দুবরাজপুর, 3 জুন: দোমড়ানো-মোচড়ানো কামরা, চাপা আর্তনাদ ৷ শুক্রবার সন্ধ্যে থেকেই এই ছবি দেখছে গোটা দেশ ৷ রাতারাতি মর্গে বদলে গিয়েছে বাহানাগা হাই স্কুল ৷ স্তূপাকৃতি হয়ে লাশ জমা পড়ছে ইস্কুলের বারান্দায় ৷ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বাড়ছে হাহাকার ৷ বারবার গলা বুজে আসছে দুবরাজপুরের স্বাধীন বাগদিরও ৷ কোনওমতে প্রাণে বেঁচে ফিরলেও ভয়াবহ দুর্ঘটনার বলি হয়েছেন স্ত্রী ৷
করমণ্ডল এক্সপ্রেসে চেপেছিলেন স্ত্রী আরতি বাগদি ও দুই সন্তানকে নিয়ে ৷ দুবরাজপুর থানার পলাশবনী গ্রামের বাসিন্দা স্বাধীন বাগদি শ্রমিকের কাজে চেন্নাই যাচ্ছিলেন ৷ দুর্ঘটনার কবলে পরে স্ত্রী'র দেহ রেখে দুই সন্তানকে নিয়ে গ্রামে ফিরলেন তিনি ৷ স্বাধীন বাগদি জানান, অ্যাক্সিডেন্টের পর সব দুমদাম করে পড়ছে । চিৎকার করছে সবাই । যে পারল উঠল । তারপর স্ত্রীকে খুঁজে বেড়াচ্ছি, পাচ্ছি না । ভিতরে গিয়ে দেখি স্ত্রী মরে পড়ে আছে ।আমি দুই সন্তানকে নিয়ে ফিরে এলাম ৷"
এখন স্ত্রী'র দেহের অপেক্ষায় পরিবার ৷ প্রসঙ্গত, স্বাধীন বাগদিরা 4 জন-সহ এই গ্রাম থেকে মোট 6 জন চেন্নাইয়ের উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন ৷ জেনারেল কামরায় ছিলেন সকলে ৷ দুর্ঘটনায় 1 জনের মৃত্যু হয় ৷ বাকি 5 জনের মধ্যে 2 জন খানিক আহত হয়েছেন ৷ সকলেই এদিন গ্রামে ফিরে আসেন ।
আরও পড়ুন: বালাসোরের দুর্ঘটনা দেখে গাইসালের ভয়াবহতা ফিরে এলে শিলিগুড়ির পিন্টু রায়ের স্মৃতিতে
শুক্রবার সন্ধ্যায় একই লাইনে চলে আসায় মালগাড়ির সঙ্গে সংঘর্ষ হয় শালিমার-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ৷ যার জেরে একাধিক বগি লাইনচ্যুত হয় ৷ ওড়িশা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা 288 জন । আহত কমপক্ষে 1000 জন । হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে এমনই আশঙ্কা ৷ 24 ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ার পর এখনও চলছে উদ্ধার কাজ ৷ বহু মানুষের এখনও খোঁজ মিলছে না ৷
বীরভূম জেলাশাসক বিধান রায় বলেন, "খুব দুঃখের বিষয় । এই জেলায় 1 জনের মৃত্যু হয়েছে ৷ বেশ কয়েকজন নিঁখোজ ৷ আমরা জেলা থেকেও একটা কন্ট্রোল রুম খুলেছি । নজর রাখছি পরিস্থিতির উপর ।"