বোলপুর, 2 অক্টোবর: নার্সিংহোমে সদ্যোজাত পাচারচক্রের রমরমার অভিযোগ উঠল বীরভূমের বোলপুরে । স্থানীয় আদ্যাশক্তি নার্সিংহোমের অপারেশন থিয়েটারের দুই টেকনিসিয়ান-সহ আটজনকে গ্রেফতার করল লাভপুর থানার পুলিশ । মাত্র 20 হাজার টাকায় সদ্যোজাতকে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ ধরা পড়ে পাচারকারীরা ৷ বোলপুরের আদ্যাশক্তি নার্সিংহোম থেকে এভাবেই প্রায়ই শিশু পাচার চলে বলে জানা গিয়েছে, পুলিশ সূত্রে এমনই খবর পাওয়া গিয়েছে ৷
বীরভূমের লাভপুরের বাসিন্দা আজমিরা বিবি নামে এক প্রসূতিকে গত 20 সেপ্টেম্বর বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের সন্নিকটে আদ্যাশক্তি নার্সিংহোমে ভরতি করা হয়েছিল ৷ সেই দিনই তিনি এক শিশুর জন্ম দেন । পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, অপারেশন থিয়েটার থেকেই ওই সদ্যোজাতকে মাত্র 20 হাজার টাকায় বিক্রি করে দেওয়া হয় । লাভপুরের কীর্ণাহারে বিক্রি করা হয় ওই সদ্যোজাতকে । পরে ফের 75 হাজার টাকায় ওই সদ্যোজাতকে অন্যত্র বিক্রি করা হয় ৷
বিষয়টি সূত্র মারফৎ জানতে পেরে তদন্তে নামে লাভপুর থানার পুলিশ । ঘটনায় আটজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে । তাদের মধ্যে দু’জন হেমন্ত মাজি ও সরূপ দাঁ আদ্যাশক্তি নার্সিংহোমের অপারেশন থিয়েটারের টেকনিসিয়ান ৷ সদ্যোজাতর মা আজমিরা বিবিওকেও গ্রেফতার করেছে পুলিশ । এছাড়া গ্রেফতার করা হয়েছে মধুমিতা মণ্ডল, সুজিত মণ্ডল, হাবল মাজি, শেখ কাফি, শেখ মোজাম্মেল হক ও জয়ন্ত মাজিকে । প্রত্যেকের বিরুদ্ধেই শিশুপাচার চক্রে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে ৷
প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পারে নার্সিংহোমের এই দুই অপারেশন থিয়েটারের কর্মী হেমন্ত মাজি ও সরূপ দাঁয়ের প্রত্যক্ষ যোগে রমরমিয়ে চলত শিশুপাচার ৷ অপারেশন থিয়েটারে শিশু জন্মানোর পরেই সুযোগ বুঝে দরদাম ঠিক হয়ে যেত । কখনও পরিবারকে রাজি করিয়ে চলত শিশুপাচার, কখনও সন্তান জীবিত নেই বলে পাচার করে দেওয়া হত ৷
ধৃতদের সোমবার বোলপুর মহকুমা আদালতে তোলা হয় ৷ বিচারক সাতদিন পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেন । ঘটনার পর থেকে নার্সিংহোমের অফিসে তালা দেওয়া ৷ সেখানে নেই চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরাও । কর্তৃপক্ষের তরফে একজন ছিলেন । তাঁকে প্রশ্ন করা হলে তিনি মুখ লুকিয়ে পালিয়ে যান ৷
আরও পড়ুন: টাকার অভাব 5 দিনের শিশুকে বিক্রির অভিযোগ বাবা-মার বিরুদ্ধে