জলপাইগুড়ি/কোচবিহার, 24 এপ্রিল: উত্তরবঙ্গ শব্দবন্ধের ঘোর বিরোধী তিনি ৷ রাজ্যে কোনও উত্তরবঙ্গ, গৌড়বঙ্গ বা দক্ষিণবঙ্গ নেই ৷ কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ - গোটাটা একটাই বঙ্গ, আর তা হল পশ্চিমবঙ্গ ৷ জনসংযোগ যাত্রা শুরু করতে কোচবিহারে পৌঁছে এই বার্তাই দিলেন তৃণমূল কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ তাঁর মতে, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার-সহ উত্তরের জেলাগুলিই হল বাংলার মাথা ৷ বঙ্গভঙ্গের বিরোধিতা করে এ দিন বিজেপিকে একহাত নেন তিনি ৷ তাঁর কথায়, রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য মানুষকে বিভ্রান্ত করছে ভারতীয় জনতা পার্টি ৷
মঙ্গলবার কোচবিহার থেকে জনসংযোগ যাত্রার সূচনা করতে চলেছেন অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ সেই উপলক্ষে আজই কোচবিহারে পৌঁছে গিয়েছেন তিনি ৷ এ দিন তিনি পুজো দেন মদনমোহন মন্দিরে ৷ মন্দির থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অভিষেক বাংলা ভাগের প্রস্তাবের বিরুদ্ধে সরব হন ৷
অভিষেকের কথায়, "কোনও ভাবেই বাংলার শান্তি শৃঙ্খলা নষ্ট করা যাবে না ৷ পৃথক রাজ্য গড়ার যে ডাক দেওয়া হয়েছে, তা নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থ চরিতার্থ করার জন্য করছে একটা রাজনৈতিক দল । তৃণমূল কংগ্রেস এর বিরুদ্ধে লড়ছে । মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে ভারতীয় জনতা পার্টির একাংশ ৷ গত 6 মাসে আমি প্রায় এ দিকে 6 বার এসেছি ৷ স্থানীয় সাংসদের থেকে আপনারা আমাকে বেশি দেখেছেন ৷ আগামিকাল আমরা দিনহাটা থেকে কর্মসূচি শুরু করব ৷"
এ দিন বিজেপিকে একহাত নিয়ে অভিষেক বলেন, "আমি উত্তরবঙ্গ শব্দবন্ধ ব্যবহারের ঘোর বিরোধী । আমি বলেছি বাংলায় গৌড়বঙ্গ, উত্তরবঙ্গ, দক্ষিণবঙ্গ বলে কিছু নেই । কোচবিহার থেকে কাকদ্বীপ একটাই বঙ্গ, সেটা পশ্চিমবঙ্গ । কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, দার্জিলিং-সহ বিভিন্ন জেলার প্রতিটি গ্রাম বাংলার অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ । আমরা বামনহাট থেকে শুরু করছি । অনেকে তাকে বাংলার শেষ প্রান্ত বলে । তবে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখলে বলব কোচবিহার, জলপাইগুড়ি-সহ এই জেলাগুলিই বাংলার মাথা ৷"
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় এ দিন জানান, 20 তারিখ যে নবজোয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়েছিল, সেই কর্মসূচি মঙ্গলবার থেকে শুরু হচ্ছে ৷ গোটা কর্মসূচির রুটম্যাপ সবার সঙ্গে শেয়ার করা হয়েছে ৷ তৃণমূল যে উদ্যোগ নিয়েছে দেশের আর কোনও দল এই উদ্যোগ নেয়নি বলে দাবি করেন অভিষেক ৷
তিনি বলেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য মানুষের মতামত নেওয়া হবে । তিনি তুফানগঞ্জ,মাথাভাঙা, জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারে যাবেন । তাঁর কথায়, "পঞ্চায়েতের আগে মানুষের কাছে যাব, সেখানে গিয়ে পঞ্চায়েতের প্রার্থী তাঁরা কাকে চান তা জানব এবং তাঁকেই প্রার্থী করব । মানুষের কথা জানতে যাচ্ছি, তাঁদের দাবিদাওয়াকে স্বীকৃতি দিয়েই আগামী পঞ্চায়েত গড়বেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অভিষেক ৷
তবে এ দিন বিচারব্যবস্থা নিয়ে কোনও মন্তব্য করেননি তৃণমূল সাংসদ ৷ তাঁর দাবি, আইন আইনের পথে চলবে ৷ কোনও মন্ত্রী, বিধায়ক, রাজ্যপাল, বিচারপতি কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নয় ৷