কলকাতা, ২৫ ফেব্রুয়ারি : তোলা না পেলে মারধর, গুলি চালানো, রক্তপাত। এটাই ছিল দস্তুর। তেমনই একটি তোলাবাজির মামলায় আপাতত প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে রয়েছে গেদু। তার বিরুদ্ধে খুন, তোলাবাজি, বেআইনি অস্ত্র রাখা সহ একাধিক মামলা রয়েছে। এহেন গৌতম বড়াল ওরফে গেদুর কাছ থেকে সম্প্রতি উদ্ধার হয়েছে স্মার্টফোন। আর এরপরই নড়েচড়ে বসেছে প্রেসিডেন্সি কর্তৃপক্ষ। ফোনের মাধ্যমে কাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিল গেদু, জেলে কীভাবে তার কাছে ফোন পৌঁছাল - সবই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে, জেলে বসেই ফোনের মাধ্যমে তোলাবাজি ও গ্যাং চালাচ্ছিল গেদু।
সময়ে টাকা পৌঁছে না দিলে প্রাণে মেরে ফেলব বলে ফোনে দুষ্কৃতীদের কাছ থেকে হুমকি পেয়েছিলেন বাস মালিক অসীম গুহ। গেদুর নাম করে টাকা চাওয়া হয়েছিল। ঘটনাটি গত বছরের। টাকা দিতে অস্বীকার করলেও গেদুর নামে করে ফোন আসায় অসীমবাবু ভয় পেয়ে যান। কিন্তু গেদু তখন জেলে। জেলবন্দী গেদুর পক্ষে এই কাজ করা সম্ভব নয় ভেবে বিষয়টিতে পাত্তা দেননি। কিন্তু টাকা না দেওয়ায় দমদম পার্কের বাস ডিপোতে গিয়ে অসীমবাবুকে প্রচণ্ড মারধর করে একদল দুষ্কৃতী। মারধর করা হয় বাসের কর্মীদেরও। বাসে ভাঙচুর চালানো হয়। সেই ঘটনার পর পুলিশ মনে করছে, গব্বর ও রমেশ মাহাতর মতো জেলে বসে তোলাবাজি ও গ্যাং চালাচ্ছে গেদু। এরপরেই তল্লাশি চালিয়ে গেদুর কাছ থেকে ফোন পাওয়া যায়।
জেলে বসে ফোনের মাধ্যমে তোলাবাজি চালানোর ঘটনা অবশ্য নতুন নয়। উত্তর কলকাতার এক ব্যবসায়ীর কাছে ফোন এসেছিল গত বছরের শেষের দিকে। গব্বরের পাশাপাশি রমেশ মাহাতর নাম করে টাকা চাওয়া হয়। রমেশ হুগলি শিল্পাঞ্চলে প্রায় ২০টি খুনের ঘটনায় অভিযুক্ত। গব্বরের সঙ্গে রমেশ তখন আলিপুর জেলে। ওই ব্যবসায়ীকে বলা হয় ৫ লাখ টাকা তাড়াতাড়ি দিতে হবে। না হলে গুলি করে মেরে দেওয়া হবে। ওই ব্যবসায়ী বিষয়টি জানান লালবাজারের গুন্ডা দমন শাখায়। লালবাজার তদন্তে নেমে বুঝতে পারে ঘটনাটি সত্যি। তারপর গব্বর ও রমেশকে আলাদা জেলে সরানো হয়। গেদুর ক্ষেত্রে কী করা হয়, সেটাই এখন দেখার।