জয়দেব (বীরভূম), 15 জানুয়ারি: শুরু হয়ে গেল প্রায় 400 বছরের প্রাচীন কেন্দুলির জয়দেবের মেলা ৷ প্রতি বছরই বীরভূমের অজয় নদের ধারে জয়দেব-কেন্দুলি মেলাকে কেন্দ্র করে অসংখ্য পুণ্যার্থী ভিড় জমান । প্রথা অনুযায়ী, মকর সংক্রান্তির দিন অজয় নদের তীরে পুণ্যস্নান সারেন পুণ্যার্থীরা । অন্যদিকে সকাল থেকে ঐতিহ্যবাহী রাধা-বিনোদের মন্দিরে পুজো দেওয়ার লম্বা লাইন ৷ সব মিলিয়ে জমে উঠেছে কবি জয়দেবের স্মৃতিবিজরিত বাউল-ফকিরদের মেলাটি ।
1683 সালে বর্ধমানের রাজা কীর্তিচন্দ্র বীরভূমের অজয় নদের রাধা-বিনোদের মন্দির প্রতিষ্ঠা করেছিলেন । এই স্থানটির সঙ্গে কবি জয়দেবের নাম জড়িয়ে রয়েছে । 400 বছরের প্রাচীন এই মন্দিরের গায়ে টেরাকোটার কাজের মাধ্যমে বর্ণিত রয়েছে বহু পৌরাণিক কাহিনী সমূহ । রয়েছে নানান দেবদেবীর মূর্তি । এই জয়দেব মেলা মূলত বাউল-ফকিরের মেলা হিসাবে পরিচিত । মকর সংক্রান্তির দিনে জাঁকিয়ে পড়েছে শীত ৷ তবে ভোর থেকে শীত উপেক্ষা করে অজয় নদের জলে স্নান সারলেন পুণ্যার্থীরা ৷ পুণ্যস্নান সেরে রাধা-বিনোদের মন্দিরে পুজো দেওয়ার রীতিও বজায় ছিল এ দিন । আখড়াগুলিও বাউল-ফকিরেরা গানের সুরে মুখরিত ।
মেলাকে ঘিরে নিরাপত্তা ব্যবস্থায় কোনও খামতি রাখতে চাইছে না পুলিশ প্রশাসন ৷ এবারে ভিড় অনেক বেশি থাকায় আঁটোসাঁটো করা হয়েছে জয়দেব মেলার নিরাপত্তা ব্যবস্থা । স্নানের ঘাট ও অন্যান্য জায়গায় নিরাপত্তার জন্য মোতায়েন রয়েছেন সিভিক ভলান্টিয়ার-সহ প্রায় 2 হাজার 600 পুলিশ কর্মী । নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছেন ডিআইজি, এসপি, এসডিপিও পদমর্যাদার অফিসাররা ৷ 100টির বেশি সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে । রয়েছে ওয়াচ টাওয়ার । সেখান থেকে চলছে নজরদারি । 24টি পুলিশ অ্যাসিস্ট্যান্ট বুথ, ইপটিজিং ও কেপমারি রুখতে একাধিক অ্যান্টি ক্রাইম টিম ও মহিলা পুলিশ রয়েছেন ।
এছাড়াও চলছে ড্রোন ক্যামেরায় নজরদারি ৷ এবার স্থায়ী আখড়া ছাড়াও 300টি মতো অস্থায়ী আখড়ার অনুমতি দিয়েছে প্রশাসন ৷ প্রায় 650টি স্টল রয়েছে মেলায় ৷ উন্মুক্ত মল-মূত্র ত্যাগ রুখতে নদীর তীরে এক হাজারেরও বেশি অস্থায়ী শৌচাগার নির্মাণ করা হয়েছে । বুধবার পর্যন্ত চলবে এই মেলা ৷
আরও পড়ুন: