ETV Bharat / state

Kali Puja 2022: 108টি নরমুণ্ড উৎসর্গ করা হয় দেবীকে, কালীপুজোর রাতে জেগে ওঠে দক্ষিণ বিষ্ণুপুর শ্মশান

এখনও 108টি নরমুণ্ড দেবীকে উৎসর্গ করা হয় ৷ প্রায় 300 বছরের পুরনো মন্দিরবাজারের দক্ষিণ বিষ্ণুপুর শ্মশানের (Dakshin Bishnupur crematorium) কালীপুজো (Kali Puja) ৷ এখানে দেবী পূজিত হন ভিন্ন উপায়ে ৷

author img

By

Published : Oct 19, 2022, 7:30 PM IST

300 year old Kali Puja of Dakshin Bishnupur crematorium
300 year old Kali Puja of Dakshin Bishnupur crematorium

মন্দিরবাজার(দক্ষিণ 24 পরগনা), 19 অক্টোবর: আদি গঙ্গার পাড়ে অবস্থিত কয়েকশো বছরের প্রাচীন মন্দিরবাজারের দক্ষিণ বিষ্ণুপুর শ্মশান (Dakshin Bishnupur crematorium) । আজ থেকে শত শত বছর আগে দলে দলে এখানে ভিড় করতেন তান্ত্রিক এবং সাধকরা । চলত শবসাধনাও । এমনকী নরমুণ্ড নিবেদন করে দেবীর উপাসনার কথাও শোনা যায় ।

আজ থেকে প্রায় 300 বছর আগে (300 year old Kali Puja) এই শ্মশান লাগোয়া জঙ্গলে, টালির চালের মন্দির বানিয়ে কালীপুজো শুরু করেছিলেন তান্ত্রিক মণিলাল চক্রবর্তী । কথিত রয়েছে, তন্ত্রসাধনায় দীক্ষিত হয়ে এই শ্মশানে সাধনা শুরু করেন ব্রাহ্মণ যুবক মণিলাল । স্বপ্নাদেশ পেয়ে দেবীর পুজো আরাধনা শুরু করেন তিনি । তখন বছরে একবারই পুজো হত ।

পরে স্বপ্নে দেবী নিত্যপুজোর ইচ্ছা প্রকাশ করলে গড়ে তোলা হয় মন্দির । দেবীমূর্তির পিছনে বসানো হয় 108টি নরমুণ্ড । সামনে রাখা হয় পঞ্চমুণ্ড আসন । দেবীর উদ্দেশে ওই 108টি নরমুণ্ড উৎসর্গ করে কালীর উপাসনা করতেন মণিলাল । সেই থেকে বিষ্ণুপুর শ্মশানে পূজিত হয়ে আসছেন করুণাময়ী কালী । শ্যামাকালী পুজোর দিন আজও হাজার-হাজার মানুষ সেখানে ভিড় করেন । তবে আজ তন্ত্রমতে দেবীর পুজো হলেও, বিষ্ণুপুর শ্মশানে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ বলি । বরং কালীপুজোর দিন মদ, কাঁচা মাংস এবং ছোলা নিবেদন করা হয় ডাকিনী-যোগিনীর উদ্দেশে । থাকে শিয়াল ভোগও ।

তবে স্থানীয়দের বিশ্বাস, কালীপুজোর রাতে আজও শ্মশান জাগানোর খেলায় মেতে ওঠেন সেবায়েতরা । আজ থেকে শত শত বছর আগে এই শ্মশানে চলতো শবসাধনা । এমনকী নরমুণ্ড নিবেদন করে দেবীর উপাসনার কথাও শোনা যায় । এখন সে সবের চল না থাকলেও, কালীপুজোর রাতে আজও বিষ্ণুপুর শ্মশানে ঢুকলে গা ছমছম করে, অস্বস্তি বোধ করেন অনেকেই । কালো মাটির বাঁকে-বাঁকে আজও জীবন্ত ইতিহাস। পরতে পরতে জড়িয়ে রয়েছে প্রাচীনত্বের শিকড় । কিন্তু আদি গঙ্গার পাড়ে অদ্ভূত এক আলো-আবছায়ার মিশেল, যা দীপাবলির রাতে জাগিয়ে রাখে গোটা বিষ্ণুপুরকে । তন্ত্রসাধনা ও শবসাধনা সময়ের ঘষা লেগে সেসব কল্পকথা হয়ে গেলেও, এই একটি রাতই আজও সাবেকিয়ানার সঙ্গে বেঁধে রেখেছে এলাকার মানুষকে (Kali Puja 2022) ।

108টি নরমুণ্ড উৎসর্গ করা হয় দেবীকে, কালীপুজোর রাতে জেগে ওঠে দক্ষিণ বিষ্ণুপুর শ্মশান

আরও পড়ুন: একদিনেই মূর্তি তৈরি-পুজো-বিসর্জন, 500 বছরের পুরনো দেবীনগর কালীবাড়ির শ্য়ামাবন্দনা

মণিলাল মারা গিয়েছেন অনেক আগেই । তাঁর মৃত্যুর পর ভাই ফণীভূষণ চক্রবর্তী সেবায়েত নিযুক্ত হন । এখন মণিলালের ছেলে শ্যামল চক্রবর্তী মন্দিরের সেবায়েতের দায়িত্বে রয়েছেন । সত্তরোর্ধ্ব শ্যামলবাবুই প্রধান সেবায়েত । তিনি বলেন, "বাবার মৃত্যুর পর কাকা ফণীভূষণ চক্রবর্তীর কাছে তন্ত্রের শিক্ষা নিতে থাকি । তাঁর হাত ধরেই গুপ্তবিদ্যা নিয়ে নাড়াচাড়া শুরু । পরে করুণাময়ী মন্দিরে নিত্য পুজো শুরু করি ।" কালীপুজোর আগে এই মুহূর্তে তুমুল ব্যস্ততা তাঁদের । দালানে নতুন রং'য়ের প্রলেপ পড়ে গিয়েছে । ঝাড়পোছ করে সাজানো হচ্ছে নরমুণ্ডগুলি ।

