কোচবিহার, 7 জুন : লোকসভা নির্বাচনে দলের ভরাডুবির কারণে, কোচবিহার জেলা তৃণমূল সভাপতির পদ থেকে সরানো হল উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে । তাঁর বদলে বনমন্ত্রী বিনয়কৃষ্ণ বর্মণকে তৃণমূলের জেলা সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে । সেইসঙ্গে ওয়ার্কিং প্রেসিডেন্ট করা হয়েছে পার্থপ্রতিম রায়কে ।
বিগত কয়েক বছরে, কোচবিহারে তৃণমূলের অন্দরে গোষ্ঠী কোন্দল বেড়েছে । সেক্ষেত্রে রবীন্দ্রনাথ ঘোষকেই দলের একাংশ দায়ি করেছে । কোথাও স্থানীয় বিধায়ক মিহির গোস্বামীর সঙ্গে রবীন্দ্রনাথ ঘোষের গন্ডগোল হয় । আবার কোথাও যুব তৃণমূল সভাপতি পার্থপ্রতিম রায়ের সঙ্গেও বিরোধ বাধে রবীন্দ্রনাথের । এই বিরোধের জেরে এবার লোকসভা ভোটে যুব তৃণমূল সভাপতি পার্থপ্রতিম রায় টিকিট পাননি । 1998 সালে তৃণমূল কংগ্রেস গঠনের পর থেকেই কোচবিহার জেলা তৃণমূল সভাপতি পদের দায়িত্বে ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঘোষ । 2011 সালে নাটাবাড়ি বিধানসভা থেকে তিনি জয়ী হন। এরপর 2016 সালে ফের একবার জয়ী হয়ে উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রীর দায়িত্ব পান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ ।
বিকেলে নিজের বাড়িতে সাংবাদিক বৈঠক করে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, "দলের যেভাবে চাইবেন, সেভাবেই তাঁকে সমর্থন করব । প্রয়োজনে আরও বেশি কাজ করতে পারলে দলের কর্মী হিসেবে নিজেকে ধন্য মনে করব । দল হেরেছে । সাধারণত দলকে জেতানোর দায়িত্ব থাকে জেলা সভাপতিরই । সেই দায়িত্ব কাঁধে নিয়ে আমার পদত্যাগপত্র দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে ইমেলে পাঠিয়ে দিয়েছি । "
সূত্রের খবর, তৃণমূল জেলা সভাপতির অঙ্গুলি হেলনেই কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্রে প্রার্থী করা হয় ফরওয়ার্ড ব্লক ছেড়ে তৃণমূলে যোগদানকারী পরেশচন্দ্র অধিকারীকে । ভোটের ফলপ্রকাশের পর দেখা যায়, কোচবিহারের 7টি বিধানসভার মধ্যে 5টিতে খারাপ ফল করেছে তৃণমূল । যা নিয়ে দলের অন্দরে ক্ষোভ তৈরি হয় । বিভিন্ন মহল থেকে রবীন্দ্রনাথ ঘোষের পদত্যাগের দাবি ওঠে । পাশাপাশি তৃণমূলের বিধায়কদের একাংশ রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে সরানোর দাবি জানায় । এরপরই আজ কোচবিহারের তৃণমূল সভাপতির দায়িত্ব থেকে রবীন্দ্রনাথ ঘোষকে সরিয়ে দেওয়া হয় ।