মলুটি(ঝাড়খণ্ড), 12 নভেম্বর: ঝাড়খণ্ডের দুমকা জেলার মলুটি গ্রামের রাজবংশ আর নেই ৷ নেই সেই চাকচিক্য, জাঁকজমক থেকে জৌলুসও ৷ কিন্তু আজও পুজোপাঠ থেকে মৌলিক্ষা মায়ের সেবা হয়ে আসছে বংশপরম্পরায় এবং রীতিনীতি মেনেই ৷ ইতিহাসবিদদের মতে, আনুমানিক 1857 সালে সাধক বামাক্ষ্যাপা মলুটি যান এবং সাধনা করে সিদ্ধিলাভ করেন । এক সময় মা তারার মন্দিরের দেখাশুনার দায়িত্ব ছিল নাটোরের রানির তত্ত্বাবধানে । সেই সময় ঝাড়খণ্ডের তৎকালীন রাজা দ্বারকা নদী পেরিয়ে তারাপীঠ মায়ের দর্শন এবং পুজো দেওয়ার জন্য আসেন । কোনও কারণ বসত মন্দিরের সেবায়েত মহারাজাকে অনেকক্ষণ বসিয়ে রাখেন । রাজা মাতারার পুজো না করেই ফিরে যান এবং মালুটি গ্রামে মৌলিক্ষা দেবীর মন্দিরে দেবীর ঘট প্রতিষ্ঠা করে তিনি পুজো শুরু করেন ।
পরবর্তী সময়ে রাজা বাজ বসন্ত রায়, মলুটি গ্রামে 108টি শিব মন্দির ও মা মৌলিক্ষা মন্দিরটি স্থাপন করেন । তারাপীঠ থেকে 19 কিলোমিটার দূরত্বে বীরভূম লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের মলুটি গ্রামের দেবী মৌলিক্ষাকে মা তারার বড় দিদি বলা হয় । কারণ হিসেবে কথিত আছে, সাধক বামদেব দু'টাকা মাস মাইনেতে মন্দিরে ফুল তোলার কাজ করতেন । সেই সময় তিনি এখানেই প্রথম সাধনা করে সিদ্ধিলাভ করেছিলেন । তাই মা মৌলিক্ষা দেবীকে তিনি বড়মা বলতেন এবং মা তারাকে তিনি ছোটমা ডাকতেন ।
রাজা বসন্ত রায়ের আমলে মলুটি গ্রামে গড়ে তোলা 108টি শিব মন্দির সংস্কারের অভাবে ভেঙ্গে গিয়েছে ৷ বর্তমানে সেখানে রয়েছে 72টি মন্দির । তাই মন্দির নগরীও বলা হয় মলুটি গ্রামকে । মৌলিক্ষা দেবীর পাশাপাশি দীপান্বিতা কালীপুজোয় গ্রামে রাজার বংশধরদের আটটি পরিবারের তরফের বাড়িতে আরও আটটি কালীপুজো হয়ে থাকে ।
মৌলি শব্দের অর্থ মস্তক, ইক্ষা শব্দের অর্থ দর্শন । অর্থাৎ মস্তক দর্শন । এখানে দেবীর মস্তকের প্রস্তর মূর্তির দর্শন পাওয়া যায় । কালীপুজোর সময় পশ্চিমবঙ্গ-সহ ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রচুর মানুষ মলুটি গ্রামে আসেন । সেই উপলক্ষে গ্রামে মেলা বসে ৷ রংবেরঙের বাজি পোড়ানো হয় ।
আরও পড়ুন: