বোলপুর, 4 নভেম্বর: বঙ্কিম-শ্যামাপ্রসাদকে মুছে দেওয়া হচ্ছে কিন্তু তা নিয়ে আন্দোলন নেই, রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে আন্দোলন হচ্ছে । বোলপুরে একটি অনুষ্ঠানে এসে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে শনিবার এমনই বিতর্কিত মন্তব্য করলেন জাতীয় তফশিলি জাতি কমিশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অরুণ হালদার ৷ তাঁর নেতৃত্বাধীন কমিশনেই বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হয়েছে ।
ইউনেসকোর তরফে শান্তিনিকেতনকে বিশ্ব ইতিহ্যের স্বীকৃতি দেওয়ার পর এই সম্মানকে সামনে রেখে বিশ্বভারতীতে একটি ফলক বসায় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ৷ ওই ফলকে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর নাম থাকলেও, ওই ফলকে নাম নেই স্বয়ং কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ৷ এই নিয়েছে শুরু হয়েছে বিতর্ক ৷ ব্রাত্য রবীন্দ্রনাথ প্রসঙ্গে এদিন জাতীয় তফশিলি জাতি কমিশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অরুণ হালদার আরও বলেন, "রবীন্দ্রনাথের নাম না-থাকলে কী এসে যায়, রবীন্দ্রনাথ আমাদের হৃদয়ে আছে।" তৃণমূল এই বিষয়টিকে ইস্যু করে ইচ্ছাকৃতভাবে আন্দোলন করছে বলেও কটাক্ষ করেন তিনি ৷
গত 17 সেপ্টেম্বর বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শান্তিনিকেতন ইউনেসকোর কাছ থেকে ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ তকমা পেয়েছে। সেই সংক্রান্ত 3টি শ্বেত পাথরের ফলক বসানো হয়েছে বিশ্বভারতীতে । তাতে আচার্য হিসাবে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর নাম রয়েছে । ফলক থেকে ব্রাত্য স্বয়ং গুরুদেব। যা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশে 9 দিন ধরে চলছে ধরনা বিক্ষোভ ।
আরও পড়ুন: বিশ্বভারতীর ফলক বিতর্কে দিল্লির কাছে ব্যবস্থা নেওয়ার আরজি মমতার
এদিন বোলপুরে বেসরকারি একটি ইংরাজি মাধ্যম স্কুলের অনুষ্ঠানে যোগ দেন জাতীয় তপশিলি জাতি কমিশনের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান অরুণ হালদার। অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের মুখোমুখি হন তিনি ৷ বিশ্বভারতীতে ফলক বিতর্ক প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন,"রবীন্দ্রনাথকে বাদ দিয়ে কিছু ভাবা যায় না ৷ যারা ভাবে তাদের কোনও অর্থেই সমর্থন করা যায় না ৷ তবে সেটা একটা ফলকের মধ্যে সীমাবদ্ধ করার কোন মানে হয় না । ফলকে কার নাম থাকল, থাকল না-দেখে রবীন্দ্রনাথ মুছে গেল এটা আরেকটা বাতাবরণ তৈরি করার প্রবণতা ।"
তিনি আরও বলেন, "রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে যারা আন্দোলন করছে তাদের নিজস্ব এজেন্ডা, ব্যক্তিস্বার্থ চরিতার্থ করতে করছে । আজকে কলকাতা ইউনিভার্সিটি থেকে বঙ্কিমচন্দ্রের মুর্তি ভেঙে দেওয়া হল, শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের নাম-নিশানা করে মুছে ফেলার চক্রান্ত হচ্ছে । তা নিয়ে আন্দোলন নেই । রবীন্দ্রনাথের নাম চলে গেল সেটা নিয়ে আন্দোলন রাস্তায় হচ্ছে ৷" অর্থাৎ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম ফলকে না থাকা নিয়ে আন্দোলনকে প্রকারান্তরে তৃণমূলের একটি এজেন্ডা বলেই দাবি করেছেন তিনি ৷ যা নিয়ে বিতর্ক তুঙ্গে ৷