মন্দিরবাজার(দক্ষিণ 24 পরগনা), 19 অক্টোবর: আদি গঙ্গার পাড়ে অবস্থিত কয়েকশো বছরের প্রাচীন মন্দিরবাজারের দক্ষিণ বিষ্ণুপুর শ্মশান (Dakshin Bishnupur crematorium) । আজ থেকে শত শত বছর আগে দলে দলে এখানে ভিড় করতেন তান্ত্রিক এবং সাধকরা । চলত শবসাধনাও । এমনকী নরমুণ্ড নিবেদন করে দেবীর উপাসনার কথাও শোনা যায় ।

আজ থেকে প্রায় 300 বছর আগে (300 year old Kali Puja) এই শ্মশান লাগোয়া জঙ্গলে, টালির চালের মন্দির বানিয়ে কালীপুজো শুরু করেছিলেন তান্ত্রিক মণিলাল চক্রবর্তী । কথিত রয়েছে, তন্ত্রসাধনায় দীক্ষিত হয়ে এই শ্মশানে সাধনা শুরু করেন ব্রাহ্মণ যুবক মণিলাল । স্বপ্নাদেশ পেয়ে দেবীর পুজো আরাধনা শুরু করেন তিনি । তখন বছরে একবারই পুজো হত ।

পরে স্বপ্নে দেবী নিত্যপুজোর ইচ্ছা প্রকাশ করলে গড়ে তোলা হয় মন্দির । দেবীমূর্তির পিছনে বসানো হয় 108টি নরমুণ্ড । সামনে রাখা হয় পঞ্চমুণ্ড আসন । দেবীর উদ্দেশে ওই 108টি নরমুণ্ড উৎসর্গ করে কালীর উপাসনা করতেন মণিলাল । সেই থেকে বিষ্ণুপুর শ্মশানে পূজিত হয়ে আসছেন করুণাময়ী কালী । শ্যামাকালী পুজোর দিন আজও হাজার-হাজার মানুষ সেখানে ভিড় করেন । তবে আজ তন্ত্রমতে দেবীর পুজো হলেও, বিষ্ণুপুর শ্মশানে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ বলি । বরং কালীপুজোর দিন মদ, কাঁচা মাংস এবং ছোলা নিবেদন করা হয় ডাকিনী-যোগিনীর উদ্দেশে । থাকে শিয়াল ভোগও ।

তবে স্থানীয়দের বিশ্বাস, কালীপুজোর রাতে আজও শ্মশান জাগানোর খেলায় মেতে ওঠেন সেবায়েতরা । আজ থেকে শত শত বছর আগে এই শ্মশানে চলতো শবসাধনা । এমনকী নরমুণ্ড নিবেদন করে দেবীর উপাসনার কথাও শোনা যায় । এখন সে সবের চল না থাকলেও, কালীপুজোর রাতে আজও বিষ্ণুপুর শ্মশানে ঢুকলে গা ছমছম করে, অস্বস্তি বোধ করেন অনেকেই । কালো মাটির বাঁকে-বাঁকে আজও জীবন্ত ইতিহাস। পরতে পরতে জড়িয়ে রয়েছে প্রাচীনত্বের শিকড় । কিন্তু আদি গঙ্গার পাড়ে অদ্ভূত এক আলো-আবছায়ার মিশেল, যা দীপাবলির রাতে জাগিয়ে রাখে গোটা বিষ্ণুপুরকে । তন্ত্রসাধনা ও শবসাধনা সময়ের ঘষা লেগে সেসব কল্পকথা হয়ে গেলেও, এই একটি রাতই আজও সাবেকিয়ানার সঙ্গে বেঁধে রেখেছে এলাকার মানুষকে (Kali Puja 2022) ।

108টি নরমুণ্ড উৎসর্গ করা হয় দেবীকে, কালীপুজোর রাতে জেগে ওঠে দক্ষিণ বিষ্ণুপুর শ্মশান

আরও পড়ুন: একদিনেই মূর্তি তৈরি-পুজো-বিসর্জন, 500 বছরের পুরনো দেবীনগর কালীবাড়ির শ্য়ামাবন্দনা

মণিলাল মারা গিয়েছেন অনেক আগেই । তাঁর মৃত্যুর পর ভাই ফণীভূষণ চক্রবর্তী সেবায়েত নিযুক্ত হন । এখন মণিলালের ছেলে শ্যামল চক্রবর্তী মন্দিরের সেবায়েতের দায়িত্বে রয়েছেন । সত্তরোর্ধ্ব শ্যামলবাবুই প্রধান সেবায়েত । তিনি বলেন, "বাবার মৃত্যুর পর কাকা ফণীভূষণ চক্রবর্তীর কাছে তন্ত্রের শিক্ষা নিতে থাকি । তাঁর হাত ধরেই গুপ্তবিদ্যা নিয়ে নাড়াচাড়া শুরু । পরে করুণাময়ী মন্দিরে নিত্য পুজো শুরু করি ।" কালীপুজোর আগে এই মুহূর্তে তুমুল ব্যস্ততা তাঁদের । দালানে নতুন রং'য়ের প্রলেপ পড়ে গিয়েছে । ঝাড়পোছ করে সাজানো হচ্ছে নরমুণ্ডগুলি ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.