মহম্মদবাজার (বীরভূম), 15 নভেম্বর : ‘‘ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা, যম দুয়ারে পড়ল কাঁটা ৷’’ ভাইফোঁটার দিন প্রতিবছরই দাদার কপালে ফোঁটা দিয়ে তাঁর দীর্ঘায়ু কামনা করতেন বীরভূমের শকুন্তলা ওরাং৷ কিন্তু চলতি বছরের ভাইফোঁটা তাঁর কাছে অন্যরকম ৷ লাদাখের ভারত-চিন সীমান্তে শহিদ রাজেশ ওরাংয়ের বোন শকুন্তলা ৷
17 জুন লাদাখে ভারত-চিন সীমান্তে সেনাদের সংঘর্ষে শহিদ হন রাজেশ ওরাং ৷ দাদার শহিদ হওয়ার খবর প্রথম আসে বোন শকুন্তলার ফোনে ৷ প্রতি বছর যে দাদাকে ভাইফোঁটার দিন ফোঁটা দিতেন, সেই দাদা বর্তমানে চিরনিদ্রায় ৷ তাই উৎসবের দিনেও বিষণ্ণতায় দিন কাটছে শকুন্তলার ৷
দাদার শহিদ হওয়ার খবর প্রথম আসে বোন শকুন্তলার কাছে ৷ স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিলনে তিনি ৷ শোকস্তব্ধ হয়ে পড়েছিল গোটা গ্রাম ৷ ঘরের ছেলে রাজেশকে শেষবার দেখার জন্য লকডাউন ভেঙে উপচে পড়েছিল ভিড় ৷
বর্তমানে গ্রামের নতুন রাস্তা তৈরি হয়েছে রাজেশের নামে ৷ কিন্তু রাজেশ নেই ৷ প্রতিবছর দুর্গাপুজোর সময় গ্রামে ফিরত রাজেশ ৷ টানা একমাস ছুটি কাটিয়ে ভাইফোঁটা নিয়ে পুনরায় কাজে যোগ দিত সে ৷ কিন্তু এবার তিনি চিরনিদ্রায় ৷ তাই ভাইফোঁটার দিন ভরাক্রান্ত বোন শকুন্তলার মন ৷
রাজেশের বোনের কথায়, ‘‘ প্রতিবছর দাদা ছুটি নিয়ে এই সময় বাড়ি আসত ৷ সেই সময় আমরা কতটা আনন্দ করতাম তা বলে বোঝাতে পারব না ৷ এখন আর সেসব হবে না ৷ তাই আমাদের মন খুব খারাপ ৷’’
রাজেশের মায়ের কথায় ছেলে হারানোর যন্ত্রণা ৷ বলছেন, ‘‘ এই যন্ত্রণার কথা মুখে বলে বোঝানো যাবে না ৷ এই উৎসবের দিনে ভাই ও বোনেরা মিলে কত আনন্দ করত ৷ আজ আর সেসব নেই ৷ বাড়ি শূন্য ৷’’