শান্তিনিকেতন, 2 জুন : উন্নয়নের 11 বছর । দিকে দিকে পোস্টার-বিজ্ঞাপন ৷ আর এদিকে, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরেও আদিবাসী অধ্যুষিত 'মডেল' গ্রামের বাসিন্দাদের মেলেনি বাংলা আবাস যোজনার বাড়ি, পাচ্ছেন না একশো দিনের কাজের টাকা, বিধবা ভাতা ৷ শান্তিনিকেতনের সোনাঝুরি জঙ্গল লাগোয়া বল্লভপুরডাঙা গ্রামে দাঁড়িয়ে মানুষজনের অভাব অভিযোগের কথা শুনেছিলেন খোদ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । গ্রামকে ঢেলে সাজানোর নির্দেশও দিয়েছিলেন তিনি (Deprived model village)। বুধবার আক্ষেপের সঙ্গে সরকারি পরিষেবা থেকে বঞ্চনার কথা জানালেন গ্রামের মানুষজন ।
2020 সালে 29 ডিসেম্বর বীরভূম জেলা সফরে বোলপুরে আসেন আসেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । 30 ডিসেম্বর হেলিপ্যাডে যাওয়ার আগে শান্তিনিকেতনের সোনাঝুরি জঙ্গল লাগোয়া বল্লভপুরডাঙা আদিবাসী অধ্যুষিত গ্রামে ঢুকে পরেন তিনি ৷ গ্রামবাসীদের সঙ্গে কথা বলেন । তাদের অভাব-অভিযোগের কথা শোনেন । এরপর জেলা শাসক-সহ উপস্থিত প্রশাসনিক কর্তাব্যক্তিদের নির্দেশ দেন গ্রামটিকে ঢেলে সাজানোর । এরপরেই রূপপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের অন্তর্গত বল্লভপুরডাঙা আদিবাসী গ্রামটিকে 'মডেল' গ্রাম ঘোষণা করে ঢেলে সাজানো হয় ৷ নির্মাণ করা হয় শৌচালয়, পুকুর ঘাট বাঁধানো, নলকুপ বসানো, রাস্তা সারাই, গৃহ নির্মাণ প্রভৃতি কাজ ।
কিন্তু, গ্রামের মানুষজনের অভিযোগ, মিলছে না একশ দিনের কাজের টাকা । অনেকে বিধবা ভাতা পান না ৷ গ্রামের অনেকেই পাননি বাংলা আবাস যোজনার বাড়ি ৷ মডেল গ্রামে মাটির দেওয়াল, ত্রিপলের চাল বাড়িতে বাস করেন অনেকেই ৷ কারও কারও বাড়ির দেওয়াল ভেঙে পড়ছে, বৃষ্টিতে মাটি গলে যাচ্ছে, তালপাতার চাল ফুটো হয়ে গিয়েছে ৷ 'উন্নয়নের 11 বছর'-এ মডেল গ্রামের দৃশ্যটা এমনই । মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের দেড় বছর কেটে গেলেও আশ্বাস অনুযায়ী মেলেনি সরকারি পরিষেবা বলে আক্ষেপ আদিবাসী মানুষজনের ।
গ্রামবাসীদের মধ্যে জিতেন হাঁসদা, গীতালি হেমব্রম, তুর্কি মুর্মু, হুপনি হাঁসদা বলেন, "মুখ্যমন্ত্রী এসে অনককিছুই বলে গিয়েছিলেন । কই আজও বাড়ি পাইনি ৷ বিধবা ভাতা পাইনি । একশো দিনের কাজের টাকাও ঢুকছে না অ্যাকাউন্টে ৷ আমরা গরীব মানুষ, ঘরটা হলে ভালই হয় ৷"
আরও পড়ুন : খোয়াইয়ে বেআইনি নির্মাণ করা যাবে না, হাইকোর্টের নির্দেশে খুশি শান্তিনিকেতনবাসী
বোলপুরে বিডিও শেখর সাঁই বলেন, "মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর গ্রামের মানুষজনের আবেদন মত যাবতীয় কাজকর্ম করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম । মডেল গ্রাম ঘোষণাও করা হয়েছিল । একশো দিনের কাজের টাকা পুরো রাজ্য জুড়েই বাকি আছে । যাদের তালিকায় নাম ছিল বাড়ি পেয়েছে, বাকিদেরও দেওয়া হবে ৷"