বোলপুর, 27 অক্টোবর: বিশ্ব ঐতিহ্যের স্বীকৃতি ফলকে ব্রাত্য স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ ৷ তাই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে মঞ্চ বেঁধে ধরনা শুরু করল তৃণমূল কংগ্রেস । গলায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি নিয়ে বৃহস্পতিবার বিক্ষোভে সামিল হলেন মন্ত্রী-বিধায়ক সহ অন্যরা । ইউনেসকোর ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তকমা পাওয়া নিয়ে দেওয়া ফলকে রয়েছে আচার্য হিসাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও উপাচার্যের নাম ৷ নাম নেই বিশ্বকবির ৷ যা নিয়ে নিন্দার ঝড় সর্বত্র । তারই প্রতিবাদ করছে তৃণমূল ৷
27 সেপ্টেম্বর বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিনিকেতনকে 'ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ' বা 'বিশ্ব ঐতিহ্যের' তকমা দিয়েছে ইউনেসকো । এই মর্মে ঐতিহ্যবাহী উপাসনা গৃহ, রবীন্দ্রভবন ও গৌরপ্রাঙ্গণে তিনটি শ্বেত পাথরের ফলক বসানো হয়েছে । তাতে লেখা রয়েছে, ‘ইউনেসকো স্বীকৃত ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট’ । নিচে রয়েছে আচার্য হিসাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর নাম ৷ ব্রাত্য স্বয়ং গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর । যা নিয়ে নিন্দার ঝড় উঠেছে সর্বত্র ।
এই নিয়ে মহর্ষি দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুরের প্রতিষ্ঠিত শান্তিনিকেতন ট্রাস্ট-সহ অধ্যাপক সংগঠন বিশ্বভারতীর পরিদর্শক তথা রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী, রেক্টর তথা রাজ্যপালকে চিঠি দিয়ে অভিযোগও করেছে । ফলকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম না থাকায় সরব হতে দেখা গিয়েছে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও ।
বুধবারর কালীঘাটের বাড়িতে সাংবাদিক বৈঠক থেকে মুখ্যমন্ত্রী বলেছিলেন, "শান্তিনিকেতন ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ হয়েছে, তার একমাত্র কৃতিত্ব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের । তিনি বিশ্বভারতী ও শান্তিনিকেতনের নির্মাতা ৷ তাঁর নামই নেই ফলকে । যা খুশি তাই শুরু করেছে ।"
আরও পড়ুন: বিশ্বভারতীতে বিশ্ব ঐতিহ্যের ফলকে ব্রাত্য রবীন্দ্রনাথ, খতিয়ে দেখবে রাজভবন
এরপরেই আন্দোলনের ডাক দেন তিনি । সেই মতো এ দিন সকাল থেকে শান্তিনিকেতন রাস্তার উপর কবিগুরু হস্তশিল্প মার্কেটে মঞ্চ বেঁধে ধরনা শুরু করে তৃণমূল । গলায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ছবি নিয়ে ধরনায় অংশ নেন রাজ্যের ক্ষুদ্র-মাঝারি ও কুটির শিল্পমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, বিধায়ক বিকাশ রায়চৌধুরী, শান্তিনিকেতন ট্রাস্টের সম্পাদক অনিল কোনার-সহ তৃণমূল কাউন্সিলররা ৷
মন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ বলেন, "মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আমাদের বিক্ষোভ । দফায় দফায় চলবে এই প্রতিবাদ ৷ বিশ্বভারতীর উপাচার্য রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে মুছে দিতে চাইছেন ৷ বাঙালি তা মেনে নেমে না । বিশ্বভারতীতে ফলক বসানোর রেওয়াজ নেই৷ কী দরকার ওই ফলকের ।"
বিশ্বভারতীর ছাত্রী তথা তৃণমূল নেত্রী মীনাক্ষী ভট্টাচার্য বলেন, "বিশ্ব ঐতিহ্যের ফলকে স্বয়ং রবীন্দ্রনাথের নাম দেয়নি ৷ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে আমরা আন্দোলন শুরু করেছি । হয় ফলক তুলে দিতে হবে, না হলে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম দিতে হবে ৷ তা না হলে আন্দোলন চলবে ।"
আরও পড়ুন: শান্তিনিকেতনের ফলকে ব্রাত্য স্বয়ং রবীন্দ্রনাথ! আন্দোলনের হুঁশিয়ারি মমতার