিট করেছিলেন ৷ তাই কাজ থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয় ৷ এরপর আলিপুর কোর্টে চাকরি নেন ৷ সাফাইকর্মীর কাজ করতেন কোর্টে ৷ আমাদের প্রতিবেশীর সঙ্গেও বাবার মারপিট হয়েছিল ৷ মামলা চলছিল ৷ বাবা জামিনে বাইরে ছিলেন ৷ কাজ থেকে ফিরে রোজ সন্ধেবেলায় মদ খেতে যেতেন ৷ তারপর নেশা করে বাড়ি ফিরতেন ৷ কোথায় মদ খেতে যেতেন, তা আমরা জানি না ৷ গত মঙ্গলবারও নেশা করতে বেরিয়েছিলেন ৷ কিন্তু, তারপর থেকে আর বাড়ি ফেরেননি ৷ আমাদের অনুমান, বাবাকে খুন করা হয়েছে ৷ তবে, কে এমন কাজ করেছে, তা জানি না ৷"
এই ঘটনায় আতঙ্কিত এলাকার বাসিন্দারা ৷ তাঁদের অনুমান, উজ্জ্বলকে খুন করে তাঁর দেহ টুকরো টুকরো করে কেটে লোপাট করার চেষ্টা করা হয়েছে ৷ একটি দেহখণ্ড হয়তো পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়েছিল ৷ পরে সেটি ভেসে ওঠে ৷ বাসিন্দাদের দাবি, তাঁদের এলাকায় আগে কখনও এমন পৈশাচিক ঘটনা ঘটেনি ৷ তাই তাঁরা চান, অবিলম্বে এই ঘটনার কিনারা করুক পুলিশ ৷ আততায়ীকে গ্রেফতার করা হোক ৷ যাতে এলাকার নিরাপত্তা বজায় থাকে ৷ প্রসঙ্গত, সম্প্রতি সারা দেশে দিল্লির শ্রদ্ধা হত্য়াকাণ্ড (Shraddha Murder Case) নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে ৷ তারই মধ্য়ে বারুইপুরের এই ঘটনায় উদ্বেগ বাড়ছে আমজনতার ৷ বাড়ছে নিরাপত্তাহীনতা ৷