বোলপুর, 8 অক্টোবর: এবার করজোড়ে শান্তিনিকেতনের রাস্তায় বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী ৷ বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাসনা গৃহের সামনের রাস্তায় টোটো নিয়ন্ত্রণ করতে অনুরোধ করলেন তিনি ৷ 'ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ'কে রক্ষায় এই রাস্তা চেয়েই মুখ্যমন্ত্রীকে আবেদন করেছিলেন তিনি ৷ সেই চিঠি প্রসঙ্গে আজ উপাচার্য জানালেন, ‘‘এখনও চিঠির কোন উত্তর আসেনি ৷’’ রবিবার উপাসনা গৃহের সামনের রাস্তায় হঠাৎই বেরিয়ে আসেন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী ৷ সেখানে জটলা করে থাকা টোটো চালকদের হাত জোর করে অনুরোধ করেন, যাতে তাঁরা এই রাস্তায় যাত্রী তোলা ও নামানো বন্ধ করেন ৷
17 সেপ্টেম্বর বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিনিকেতনকে 'ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ' তকমা দিয়েছে ইউনেসকো ৷ যা নিয়ে উচ্ছ্বসিত সকলেই ৷ এরপরেই উপাসনা গৃহের সামনে থেকে কালিসায়র পর্যন্ত 3 কিলোমিটার রাস্তা চেয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আবেদন করেছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী ৷ যদিও উপাচার্য জানিয়েছেন, দু’টি চিঠি দিয়ে আবেদন করা হলেও কোনও উত্তর আসেনি মুখ্যমন্ত্রী বা রাজ্য সরকারের তরফে ৷ এদিন বিদ্যুৎ চক্রবর্তী চালকদের উদ্দেশ্যে বলেন, ‘‘আপনাদের কাছে হাতজোড় করে অনুরোধ করছি, উপাসনা গৃহের সামনে দাঁড়াবেন না ৷ আপনারা ব্যবসা করুন, কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে যাত্রী নামাবেন বা ওঠাবেন না ৷’’
প্রসঙ্গত, এই রাস্তাটির দুই দিকে একাধিক ঐতিহ্যবাহী ভবন, ভাস্কর্য ও স্থাপত্য রয়েছে ৷ তাই এই রাস্তাটি প্রাক্তন উপাচার্য স্বপন দত্তের সময় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ৷ পরবর্তীতে বর্তমান উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর সঙ্গে রাজ্যের সংঘাতে এই রাস্তা ফিরিয়ে নেয় সরকার ৷ 2020 সালের 28 ডিসেম্বর বীরভূম জেলা সফরে এসে রাস্তা ফিরিয়ে নেওয়ার কথা জানান মমতা ৷
আরও পড়ুন: হেরিটেজ ঘোষণা হতেই ঢাক বাজিয়ে আশ্রম পরিক্রমা বিশ্বভারতীর উপাচার্যের
আর তার পরেই উপাসনা গৃহের সামনের রাস্তায় সাধারণ মানুষের চলাচল বাড়ে ৷ সঙ্গে বাড়ে টোটোর দাপট ৷ নিয়মিত উপাসনা গৃহের সামনে থেকেই যাত্রী তোলা ও নামানো শুরু হয় ৷ অভিযোগ এর ফলে শান্তিনিকেতনের পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে ৷ উপাসনা গৃহে প্রার্থনা করতে সমস্যা হচ্ছে ৷ এরপর এদিন রবীন্দ্রনাথ ভবন সংগ্রহশালার কাছে রাস্তার উপর টোটো চলাচল নিয়ন্ত্রণের জন্য করজোড়ে আবেদন করতে দেখা গেল বিশ্বভারতীর উপাচার্যকে ৷
সাংবাদিকদের তিনি বলেন, "এটি বিশ্ব ঐতিহ্য ৷ এই তকমা, গরিমা আমাদের সবাইকে ধরে রাখতে হবে ৷ এই রাস্তায় যত্রতত্র টোটো চললে ভালো দেখায় না ৷ এমনকী, রাস্তা চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদনও করেছি ৷ চিঠির উত্তর পাইনি ৷ সকলের কাছে অনুরোধ, কবিগুরুর শান্তিনিকেতনকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসুন ৷"