শান্তিনিকেতন, 16 জানুয়ারি : বিতর্কের নিষ্পত্তি করতে অমর্ত্য সেনের "প্রতীচী" বাড়ির জমি রাজ্য সরকারের তত্ত্বাবধানে জরিপ করার প্রস্তাব দিল বিশ্বভারতী। অন্যদিকে, এই সংক্রান্ত বিষয়ে বিশ্বভারতীকে আইনজীবী মারফত আইনি নোটিস দিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। এদিন সাংবাদিক বৈঠক করে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের দাবি, প্রতিষ্ঠানের চেয়ে ব্যক্তি বড় নয়। তাই আর পাঁচজনের মতো অমর্ত্য সেনকেও কোনও ছাড় দেওয়া হবে না। এতদিন পর সরাসরি অমর্ত্য সেনের জমি সংক্রান্ত বিষয়ে সংবাদমাধ্যমে মুখ খুলল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ।
শান্তিনিকেতনে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের একটি বাড়ি রয়েছে। তার নাম "প্রতীচী"। অমর্ত্য সেনের দাদু ক্ষীতিমোহন সেন বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠার সময় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সহযোগী ছিলেন। পরে তিনি বিশ্বভারতীর দ্বিতীয় উপাচার্য হয়েছিলেন। এমনকী, অমর্ত্য সেনের মা অমিতা সেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছাত্রী ছিলেন। "অমর্ত্য" নামকরণ স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর করেছিলেন। সেই সময় থেকেই শান্তিনিকেতনে তাঁদের এই "প্রতীচী" বাড়িতে রয়েছে।
অমর্ত্য সেন বিশ্বভারতীর জমি দখল করে রয়েছেন। এমনই গুরুতর অভিযোগ উঠেছিল। যা নিয়ে রীতিমতো বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। নিন্দার ঝড় উঠেছিল সর্বত্র। নিন্দা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। এই নিয়ে এক সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব অশোক মাহাতো, ছাত্র পরিচালক শংকর মজুমদার, পাঠভবনের অধ্যক্ষা বধিরূপা সিংহ প্রমুখ।
সেখানে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট লেখা রয়েছে, "বিশ্বভারতীর 1130 একর জমির মধ্যে 77 একর জমি বেআইনিভাবে দখল হয়ে গিয়েছে। অমর্ত্য সেনের বিরুদ্ধে জমি দখলের যে অভিযোগ বিশ্ববিদ্যালয় করেছে, তারও সহজ নিষ্পত্তি হতে পারে। যদি পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তর থেকে সার্ভেয়ার এনে ওই জমি জরিপ করা যায়। এই বিতন্ডার স্থায়ী মীমাংসার জন্য যত দ্রুত সম্ভব, তা করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় দাবি করছে।"
অর্থাৎ, অমর্ত্য সেনের "প্রতীচী" বাড়িতে বিশ্বভারতীর কতটা জায়গা ঢুকে রয়েছে, তা জানতে রাজ্য সরকারের তত্ত্বাবধানে মাপ করার দাবি করছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত কর্মসচিব অশোক মাহাতো বলেন, "আমরা শুধুমাত্র অমর্ত্য সেনের কথা বলছি না। যেহেতু এই বিষয়ে বিতর্ক হয়েছে তাই জমি জরিপ করার একটা দাবি রয়েছে আমাদের।" তিনি আরও বলেন, "কোনও প্রতিষ্ঠান চেয়ে ব্যক্তি বড় নয়। তাই আলাদা করে কাউকে কোনও ছাড় দেওয়া হবে না।"
আরও পড়ুন : মানুষের স্বার্থে রাজনীতি করি, মানুষই আমার অনুপ্রেরণা : রাজীব
অন্যদিকে, এই সংক্রান্ত বিষয়ে ইতিমধ্যেই বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে আইনজীবী মারফত আইনি নোটিস পাঠিয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। সেকথাও সাংবাদিক বৈঠকে জানায় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। যদিও, বিশ্বভারতী তরফে এখনও পর্যন্ত অমর্ত্য সেনকে কোনও নোটিস দেওয়া হয়নি। এমনটাও এদিনের সাংবাদিক বৈঠকে জানানো হয়।