কোচবিহার, 7 এপ্রিল: প্রেমের সম্পর্ক মেনে নেয়নি প্রেমিকার পরিবার। সেই ক্ষোভে এবার মর্মান্তিক কাণ্ড ঘটাল প্রেমিক। অভিযোগ, প্রেমিকার বাবা-মা সহ বাড়ির তিনজন সদস্য়কে কুপিয়ে খুন করেছে প্রেমিক ৷ যে ঘটনা সামনে আসতে চাঞ্চল্য় ছড়িয়েছে এলাকায় ৷ যদিও পুলিশের দাবি, প্রেমিক একা নয়, এদিন আরও দু'জনকে সঙ্গে নিয়ে এসে প্রেমিকার বাড়িতে হামলা চালায় অভিযুক্ত ৷ গ্রামেরই এক যুবকের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিল মেয়ে। কিন্তু সেই সম্পর্ক মেনে নেয়নি মেয়ের পরিবারের সদস্য়রা। বিশেষ করে আপত্তি জানিয়েছিল মেয়ের বাবা ৷ আর সেই কারণেই এবার প্রেমিকার বাবা-মা ও দিদিকে কুপিয়ে খুন করে চরম প্রতিশোধের রাস্তায় হাঁটল প্রেমিক যুবক ৷ আপাতত তিনজনকেই আটক করেছে পুলিশ।
অভিযুক্ত প্রেমিক বিভূতীভূষণকে (21) আটক করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ ৷ জানা গিয়েছে, মেয়ের বাবা-মা দু'জনেই তৃণমূলের সক্রিয় সদস্য় ছিলেন ৷ প্রেমিকার মা মৃত নিলীমা বর্মন শীতলকুচি গ্রাম পঞ্চায়েতের তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্যও ছিলেন। পাশাপাশি তাঁর স্বামী বিমল চন্দ্র বর্মন ছিলেন তৃণমূলের এসসিএসটি ওবিসি সেলের শীতলকুচি ব্লক সভাপতি।
আরও পড়ুন: সরকার আলোচনায় না বসলে আরও তীব্র আন্দোলনের হুঁশিয়ারি কর্মীদের
জানা গিয়েছে, বেশ কয়েকদিন ধরে প্রেমিক যুবক ও মেয়ের পরিবারের সঙ্গে টানাপোড়েন চলছিল। অভিযোগ, তার জেরেই অভিযুক্ত যুবক এদিন ভোর রাতে প্রেমিকার বাড়িতে এসে প্রেমিকার বাবা-মায়ের উপর চড়াও হয় ৷ প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশের দাবি, ধারালো ছুরি নিয়ে হামলা চালায় ওই যুবক। জানা গিয়েছে, একাধিকবার নৃশংশভাবে কোপানো হয়েছে বিমল বর্মন (68) ও তাঁর স্ত্রী নিলীমাদেবীকে (52)। শুধু তাই নয়, তাঁদের বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছে দুই মেয়েও ৷ প্রথমে তাদের শীতলকুচি বিপিএইচসিতে ভর্তি করা হলেও পরে মাথাভাঙ্গা এসডি হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। তাদের হাসপাতালে ভর্তি করা হলে সেখানেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু হয় বড় মেয়ে রুনা বর্মন(24)-এর। অন্য়দিকে, বছর বাইশের ছোট মেয়ে বর্তমানে গুরুতর আহত অবস্থায় মাথাভাঙ্গা হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
এই পরিস্থিতিতে স্থানীয় বাসিন্দারাই অভিযুক্ত যুবককে ধরে ফেলে। পরে তাকে পুলিশের হাতে তুলে দেয় প্রতিবেশীরা ৷ ঘটনার জেরে এলাকায় তীব্র উত্তেজনা ছড়িয়েছে। এই ঘটনার সঙ্গে যুক্ত থাকার ঘটনায় আরও দুই ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। প্রাথমিকভাবে পুলিশের অনুমান, রীতিমতো পরিকল্পনা মাফিক এই হামলা চালিয়েছে যুবক ৷ যে কারণে সঙ্গে আরও দু'জনকে সঙ্গে নিয়ে এসেছিল সে ৷ টনার ক্ষোভ উগড়ে দিয়েছে স্থানীয়রা। নৃশংস এই হত্যা লীলা প্রতিবাদে শীতলকুচির সড়কে অবরোধও করা হয়। অভিযুক্ত যুবকের কঠোর শাস্তির দাবি করেছে বাসিন্দা এবং পরিবারের আত্মীয়-স্বজনরা ৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে আসে শীতলকুচি থানার পুলিশ। কোচবিহার জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অমিত ভার্মা জানিয়েছেন, সম্পূর্ণ ঘটনার উপর নজর রাখছে তাঁরা ৷ পাশাপাশি তদন্ত চলছে বলেও জানান তিনি।