কোচবিহার, 5 নভেম্বর: কোচবিহারের ঐতিহ্যবাহী রাসমেলার (Cooch Behar Rash Mela) উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের (Opening Ceremony) আমন্ত্রণপত্রে (Invitation Card) অনন্ত মহারাজের (Ananta Maharaj) নাম থাকায় বিতর্ক তৈরি হয়েছে ৷ শুক্রবারই অনন্ত মহারাজ দাবি করেন, বাংলা ভাগ হয়ে গিয়েছে ! উত্তরবঙ্গকে পৃথক কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল হিসাবে ঘোষণা এখন নাকি শুধুই সময়ের অপেক্ষা ! এই ঘটনার পরও কেন ওই আমন্ত্রণপত্রে গ্রেটার নেতা অনন্ত মহারাজের নাম রাখা হল, সেই প্রশ্ন উঠছে ৷
আগামী মঙ্গলবার কোচবিহারের রাসমেলার মাঠে এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে ৷ সেই অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্রে রাজ্যের শাসকদলের নেতা, মন্ত্রীদের নাম যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে গ্রেটার সুপ্রিমো অনন্ত মহারাজের নাম ! এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে কোচবিহার জেলার রাজনৈতিক মহলে ৷ যদিও এ নিয়ে রাসমেলার উদ্যোক্তা তথা কোচবিহার পৌরসভার চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, "রাসমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্রে বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নাম রয়েছে ৷ তাই ওঁর নামও রাখা হয়েছে ৷"
আরও পড়ুন: অনন্ত মহারাজের উলটো সুর সুকান্তের গলায়, ওড়ালেন বঙ্গভঙ্গের সম্ভাবনা
কোচবিহারে মদনমোহনের রাস উৎসবকে কেন্দ্র করে বিরাট মেলা বসে ৷ এই মেলা উত্তর-পূর্ব ভারতের বৃহত্তম মেলা ৷ 1812 সালে মহারাজ হরেন্দ্র নারায়ণ ভেটাগুড়ির রাজপ্রাসাদে প্রবেশ করেন ৷ সেই উপলক্ষেই এই মেলার আয়োজন ৷ সেই 1812 সাল থেকেই এই মেলা চলছে ৷ এবার মেলার 210 বছর পূর্ণ হবে ৷ আগে রাজারা রাসচক্র ঘুরিয়ে রাস উৎসবের সূচনা করতেন ৷ বর্তমানে কোচবিহারের জেলাশাসক এই রাস উৎসবের সূচনা করেন ৷ পাশাপাশি, কোচবিহার পৌরসভার উদ্যোগে মেলা অনুষ্ঠিত হয়। সেই মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্রে উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী উদয়ন গুহর নাম যেমন রয়েছে, তেমনই বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নামও রয়েছে ৷ পাশাপাশি পৃথক রাজ্যের অন্যতম দাবিদার অনন্ত মহারাজের নামও রয়েছে ৷
শুক্রবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের বাড়িতেই তাঁর সঙ্গে বৈঠক করেন অনন্ত মহারাজ ৷ আর তারপরই উত্তরবঙ্গকে নিয়ে চাঞ্চল্যকর দাবি করেন তিনি ৷ যদিও নিশীথ এই বিষয়ে উচ্চবাচ্য করেননি ৷ উপরন্তু, শনিবার রাজ্য বিজেপি-এর সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও কার্যত অনন্ত মহারাজের দাবি উড়িয়ে দেন ৷ তবু এ নিয়ে জল্পনা বন্ধ হয়নি ৷ এই প্রেক্ষাপটে রাসমেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আমন্ত্রণপত্রে অনন্ত মহারাজের নাম প্রকাশের ঘটনা তাতে বাড়তি মশলা জোগাল বলেই মনে করছে সংশ্লিষ্ট মহল ৷