বোলপুর, 25 সেপ্টেম্বর: উপাসনা গৃহ-রবীন্দ্রভবনের সামনের রাস্তা চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি বিশ্বভারতীর উপাচার্যের। সম্প্রতি ইউনেসকো'র তরফে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তকমা পেয়েছে শান্তিনিকেতন। ঐতিহ্যবাহী ভবন, স্থাপত্যগুলি রক্ষা করতে এই রাস্তায় ভারী যান চলাচলে নিয়ন্ত্রণ জরুরি ৷ আর সে কারণেই রাস্তা ফিরে পেতে আবেদন করা হয়েছে বিশ্বভারতীর তরফে ৷ উল্লেখ্য, এই রাস্তাটি আগে বিশ্বভারতীকে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই। পরবর্তীতে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর একাধিক রাজ্য সরকার বিরোধী পদক্ষেপে রাস্তাটি কার্যত ক্ষুব্ধ হয়ে ফিরিয়ে নিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
শান্তিনিকেতনের ঐতিহ্যবাহী উপাসনা গৃহের সামনে থেকে কালিসায়র পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার এই রাস্তা। রাস্তাটি আশ্রমের মাঝ বরাবর গেলেও এটি রাজ্য সরকারের পূর্ত বিভাগের অধীনস্ত। তৎকালীন বিশ্বভারতীর ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য স্বপন দত্তের আবেদনের ভিত্তিতে এই রাস্তাটি বিশ্বভারতীকে দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পরবর্তীতে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী এই রাস্তাটি প্রায় সময় আশ্রমিক থেকে সাধারণ মানুষের জন্য যাতায়াত বন্ধ করে দিতেন বলে অভিযোগ। এই মর্মে মুখ্যমন্ত্রীকে বহু প্রবীণ আশ্রমিক অভিযোগও জানিয়েছিলেন। এছাড়া, সেই সময় বিশ্বভারতীর উপাচার্যের একাধিক কার্যকলাপ রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধেই যাচ্ছিল। 2020 সালের 28 ডিসেম্বর বীরভূম সফরে বোলপুরে আসেন মুখ্যমন্ত্রী। গীতাঞ্জলি প্রেক্ষাগৃহে প্রশাসনিক সভা থেকে পুনরায় রাস্তাটি ফিরিয়ে নেন তিনি ৷ রাস্তা ফিরে পেতে ছাতিমতলায় ধরনাতেও বসেছিলেন উপাচার্য।
এদিন, বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছেন ৷ পুনরায় রাস্তাটি বিশ্বভারতীকে ফিরিয়ে দেওয়ার আবেদন করা হয় ওই চিঠিতে। চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, "17 সেপ্টেম্বর ইউনেসকো শান্তিনিকেতনকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তকমা দিয়েছে। এই তকমা ধরে রাখতে হবে আমাদের সকলকে ৷ এই রাস্তার দু'ধারে একাধিক ঐতিহ্যবাহী ভবন, স্থাপত্য, ভাস্কর্য আছে ৷ ভারি যান চলাচলের ফলে কম্পনে এগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এগুলি রক্ষা করার জন্য এই রাস্তাটি বিশ্বভারতীকে ফিরিয়ে দেওয়া হোক।" মুখ্যমন্ত্রী যে বিশ্বভারতীর আবেদনে সারা দিয়ে রাস্তাটি ফিরিয়ে দেবেন সেই আশার কথাও উল্লেখও করেন উপাচার্য।
আরও পড়ুন: উৎসবের মরশুমের আগে ডেঙ্গি মোকাবিলায় বৈঠকে মুখ্যসচিব
প্রসঙ্গত, এর আগে দুটি চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বেনজির আক্রমণ করতে দেখা গিয়েছিল বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষকে। বিশেষ করে মুখ্যমন্ত্রী যখন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন তখনও তাঁকে আক্রমণ করেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। তবে এবারের চিঠিতে শুধুই আবেদন।