কোচবিহার, 10 অক্টোবর: রাসচক্র ঘুরিয়ে কোচবিহারের রাস উৎসবের (Cooch Behar Rash Festival) সূচনা হয় । তিন পুরুষ ধরে সেই রাসচক্র তৈরি করে আসছেন আলতাফ মিঞাঁ (Altaf Miyan) । সোমবার সেই আলতাফের বাড়িতে গিয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দিলেন কোচবিহার পৌরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ (Rabindranath Ghosh) ।
পাশাপাশি এদিন তিনি চাল-সহ বেশ কিছু জিনিস দিয়ে সহযোগিতা করেন তাঁকে । পরে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, "কোচবিহারের ইতিহাসের সাক্ষী আলতাফ মিঞাঁ । তিন পুরুষ ধরে তাঁরা রাসচক্র তৈরি করে আসছেন । তিনি অসুস্থ । তাঁকে সবরকম সহযোগিতা করা হবে ।"
1893 সাল নাগাদ মহারাজা নৃপেন্দ্রনারায়ণের উদ্যোগে বৈরাগী দিঘির পাড়ে মদনমোহন মন্দির গড়ে তোলা হয় ৷ সেখানেই প্রতিবছর রাস পূর্ণিমা তিথিতে রাস উৎসব শুরু হয় । আগে রাজারা রাসচক্র ঘুরিয়ে রাস উৎসবের সূচনা করতেন । এখন দেবত্র ট্রাস্ট বোর্ডের সভাপতি তথা কোচবিহারের জেলাশাসক এই উৎসবের সূচনা করেন । হিন্দু, মুসলিম ও বৌদ্ধ সংস্কৃতির সংমিশ্রণে তৈরি করা হয় এই রাসচক্র ।
প্রথমদিকে রাজাদের তরফে এই রাসচক্র তৈরির দায়িত্ব দেওয়া হয় কোচবিহারের হরিণচওড়া এলাকার বাসিন্দা পান মামুদ মিঞাঁকে । পরবর্তীতে তাঁর ছেলে আজিজ মিঞাঁ ওই রাসচক্র তৈরির দায়িত্ব পান । এরপর তাঁর ছেলে আলতাফ মিঞাঁ ওই রাসচক্র তৈরি করে আসছেন । লক্ষ্মীপুজোর দিন উপোস থেকে রাসচক্র তৈরির কাজ শুরু করেন আলতাফ । পরবর্তীতে একমাস নিরামিষ খাবার খান । এরপর রাসপূর্ণিমার দিন মদনমোহন বাড়িতে নিয়ে গিয়ে পুরো রাসচক্র তৈরি করেন । পাশাপাশি আলতাফ মিঞাঁকে ট্রাস্টের তরফে 7000 টাকা মাসিক মাইনের চাকরি দেওয়া হয়েছে । এ বছরও রাস পূর্ণিমার দিন ওই রাসচক্র ঘুরিয়ে এই উৎসবের সূচনা হবে । তাই রবিবার লক্ষ্মীপূর্ণিমার দিন উপোস করে রাসচক্র তৈরির কাজ শুরু করলেন তিনি ।
আরও পড়ুন: লক্ষ্মীপুজোর দিন উপোস করে রাসচক্র তৈরির কাজ শুরু করলেন আলতাফ
কিন্তু দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ রয়েছেন আলতাফ । রাজ্য সরকারের তরফে তাঁকে যা সহযোগিতা দেওয়া হয়, তা দিয়ে সংসার চলে না । তাই দীর্ঘদিন ধরে ভাতা বাড়ানোর দাবি জানিয়ে আসছেন আলতাফ । সোমবার হরিণচওড়া এলাকার আলতাফ মিঞাঁর বাড়িতে গিয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দেন প্রাক্তন মন্ত্রী তথা কোচবিহার পৌরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ । তবে এদিন আলতাফ বলেন, "আমি নিজেও তৃণমূল করি । চেয়ারম্যান আসায় আমি খুশি ।"