কলকাতা, 6 জুলাই : পূর্ণাঙ্গ শিক্ষকদের মতো বেতন দিতে হবে । এই দাবিতে রানি রাসমণি রোডে জমায়েত হন 1000-র বেশি SSK (শিশু শিক্ষা কেন্দ্র) ও MSK (মাধ্যমিক শিক্ষা কেন্দ্র) শিক্ষক-শিক্ষিকা । এর জেরে প্রায় ঘণ্টাখানেক অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে রাস্তা । ঘটনাস্থানে এসে তুলতে গেলে পুলিশের সঙ্গে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ধস্তাধস্তি শুরু হয় । পরে কয়েকজনকে আটক করা হয় । শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অভিযোগ, পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে । এমনকী শিক্ষিকাদের অশালীনভাবে গাড়িতে তোলা হয় ।
বেতন বৃদ্ধির দাবিতে এর আগে একাধিকবার আন্দোলন করেছে SSK, MSK শিক্ষক-শিক্ষিকারা । কয়েকদিন আগে সল্টলেকে বিক্ষোভ দেখান তাঁরা । পরে শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আশ্বাসে উঠে যায় বিক্ষোভ । সম্প্রতি বিধানসভায় শিক্ষামন্ত্রী জানান, পার্শ্বশিক্ষকদের সমতুল্য করা হচ্ছে SSK, MSK শিক্ষক-শিক্ষিকাদের । অর্থাৎ পার্শ্বশিক্ষকদের হারে বেতন পাবেন । এনিয়েই সরব হন SSK, MSK শিক্ষক-শিক্ষিকরা । তাঁদের বক্তব্য, তাঁরা পূর্ণাঙ্গ শিক্ষকদের মতো কাজ করেন । তাহলে তাঁদের কেন পার্শ্বশিক্ষকদের হারে বেতন দেওয়া হবে ?
এই সংক্রান্ত আরও খবর : ধরনা মঞ্চ থেকে বের হতেই আটকাল পুলিশ, ধস্তাধস্তিতে অসুস্থ শিক্ষকরা
পূর্ণাঙ্গ শিক্ষকদের হারে বেতনের দাবিতে গতকাল রানি রাসমণি রোডে জমায়েত হন SSK, MSK শিক্ষক-শিক্ষিকরা । সেখান থেকে বিধানসভা অভিযানের পরিকল্পনা ছিল । জমায়েতে আসা এক শিক্ষক মহম্মদ নজরুল ইসলাম বলেন, "2010 সালের 3 মার্চ আমাদের বেতন হয় 8 হাজার 930 টাকা । রাজ্যে পালাবদলের পর তৃণমূল সরকার এক টাকাও বেতন বাড়ায়নি । উলটে পাঁচ শতাংশ ইনক্রিমেন্ট কেটে নিয়েছে । শিক্ষামন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন, ভোটের পর বেতন বাড়ানো হবে । সেজন্য গত মাসে বিকাশ ভবনের সামনে ধরনায় বসেছিলাম । আমরা চাইলে সেদিন বিকাশ ভবন গুঁড়িয়ে দিতে পারতাম । কিন্তু, শিক্ষক বলে আমরা কিছু করিনি । " তাঁর যুক্তি, SSK, MSK শিক্ষক-শিক্ষিকরা পূর্ণাঙ্গ শিক্ষকদের মতো কাজ করেন । কিন্তু, পার্শ্বশিক্ষকরা সপ্তাহে চারদিন কাজ করেন ।
এই সংক্রান্ত আরও খবর : নির্বাচনবিধির জন্য আলোচনা সম্ভব হচ্ছে না, SSK ও MSK নিয়ে শিক্ষামন্ত্রীর
এই জমায়েতের জেরে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে রানি রাসমণি রোড । পুলিশ তাঁদের রাস্তা থেকে উঠে যেতে বলে । কিন্তু, তাতে রাজি না হওয়ায় শিক্ষকদের উপর লাঠিচার্জ করা হয় বলে অভিযোগ । কয়েকজনকে আটক করা হয় । অভিযোগ, শিক্ষিকাদের গাড়িতে তোলার সময় সেখানে কোনও মহিলা পুলিশ ছিলেন না । পুরুষরাই তাঁদের গাড়িতে তুলেছিলেন ।
এই সংক্রান্ত আরও খবর : শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনার পরও অবস্থানে অনড় শিক্ষকরা
বাঁকুড়ার পাত্রসায়ের থেকে আসা এক শিক্ষক প্রশান্ত রায় বলেন, "বিনা প্ররোচনায় পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে । ষাটোর্ধ্ব মহিলাদের শ্লীলতাহানি করে গাড়িতে তুলেছে । তখন কোনও মহিলা পুলিশ ছিলেন না । পুলিশ 300-400 জনকে আটক করেছে । পিটিয়ে পিটিয়ে তুলেছে সবাইকে । এটা কি গণতান্ত্রিক সরকার ? " 2006 সালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অনশনের প্রসঙ্গ তুলে তাঁর বক্তব্য, "জাতীয় সড়ক অবরোধ করে 18 দিন অনশন করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী । আমরা তো তাঁর দেখানো পথেই আন্দোলন করেছি । শিক্ষামন্ত্রী আমাদের বলেছিলেন বিকাশ ভবনে দেখা করবেন । তারপর উনি আমাদের অনুরোধ করেছিলেন, আপনারা ধর্মতলায় আসুন । আমি আপনাদের বিধানসভায় ডেকে কথা বলব । সেজন্যই আমরা এখানে জমায়েত হয়েছি । কিন্তু, উনি কোনও কথা রাখলেন না । এমনকী, পুলিশকে লেলিয়ে দিয়ে অত্যাচার করে আমাদের ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করা হয়েছে । "
এই সংক্রান্ত আরও খবর : সল্টলেকে SSK, MSK সহায়কদের সঙ্গে পুলিশের ধস্তাধস্তি, উত্তেজনা