কোচবিহার, 22 জুন : রোগীমৃত্য়ুর ঘটনায় চিকিৎসায় গাফিলতির অভিযোগ ৷ কাঠগড়ায় কোচবিহারের সরকারি এমজেএন হাসপাতাল ৷ মৃতের পরিবারের অভিযোগ, শুধুমাত্র লোক না থাকায় মুমূর্ষূ রোগীকে দেওয়া যায়নি অক্সিজেন ৷ আর তাতেই প্রাণ যায় বছর ত্রিশের মনোজ ওঝার ৷ গাফিলতির অভিযোগ মানতে নারাজ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ৷ তবে গোটা ঘটনা খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে তারা ৷
সূত্রের খবর, মৃত ওই যুবক কোচবিহারের বিন্দেশ্বর চৌপথী এলাকার বাসিন্দা ছিলেন ৷ পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, গত রবিবার হঠাৎই শ্বাসকষ্ট শুরু হয় মনোজের ৷ শরীরে কমে যায় অক্সিজেনের মাত্রা ৷ অবস্থার অবনতি হওয়ায় তাঁকে এমজেএন হাসপাতালে ভর্তি করা হয় ৷ তবে মনোজ করোনায় আক্রান্ত ছিলেন না ৷
আরও পড়ুন : Black Fungus : উত্তরবঙ্গ মেডিক্যালে একদিনে ব্ল্যাক ফাংগাসে আক্রান্ত দুই রোগীর মৃত্যু
মনোজ ওঝার পরিবারের দাবি, প্রথম থেকেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলার শিকার হতে হয় তাঁকে ৷ মনোজের তৎক্ষণাৎ অক্সিজেন দরকার ছিল ৷ হাসপাতালে অক্সিজেন মজুতও ছিল ৷ অথচ অক্সিজেন মাস্ক রোগীকে পরাবেন, এমন কোনও লোক ছিল না ! আর তাই, হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রায় দেড় ঘণ্টা পর মনোজকে অক্সিজেন সাপোর্ট দেওয়া শুরু হয় ৷
তারপরও সেরে উঠছিলেন ওই যুবক ৷ সোমবার রাতে বাড়ির লোকের সঙ্গে কথাও বলেছিলেন তিনি ৷ জানিয়েছিলেন, ভাল আছেন ৷ অথচ, মঙ্গলবার সকালে পরিবারের সদস্যদের জানানো হয়, মনোজ মারা গিয়েছেন ৷ মঙ্গলবার ভোর চারটে নাগাদ মৃত্যু হয় তাঁর ৷
মনোজের দূর সম্পর্কের দাদা রাসবিহারী গোস্বামী জানিয়েছেন, তাঁর ভাইকে যে সিলিন্ডার থেকে অক্সিজেন দেওয়া হচ্ছিল, সেটি রাতে খালি হয়ে যায় ৷ কিন্তু পরিবর্ত সিলিন্ডারের কোনও ব্যবস্থা করা হয়নি ৷ মনোজের দেখভালের জন্য যে দুই মহিলাকে রাখা হয়েছিল, তাঁরা পরিবারের সদস্যদের জানিয়েছেন, অক্সিজেন সিলিন্ডার বদলানোর মতো কেউ নাকি সেই সময় হাসপাতালে ছিলেনই না !
আরও পড়ুন : পান্ডুয়া গ্রামীণ হাসপাতালে রোগী মৃত্যুর ঘটনায় চিকিৎসককে মারধরের অভিযোগ
সরকারি হাসপাতালের এমন উদাসীনতায় ক্ষুব্ধ মনোজের পরিবার ৷ সদস্যদের দাবি, মনোজকে যখন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল, তখন তাঁর শরীরের অক্সিজেনের মাত্রা ছিল 72 ৷ পরে তা কমে হয় 45 ৷ হাসপাতাল সূত্রেই তাঁরা এই খবর পেয়েছেন বলে জানিয়েছেন রাসবিহারী ৷ তাঁর সাফ কথা, হাসপাতালের কর্মীদের গাফিলতির জন্যই তাঁর ভাইকে এভাবে অকালে চলে যেতে হল ৷
অন্যদিকে, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ অবশ্য গাফিলতির অভিযোগ মানতে চায়নি ৷ তবে গোটা বিষয়টি খতিয়ে দেখার আশ্বাস দিয়েছে তারা ৷