সিউড়ি, 24 জানুয়ারি : লাভপুরে একই পরিবারের তিন ভাইকে খুনের ঘটনায় BJP নেতা মুকুল রায়কে 4 ঘণ্টা জেরা করল সিউড়ি থানার পুলিশ । গতকাল দুপুর 3 টে নাগাদ জেরা শুরু করে পুলিশ ।
জেরা শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মুকুলবাবু বলেন, "কলকাতা হাইকোর্ট এই মামলায় একটা রায় দিয়েছে ৷ তাতে বলেছে কোনও ইনভেস্টিগেশন হলে তাতে সহযোগিতা করতে ৷ পুলিশ অফিসারদের কিছু করার নেই ৷ কারণ মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ রয়েছে ৷ সেই নির্দেশ মেনে আমাদের ডাকছেন ৷ আমাকে আজ 4 ঘণ্টা ধরে বিভিন্ন প্রশ্ন করেছেন ৷ আমি সব প্রশ্নের যথাযথ জবাব দিয়েছি বলি মনে করি ৷ "
এর আগেও একই মামলায় দুবরাজপুর থানায় ডেকে জেরা করা হয়েছিল মুকুলকে ৷ এবার সিউড়ি থানায় জেরা করা হয় ৷
উল্লেখ্য, বালিরঘাটের দখলদারির দ্বন্দ্ব মেটাতে 2010 সালের 4 জুন লাভপুরের নবগ্রামে নিজের বাড়ির উঠানে সালিশি সভা ডেকেছিলেন মণিরুল ইসলাম । তখন তিনি ফরওয়ার্ড ব্লকের নেতা ছিলেন । সেই সালিশি সভায় বচসার জেরে পিটিয়ে মেরে ফেলা হয়েছিল কটুন শেখ, ধানু শেখ ও তরুক শেখকে । ঘটনায় মণিরুল ইসলামসহ ৫২ জনের নামে লাভপুর থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছিল । ঘটনার পর পরই তৃণমূলে যোগ দেন মণিরুল ইসলাম ৷ পরে লাভপুর বিধানসভা থেকে তৃণমূলের টিকিটে জয়ী হন । 2011 সালে একটি জনসভায় বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেছিলেন, "পায়ের তল দিয়ে তিনজনকে মেরে দিয়েছি ৷ " এবং বিতর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন ৷ 2015 সালে এই মামলায় পুলিশ বোলপুর আদালতে 30 জনের নামে চার্জশিট জমা দিয়েছিল । সেই চার্জশিটে নাম ছিল না মণিরুল ইসলামের । পরে নিহতের পরিবার পুনরায় তদন্তের দাবি জানিয়ে কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল ৷ গত বছর 4 সেপ্টেম্বর ঘটনার পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট ।
ইতিমধ্যে তৃণমূল ছেড়ে দিল্লিতে গিয়ে কৈলাস বিজয়বর্গীয় ও মুকুল রায়ের হাত ধরে BJP-তে যোগ দেন মণিরুল । হাইকোর্টের নির্দেশমত ফের তদন্ত শুরু করে পুলিশ । গতবছর 4 ডিসেম্বর বোলপুর আদালতে একটি সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা দেয় পুলিশ । জানা গেছে, সেই চার্জশিটে নাম রয়েছে মণিরুল ইসলামের । এমনকী, ঘটনায় প্ররোচনা দেওয়ার অভিযোগে চার্জশিটে নাম রয়েছে মুকুলবাবুরও ৷ 2010 সালে ঘটনার সময় তৃণমূলের অন্যতম নেতা ছিলেন মুকুলবাবু । মণিরুল ইসলাম ফরওয়ার্ড ব্লক ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার কথোপকথন চলছিল । তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে মুকুল রায়ের প্ররোচনা ছিল লাভপুর হত্যাকাণ্ডে ।