বোলপুর, 23 ফেব্রুয়ারি: প্রয়াত আশুতোষ সেনের উইল অনুযায়ী সম্পূর্ণ জমি অমর্ত্য সেনের (Nobel Laureate Amartya Sen) নামে রেকর্ড করে দিয়েছে ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর (Land Department) ৷ বৃহস্পতিবার শান্তিনিকেতন ছেড়ে চলে যাওয়ার আগে একথা জানিয়ে গেলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ নিজেই । তিনি বলেন, "আমার বাবার নামে জমি ছিল ৷ সেই জমি আমার নামে হওয়া উচিত ছিল ৷ তাই হল । বিএল অ্যান্ড আরও অফিস থেকে করে দিয়েছে ।" অর্থাৎ, 'প্রতীচী' বাড়ির 1.38 ডেসিমেল জমিই অমর্ত্য সেনের নামে নথিভুক্ত করল রাজ্য সরকার ।
গত 16 জানুয়ারি শান্তিনিকেতনের 'প্রতীচী' বাড়িতে আসেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন । এবার তিনি প্রায় এক মাসের বেশি সময় থাকলেন শান্তিনিকেতনে । এই সময় কালে অমর্ত্য সেন জমি দখল করে রেখেছেন, এই অভিযোগ তুলে তিনটি চিঠি দিয়ে জমি ফেরত চেয়েছে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ (Visva Bharati University) । যা নিয়ে রীতিমতো বিতর্ক হয়েছে । প্রতীচী বাড়িতে মোট 1.38 ডেসিমেল জমি ৷ যার মধ্যে 1.25 ডেসিমেল জমি ভারতরত্ন অমর্ত্য সেনের নামে রেকর্ড রয়েছে । বিশ্বভারতীর অভিযোগ, ছিল 13 ডেসিমেল জমি দখল করে রেখেছেন অমর্ত্য সেন ।
এই ইস্যুতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় (Bengal CM Mamata Banerjee) অমর্ত্য সেনের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন ৷ সম্প্রতি বোলপুর সফরে এসেছিলেন তিনি ৷ সেই সময় তিনি অমর্ত্য সেনের বাড়িতে যান ৷ সেখানে নোবেলজয়ীর সঙ্গে বেশ কিছুক্ষণ কথা বলেন ৷ অমর্ত্য সেনের হাতে জমির নথি তুলে দিয়েছিলেন ৷ এই ইস্যুতে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সমালোচনায় সরব হয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী ৷
এই বিষয়ে অমর্ত্য সেনের আইনজীবী গোরাচাঁদ চক্রবর্তী বোলপুর ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে প্রয়াত আশুতোষ সেনের একটি উইল পেশ করেন ৷ তাতে উল্লেখ রয়েছে, 'প্রতীচী' জমি তাঁর মৃত্যুর পর স্ত্রী অমিতা সেন পাবেন ৷ তার পরবর্তীতে পাবেন ছেলে অমর্ত্য সেন ৷ এই উইলের প্রেক্ষিতে বিশ্বভারতীর আইনজীবী সুচরিতা বিশ্বাসও একাধিক নথি জমা দেন বোলপুর ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরে । যা নিয়ে 20 ফেব্রুয়ারি বোলপুরের ভূমি ও ভূমি সংস্কার আধিকারিক সঞ্জয় দাসের সামনে শুনানি হয় ৷
এদিন, শান্তিনিকেতন ছেড়ে বিদেশের উদ্দেশে রওনা দিলেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ । বাড়ি থেকে বেরনোর সময় তিনি জানান, ফের জুলাই মাসে আসবেন ৷ যে ভাবে এবার এসে হেনস্তার শিকার হলেন, তাতে কি মনে ব্যথা নিয়ে ফিরছেন ? প্রশ্ন করা হলে অমর্ত্য সেন বলেন, "মনে ব্যথার অবকাশ নেই ।"
জমির মীমাংসা কি হল ? তিনি বলেন, "আমার বাবার নামে জমি ছিল, আমার নামে হওয়া উচিত ছিল । তাই হল । বিএল অ্যান্ড আরও অফিস থেকে করে দিয়েছে তো । না হওয়ার কোন কারণ ছিল না । আমার বাবার উইলে বলা আছে, যখন জীবন শেষ হবে, আমার মা পাবেন এই জমি । আমার মায়ের জীবন শেষ হলে আমার কাছে আসবে ।" অর্থাৎ, 1.38 ডেসিমেল জমি প্রয়াত আশুতোষ সেনের উইল অনুযায়ী অমর্ত্য সেনের নামেই রেকর্ড করে দিয়েছে রাজ্য সরকার । এখন দেখার বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এই প্রসঙ্গে কি পদক্ষেপ নেয় !
আরও পড়ুন: অমর্ত্য সেনকে জেড প্লাস নিরাপত্তা ঘোষণা মমতার, বোলপুরের বাড়িতে গিয়ে দিলেন জমির নথি