উস্তি, 3 জুন: শুক্রবার রাতে পরিবারের লোকের সঙ্গে শেষবারের মত কথা বলেন উস্তির সরিষা পাড়ার বাসিন্দা বছর একুশের আসিফ গাজি । মাকে বলেছিলেন, আমি বাড়ি আসছি ৷ কথা দিয়েও কথা রাখা হল না আসিফের ৷ তাই বাড়িও আসা হল না তাঁর ৷ ওড়িশার ট্রেন দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয়েছে আসিফের ৷
জানা গিয়েছে, পরিবারের হাল ধরতে দর্জির কাজে ভিন্ন রাজ্যে পাড়ি দিয়েছিলেন তিনি । গতকাল বেঙ্গালুরু থেকে যশবন্তপুর এক্সপ্রেসে করে বাড়ি ফিরছিলেন আসিফ। ট্রেনে ওঠার আগে পরিবারের লোকের সঙ্গে ফোনে কথাও বলেন তিনি। আসিফ মাকে বলেন বাড়ি আসার কথা ৷ কিন্তু ওড়িশার বালাসোরের কাছে করমণ্ডল ও যশবন্তপুর এক্সপ্রেসের দুর্ঘটনায় প্রাণ গিয়েছে তাঁর ।
আরও পড়ুন: বাইরের রাজ্যে আর কোনওদিন কাজে যাব না, ট্রেন দুর্ঘটনা থেকে বেঁচে ফিরে বললেন আশিস
আসিফের মৃত্যুর ঘটনায় শোকের ছায়া নেমেছে গোটা পরিবারে । সকাল থেকেই কান্নায় ভেঙে পড়েছে পরিবারের লোকজনেরা ।
আসিফের মা রশিদা বিবি বলেন, "ট্রেনে ওঠার আগে শেষবারের মত আমার সঙ্গে কথা বলে আসিফ ৷ তারপর আসিফের সঙ্গীদের কাছ থেকে ফোনে খবর আসে ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে । আমার ছেলে বাড়ি আসবে বলেছিল ৷ কিন্তু এভাবে কেন আসছে ।"
তরতাজা ছেলেকে হারিয়ে সর্বহারা হয়ে গিয়েছেন আসিফের মা । আসিফের আত্মীয় সেলিম গাজি জানান, 20 দিন আগে আসিফ বেঙ্গালুরুতে দর্জির কাজ করতে গিয়েছিলেন । কাজ না-থাকার কারণে গতকাল ছুটি নিয়ে বাড়িতে আসছিলেন ৷ ফোন করে বলেছিলেন যে তিনি বাড়ি আসছেন । আসিফের সঙ্গে বেশ কয়েকজন সেখানে কাজে গিয়েছিল । শুক্রবার রাতে আসিফের সঙ্গে থাকা সঙ্গীরা তাদেরকে ফোন করে এই দুর্ঘটনার কথা জানায় ।
আরও পড়ুন: করমণ্ডল বিপর্যয়, দুঃস্বপ্নের সাক্ষী ওড়িশার বালাসোর যেন মৃত্যু উপত্য়কা !
তিনি বলেন, "আমরা উৎকণ্ঠস্বর সঙ্গে টিভি খুলে দেখি যে ওড়িশার বালাসোরের কাছে ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটেছে । আহতদের যখন উদ্ধার করে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিল তখনই আমরা দেখতে পাই আসিফকে । আসিফের আঘাত গুরুতর ছিল । এরপর সময় নষ্ট না করে পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা ওড়িশার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিল । কিন্তু শেষরক্ষা হল না ।" পরিবারের একমাত্র আয়ের উৎসকে হারিয়ে কার্যত দিশাহারা হয়ে গিয়েছে গাজি পরিবার ।