কোচবিহার, 13 অক্টোবর : সোমবার থেকে রাজ্যে ট্রাক ধর্মঘটের জেরে কোচবিহার জেলার চ্যাংরাবান্ধা সীমান্ত দিয়ে ভারত-বাংলাদেশ রপ্তানি বাণিজ্য বন্ধ । ধর্মঘটের জেরে সোমবার সকাল থেকে চ্যাংরাবান্ধা থেকে কোনও পণ্যবাহী ট্রাকে পণ্য বাংলাদেশে রপ্তানি করা হয়নি । এতে বিরাট ক্ষতির মুখে ব্যবসায়ীরা ৷ চ্যাংরাবান্ধা বাণিজ্যকেন্দ্রের ব্যবসায়ী সূত্রে জানা গেছে, এই প্রথম কোনও ধর্মঘটের প্রভাব চ্যাংরাবান্ধা সীমান্ত বাণিজ্যে পড়ল । সুত্রের খবর, প্রতিদিন প্রায় পাঁচশো ট্রাক পণ্য নিয়ে বাংলাদেশে যায় । শুধু ভারতের নয়, এর মধ্যে ভুটানের পণ্যও থাকে । সব মিলিয়ে চ্যাংরাবান্ধা সীমান্ত দিয়ে দৈনিক প্রায় সাড়ে তিনকোটি টাকার বাণিজ্য হয় । তাই তিনদিন বাণিজ্য বন্ধ থাকলে প্রায় 9 কোটিরও বেশি টাকা ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে ব্যবসায়ীদের তরফে ।
ট্রাক মালিক সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, 2018 সালে কেন্দ্রীয় সরকার বাড়তি লোডের বিষয়ে যে আইন করেছে, রাজ্য সরকার তা এই রাজ্যে কার্যকর করেনি । তার সঙ্গে রাজ্যের বিভিন্ন এলাকায় রাস্তার পুলিশের তোলা আদায়ের অভিযোগ রয়েছে । তাই বাধ্য হয়ে রাজ্য জুড়ে ট্রাক ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ট্রাক মালিক সংগঠন ৷ বাণিজ্য বন্ধ থাকায় সোমবার থেকে চ্যাংরাবান্ধা স্থল বন্দর ছিল অনেকটাই সুনসান ।
সোমবার থেকে রাজ্য জুড়ে 72 ঘণ্টা ট্রাক ধর্মঘটের ডাক দিয়েছে ফেডারেশন অফ ওয়েস্ট বেঙ্গল ট্রাক অপারেটর অ্যাসোসিয়েশন । সেই ধর্মঘটকে সমর্থন জানিয়েছেন চ্যাংরাবান্ধা ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন এবং ডুয়ার্স ইউনাইটেড ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনও ৷ চ্যাংরাবান্ধা ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক আবদুল সামাত বলেন, ট্রাক মালিক সংগঠনের রাজ্য কমিটির ডাকে তিন দিনের ট্রাক ধর্মঘটকে সমর্থন জানিয়ে তাঁরা ট্রাক চালানো বন্ধ রেখেছেন । তিন দফা দাবিতে এই ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হয়েছে ৷ চ্যাংরাবান্ধা বাণিজ্য চালু বা বন্ধ থাকায় বিষয়টি তাঁদের সংগঠনের মধ্যে নয় । তাঁরা রাজ্য সংগঠনের ধর্মঘটে সামিল হয়েছেন ৷ তিনি আরও বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের বাড়তি লোডের যে আইন তা রাজ্যে লাগু না করা ও রাজ্য সহ চ্যাংরাবান্ধা বাণিজ্য কেন্দ্রে পুলিশি তোলাবাজির জুলুমের অভিযোগ তোলেন ৷ ট্রাক -মালিক সংগঠনের রাজ্য কমিটির ডাকা এই ধর্মঘটকে সম্পূর্ণভাবে সমর্থন জানিয়েছেন বলে তিনি বলেন ।
অন্যদিকে , চ্যাংরাবান্ধা ব্যবসায়ী সংগঠনের তরফেও জানানো হয়, এই ধর্মঘটে বিরাট অঙ্কের ক্ষতি হচ্ছে । ক্ষতির পরিমাণ নির্দিষ্ট বলা সম্ভব নয়, তবে তিন দিনে 9 থেকে 10 কোটি ক্ষতির মুখে পড়ার আশঙ্কা করছে ব্যবসায়ীদের একটি অংশ ৷ চ্যাংরাবান্ধা এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক বিমলকুমার ঘোষ বলেন, "ট্রাক ধর্মঘটের কারণেই সোমবার থেকে বাংলাদেশে পণ্য পাঠানো যায়নি । তিন দিনের সীমান্ত বাণিজ্য বিরাট ক্ষতির মুখে ব্যবসায়ীরা ৷"