বোলপুর, 30 সেপ্টেম্বর: এবার আশ্রমিকদের নিশানা করে উপাসনা গৃহে সামনের রাস্তা চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে ফের চিঠি দিলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। প্রসঙ্গত, এই রাস্তা যখন বিশ্বভারতীকে দেওয়া হয়েছিল তখন উপাচার্যের নির্দেশে বেশিভাগ সময় রাস্তাটি ব্যবহার করতে দেওয়া হত না। তাই রাস্তা ফেরত নিয়ে নিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ঐতিহ্যবাহী ভবন-ভাস্কর্য রক্ষায় ভারি যান নিয়ন্ত্রণের জন্যই রাস্তা চাইছে বিশ্বভারতী ৷ এমনটাই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে ৷
শনিবার মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া চিঠিতে উপাচার্য লেখেন, "এখানকার কিছু মানুষ নিজেদের স্বার্থকে প্রাধান্য দিচ্ছে। তাই আপনাকে রাস্তা না দেওয়ার কথা জানিয়েছে। কিন্তু, বিশ্ব ঐতিহ্যের তকমা ধরে রাখতে অনুগ্রহ করে রাস্তাটি বিশ্বভারতীকে দিন। বিশ্বভারতী স্থানীয় বসবাসকারী কোনও মানুষের অসুবিধা করেনি ৷ দু'চাকা গাড়ি চলাচল ব্যহত করবে না। এই রাস্তা দিয়ে ভারি যান নিয়ন্ত্রণ না করলে কম্পনে অনেক ক্ষতি হবে।"
শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যবাহী উপাসনা গৃহের সামনে থেকে কালিসায়র পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তা। আশ্রমের মধ্যদিয়ে এই রাস্তাটি রাজ্য সরকারের পূর্ত বিভাগের অধীনে ছিল। তৎকালীন উপাচার্য স্বপন দত্তের আবেদনের ভিত্তিতে রাস্তাটি বিশ্বভারতীকে দিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অভিযোগ, উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী এই রাস্তাটি প্রায় সময় আশ্রমিক ও সাধারণ মানুষের যাতায়াতের জন্য ব্যবহার করতে দিতেন না। এই মর্মে আশ্রমিকেরা চিঠি দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রীকে। সেই মত 2020 সালের 28 ডিসেম্বর বীরভূম জেলা সফরে এসে রাস্তাটি বিশ্বভারতীর থেকে ফিরে নিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
আরও পড়ুন: বাসে চেপে দিল্লির পথে তৃণমূল কর্মী-সমর্থকরা, সন্ধে পর্যন্ত চলবে রওনা প্রক্রিয়া
সদ্য ইউনেসকো শান্তিনিকেতন আশ্রমকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ বা বিশ্ব ঐতিহ্যের তকমা দিয়েছে। তাই রাস্তার ধারের ঐতিহ্যবাহী ভবন, ভাস্কর্য, স্থাপত্যগুলি রক্ষা করতে রাস্তাটি চেয়ে গত 25 সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য। এই রাস্তা দিয়ে ভারি যান চলাচল করলে কম্পনে ক্ষতিগ্রস্ত হবে ভাবন-ভাস্কর্য, এই আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছিল ৷ পালটা 26 সেপ্টেম্বর মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়ে রাস্তা না দেওয়ার আর্জি জানান আশ্রমিকেরা ৷ তাদের যুক্তি, এই রাস্তায় ভারি যান চলাচল করে না, হাইট বার দেওয়া আছে। উপাচার্য রাস্তাটি পেলেই সাধারণ মানুষের ব্যবহার বন্ধ করে দেবেন ৷ আশ্রমিকদের সাক্ষরিত চিঠির পরেই তাদের নিশানা করে ফের রাস্তা চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। তবে চিঠি জুড়ে শুধুই অনুরোধের সুর।