কোচবিহার, 4 অগস্ট: চেয়ারে বসে রয়েছেন বিজেপি রাজ্যসভার সাংসদ ওরফে গ্রেটার সুপ্রিমো মহারাজ অনন্ত রায়। আর তাঁর পা টিপে দিচ্ছেন এক 'ভক্ত' ৷ সোশাল মিডিয়া ভাইরাল হয়েছে এই ভিডিয়ো। আর সেই ভিডিয়োকে হাতিয়ার করে এবার অনন্ত মহারাজকে বিঁধলেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ ৷ ভণ্ড দাবি করে তৃণমূলের এই মন্ত্রী মন্তব্য করেন, "স্বঘোষিত মহারাজ নিজের ছেলের বয়সি একটা ছেলেকে দিয়ে পা টিপে নেয় তিনি নাকি কোচবিহারের মহারাজ হয়ে সাধারণ মানুষের সেবা করবেন এটা হাস্যকর। আর এধরনের একজনকে দেশের সর্বোচ্চ কক্ষে পাঠিয়েছে বিজেপি। এটা বাংলার মানুষের কাছে, কোচবিহারের মানুষের কাছে লজ্জার।"
অবিলম্বে এ ধরণের লোকের মাথা ন্যাড়া করে, মাথায় ঘোল ঢেলে দেওয়া উচিত বলেও মন্তব্য শোনা গিয়েছে উদয়নের গলায়। সোশাল মিডিয়াতেও কটাক্ষ করেছেন উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহ। যদিও অনন্ত মহারাজের দাবি, তাঁর পায়ে ইউরিক অ্যাসিডের ব্যাথা রয়েছে। তাঁরই এক আত্মীয় কবিরাজি তেল মালিশ করে দিচ্ছিলেন। এটা নিয়ে অযথা বিতর্ক করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তাঁর কথায়, "এটা নিয়ে যারা সমালোচনা করছে তারা মানুষ নয়।"
পৃথক কোচবিহার রাজ্যের দাবিকে সামনে রেখে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করছেন মহারাজ অনন্ত রায়ের নেতৃত্বাধীন গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশন। উত্তরবঙ্গ ও অসমের একটা বড় অংশে অনন্ত মহারাজের প্রভাব রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে অনন্ত মহারাজের সঙ্গে বিজেপির সম্পর্ক ভালো। যার জেরে বিভিন্ন নির্বাচনে জেলায় ভালো ফল করে বিজেপি। গত 2019 সালের লোকসভা ও 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির হয়ে ভোটপ্রচারে অংশ নিয়েছিল অনন্ত মহারাজ। আর এটা বুঝতে পেরেই অনন্ত মহারাজের সঙ্গে সুসম্পর্ক করতে উদ্যোগী হয় তৃণমূলও। এর আগে অনন্ত মহারাজের উদ্যোগে আয়োজিত চিলারায়ের জন্মদিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে মহারাজার আমন্ত্রণে কোচবিহারে এসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: সকালে বিজেপি বিরোধিতা, বিকেলে বিধানসভায় জয় শ্রীরাম - একই দিনে বিধায়কের দুই রূপ
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে তৃণমুল নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় কোচবিহারে এসে অনন্ত মহারাজের সঙ্গে দেখা করেছিলেন। পাশাপাশি বিজেপির নেতা-মন্ত্রীরা বিশেষ করে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামানিক মহারাজের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন। এরপর গত 11 জুলাই মঙ্গলবার বিকেলে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামানিকের বাড়ি গিয়ে তাঁকে রাজ্যসভার প্রার্থী হওয়ার প্রস্তাব দেন। এবং সেই প্রস্তাবে রাজি হন অনন্ত মহারাজ। এরপর সাংসদ নির্বাচিত হন। এরপর শুক্রবার সোশাল মিডিয়ায় ওই ভিডিয়ো ভাইরাল হয়।