রামপুরহাট, 26 মার্চ : সিট-এর কাছ থেকে রামপুরহাট বগটুই গণহত্যার তদন্তভার তুলে নিল সিবিআই ৷ কলকাতা হাইকোর্টের নির্দেশের পর আজ রামপুরহাট থানায় যায় সিবিআইয়ের টিম ৷ কেস ডাইরি নিয়ে আগেই থেকে সিটের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন রামপুরহাট থানায় । সেখানেই কেস ডায়েরি-সহ বিভিন্ন নথিপত্র সিট সিবিআইকে হস্তান্তর করে (CBI reaches Rampurhat Police Station over Bagtui Massacre in Birbhum)।
আজ সকাল 11টা নাগাদ সিবিআই আধিকারিক অখিলেশ সিংয়ের নেতৃত্বে রামপুরহাট থানায় যায় সিবিআই-এর টিম । এরপর সিটের কাছে থেকে কেস ডাইরি ও নথিপত্র নিয়ে পৌঁছে যায় বগটুই গ্রামে । সোনাই শেখের যে বাড়ি থেকে সাতজনের মৃতদেহ উদ্ধার হয় সেখানে তদন্ত শুরু করে তারা ৷ এরপর তাঁরা রামপুরহাট মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে যাবেন ৷ সেখান থেকে ভাদু শেখকে যেখানে খুন করা হয়েছিল, সেই জায়গাতেও তদন্তকারীরা যাবেন বলে জানা গিয়েছে ৷ এই ঘটনায় আনারুল হোসেন সহ মোট 22 জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে ৷ সিবিআই সূত্রে খবর, ধৃতদের নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার আবেদন জানাবে সিবিআই ৷
শুক্রবারই আদালতের নির্দেশে রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়ার ঘটনায় মামলা দায়ের করে সিবিআই ৷ সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, এই ঘটনায় 2টি বাচ্চা-সহ মোট 8 জনের মৃত্যু হয় ৷ আদালত রাজ্য সরকার গঠিত সিট-এর কাছ থেকে সিবিআই-এর হাতে তদন্তভার হস্তান্তরিত করার নির্দেশ দেয় ৷ সেই অনুযায়ী গতকাল রাতে বগটুই পৌঁছয় কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার দল ৷
7 এপ্রিল আগামী শুনানির দিন কলকাতা হাইকোর্টে প্রধানবিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে রিপোর্ট জমা দেবে সিবিআই ৷ ইতিমধ্যে প্রমাণ সংগ্রহ করতে ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে সেন্ট্রাল ফরেনসিক সায়েন্স ল্যাবরেটরি বা সিএফএফএল ৷ এটি সিবিআই-এর একটি সহযোগী সংস্থা ৷ ফরেনসিক দলটি এ নিয়ে বিশেষ কিছু বলতে রাজি হয়নি ৷
অন্যদিকে এই ঘটনায় অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত রামপুরহাট ব্লক-1 তৃণমূল প্রেসিডেন্ট আনারুল হোসেনকে (Rampurhat block-1 president Anarul Hossain) তারাপীঠ থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ ৷ 24 মার্চ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে বগটুই গ্রামে যান এবং নিহতদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন ৷ তাঁদের সরকারি চাকরির প্রতিশ্রুতি ও পরিবারদের বাড়ি তৈরির টাকা দেন তিনি ৷ সেখানে দাঁড়িয়েই তিনি পুলিশকে আনারুলকে গ্রেফতারের নির্দেশ দেন ৷
আরও পড়ুন : Anarul Hossain Arrest : বগটুই কাণ্ডে ধৃত আনারুলকে 14 দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ
গতকাল আনারুল অবশ্য দাবি করেছে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশেই সে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছে ৷ অভিযুক্ত আনারুল বলে, "তৃণমূল প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাকে বলার পরে আমি পুলিশের কাছে ধরা দিয়েছি ৷" শুক্রবার আদালত তাকে 14 দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেয় ৷
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, সোমবার, 21 মার্চ রাতে রামপুরহাটের বড়শালে উপপ্রধান ভাদু শেখকে বোমা মেরে খুন করা হয় । তিনি রামপুরহাট এক নম্বর ব্লকের বড়শাল গ্রাম পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ছিলেন । ওইদিন রাতেই কয়েক ঘণ্টা পরে বগটুই গ্রামের 10-12টি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয় । সরকারি ভাবে ঘটনায় 8 জন মারা গেলেও বেসরকারি মতে এই সংখ্যা অনেক বেশি ৷ 23 মার্চ এই ঘটনায় স্বতঃপ্রণোদিত মামলা হিসেবে গ্রহণ করে কলকাতা হাইকোর্ট । গতকাল সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে আদালত ৷
আরও পড়ুন : Rampurhat Massacre: বগটুই কাণ্ডে সাসপেন্ড করা হল রামপুরহাটের এসডিপিও ও আইসিকে