কলকাতা, 15 জুলাই : মিসিং লিঙ্কটা কিছুতেই পাওয়া যাচ্ছিল না । অভিযুক্তরা দমদম-বেলঘরিয়া এলাকার বাসিন্দা । তবে নদিয়ার ব্যবসায়ী যে অত পরিমাণ টাকা নিয়ে কলকাতায় আসছেন, সেই তথ্য অভিযুক্তরা পেল কোথা থেকে ? দুঁদে গোয়েন্দারাও হাতড়ে বেড়াচ্ছিলেন সূত্রটা । সঙ্গে চলছিল গ্রেপ্তার হওয়া ASI সহ তিনজনকে জেরা । সেই সূত্র ধরেই গ্রেপ্তার করা হল সেই টিপারকে (যে অভিযুক্তদের কাছে ব্যবসায়ীর বিষয়ে খবর দিয়েছিল) । গোয়েন্দাদের বক্তব্য, এর ফলে রহস্যের জট অনেকটাই খুলল । যদিও, এখনও পালিয়ে বেড়াচ্ছে মাস্টারমাইন্ড কলকাতা পুলিশের নর্থ ডিভিশনে কর্মরত এক কনস্টেবল।
নদিয়ার স্বর্ণ ব্যবসায়ী বাবলু নাথ 4 জুলাই বউবাজারে গেছিলেন । তাঁর কাছে ছিল এক লাখ টাকা ও 50 গ্রাম সোনা । আচমকাই তাঁর সামনে একটি টাটা সুমো আসে । দুই আরোহী গাড়ি থেকে নেমে দাবি করে, "আমরা পুলিশের লোক । গাড়িতে উঠতে হবে ।" ভয় পেয়ে গাড়িতে ওঠেন বাবলু । তারপর তাঁর কাছ থেকে সোনা, টাকা ও আংটি নিয়ে নেওয়া হয় । অভিযোগ, গাড়িতে পাঁচজন ছিল । এরপর তাঁকে বিমানবন্দর চত্বরে নিয়ে গিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয় ।
এই সংক্রান্ত আরও খবর : রক্ষকই ভক্ষক ! ডাকাতিতে জড়িত পুলিশ
4 তারিখ মুচিপাড়া থানায় এই প্রসঙ্গে অভিযোগ দায়ের করেন ওই ব্যক্তি । তদন্তে নামে পুলিশ । আসরে নামে কলকাতা পুলিশের গোয়েন্দারাও । CCTV দেখে গাড়ি চালককে চিহ্নিত করে পুলিশ । একজনকে গ্রেপ্তার করা হয় । ধৃতের নাম নেপাল ধর । তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করে জানা যায়, গাড়িটি ভাড়া নিয়েছিল কলকাতা পুলিশের রেকর্ড সেকশনের ASI আশিস চন্দ । সঙ্গে ছিল বাদল সরকার সহ তিনজন । গত সপ্তাহে বাদল, নেপাল এবং আশিসকে গ্রেপ্তার করা হয় । তারা এখন পুলিশে হেপাজতে রয়েছে ।
এই সংক্রান্ত আরও খবর : অপহরণ ও ডাকাতির মাস্টারমাইন্ড এক কনস্টেবল ? জটিল হচ্ছে রহস্য
তবে লালবাজারের গোয়েন্দারা কিছুতেই খোঁজ পাচ্ছিলেন না টিপারের । পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বাদলকে একটু চেপে ধরে জিজ্ঞাসাবাদ করতেই বেরিয়ে আসে সেই তথ্য । জানা যায়, বাদলেরই পরিচিত মিঠুন নাথ ওরফে হোড় টিপারের কাজ করেছিল । সে শান্তিপুর এলাকার বাসিন্দা । নদিয়ার কৃষ্ণগঞ্জের বানপুর এলাকাতেও তার বাড়ি আছে । সে বাবলু নাথের এলাকারই বাসিন্দা । ফলে বাবলুর বিষয়ে অনেক কিছুই জানত । পুলিশ সূত্রে খবর, মিঠুন নকল ফুলের ব্যবসা করে । সেই সূত্রে রোজ দমদমে যাতায়াত ছিল । সেখানেই বাদলের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠতা গড়ে ওঠে । ঘটনার দিন অর্থাৎ 4 জুলাই মাজদিয়া স্টেশন থেকে বাবলুর পিছু নেয় মিঠুন । একই ট্রেনে শিয়ালদা আসে । আশিসদের চিনিয়েও দেয় ।
লালবাজার সূত্রে খবর, ঘটনায় কেঁচো খুঁড়তে কেউটের সন্ধান পাওয়া যাচ্ছে । সেই সূত্রে মামলার তদন্তভার নিচ্ছে লালবাজারের গোয়েন্দা শাখা । সেই তদন্তের শুরু থেকেই কলকাতা পুলিশের এক কনস্টেবলের নাম উঠে আসছিল । আপাতত সে পলাতক ।