মল্লারপুর, 22 ফেব্রুয়ারি: বোমা ফেটে জখম হল চার শিশু (Four Children Injured in Bomb Blast) । ভয়াবহ ঘটনাটি ঘটেছে বীরভূমের মল্লারপুর থানার খরাশিনপুর গ্রামে । আহত শিশুদের উদ্ধার করে বীরভূমের রামপুরহাট গভর্নমেন্ট মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে (Rampurhat Hospital) । আহতদের নাম আরমান সেখ, ইন্নাল সেখ, রেহান সেখ ও সুহান সেখ। ঘটনাস্থল থেকে দু’টি তাজা বোমা পড়ে রয়েছে । মল্লারপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থল ঘিরে রেখেছে ।
স্থানীয় সূত্রের জানা যায়, আজ দুপুরে ওই তিন শিশু খেলা করছিল গ্রাম সংলগ্ন একটি মাঠে । সেখানে একটি চাষের কাজের জন্য জলের পাম্প আছে । সেই পাম্প হাউসের প্রাচীরের ধারে বোমা গুলি পড়ে ছিল । খেলতে খেলতে কোনও এক বাচ্চার পা বোমার উপরে পড়লে বোমা ফেটে গিয়ে বিপত্তি ঘটে । বোমা ফাটার শব্দ শুনে গ্রামবাসীরা ছুটে আসে । আহত শিশুদের তুলে রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয় । হাসপাতাল সূত্রের খবর, চার শিশুর মধ্য এক জন আশংকাজনক অবস্থায় আছে । বাকি তিন জনেরই পায়ে আঘাত লেগেছে । তাঁদের চিকিৎসার জন্য একটি ডাক্তারের টিম তৈরী করা হয়েছে ।
প্রসঙ্গত, গত বছর 16 ডিসেম্বর মাড়গ্রামে একটি বাড়িতে মজুত থাকা বোমা ফেটে গুরুতর জখম হয়েছিল দুই বালক । ঘটনাটি ঘটে ছিল আজ বীরভূমের মাড়গ্রাম থানার একডালা গ্রামে । তবে আহত বালকের মা জামেরা খাতুনের দাবি করেছিলেন, তাঁর ভাইয়ের বিয়েতে ফাটানোর জন্য বাড়িতে বোমা রাখা ছিল ৷ সেই বোমা ফাটাতে গিয়ে জখম হয়েছে তারা ।
অভিযোগ, পঞ্চায়েত ভোটের (Panchayat Elections 2023) আগে বোমের স্তূপ হয়ে উঠেছে বীরভূম । প্রায় প্রতিদিন বীরভূমের কোথাও না কোথাও উদ্ধার হচ্ছে বোমা । তবুও যেন বোমা উদ্ধারের ধারাবাহিকতা কমছে না । গত এক মাসে কয়েকশো বোমা উদ্ধার হয়েছে বীরভূমে । গত 4 ফেব্রুয়ারি বোমার আঘাতে মৃত্যু হয়েছে মাড়গ্রাম-1 পঞ্চায়েতের প্রধানের ভাই ও তাঁর সঙ্গী । এই ঘটনার দু’দিন পরই দুই ড্রাম বোমা উদ্ধার হয় মাড়গ্রাম থেকে । তারপর রামপুরহাট পাথর শিল্প লাগোয়া বারোমাসিয়া জঙ্গল থেকে দু’টি বালতি ভর্তি বোমা উদ্ধার করে রামপুরহাট থানার পুলিশ । গত পরশু মাড়গ্রাম থানার তপন গ্রাম থেকে দুই ড্রাম বোমা উদ্ধার নিয়ে বিতর্ক শুরু হয় । সিপিএম নেতা ইয়াকুব আলির বাড়িতে বোমা রেখে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে শাসক দলের উপর ।
তারপর 24 ঘণ্টা কাটার আগেই বোমা বিস্ফোরণে আহত হল তিন শিশু । আহত শিশুদের পরিবারের দাবি, প্রতিদিনের মতোই তারা এক সঙ্গে খেলছিল । কে বা কারা, কী কারণে প্লাস্টিক প্যাকেটে ওদের খেলার জায়গায় বোমা রেখে ছিল, তা জানা নেই । ক’টি বোমা প্যাকেটে রাখা ছিল, সেই বিষয়ে কিছু জানেন না তাঁরা । বোমা ফাটার সঙ্গে সঙ্গে মল্লারপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখে সেখানে দু’টি বোমা পড়ে আছে । তারপর এলাকাটি ঘিরে ফেলা হয় ।
আহত শিশুদের দাদু তাজারুল শেখ বলেন, ‘‘গ্রামের পাশেই চাষের কাজের জন্য একটি জলের পম্পা আছে । সেখানেই বোমা রাখা ছিল । খেলতে খেলতে পা দিয়ে দিলে বোমা ফেটে যায় । এখনও বোমা পরে আছে ।" সিপিএম নেতা সঞ্জীব মল্লিক বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী বলছেন বোমা, আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করতে হবে ৷ কিন্তু পুলিশ উদ্ধার করছে না । যার জন্যই এমন ঘটনা ঘটছে । পুলিশের উচিত তৎপরতার সঙ্গে বোমা উদ্ধার করা ।"
আরও পড়ুন: বীরভূমের সদাইপুরে 40টি বোমা উদ্ধার