রামপুরহাট, 17 ডিসেম্বর: বগটুই হত্যাকাণ্ডের ক'দিন পরে তদন্তভার পায় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা সিবিআই ৷ তদন্তকারী সংস্থার আধিকারিকেরা এই দুর্ঘটনায় মূল অভিযুক্ত লালন শেখের বাড়িতে লাগানো সিসিটিভির হার্ড ডিস্ক খুঁজতে যায় ৷ তার বাড়ির দরজা খুলতেই 12 দিন পর বেরিয়ে আসে লালনের পোষ্য কুকুর টপি ৷ সিবিআই বাড়িটি সিল করে দেয় ৷ সেই প্রিয় পোষ্যকে ফিরে পেতে চায় লালনের মেয়ে-স্ত্রী (Lalan Sheikh Wife and daughter want to get back his pet dog) ৷
এবছর 21 মার্চ রামপুরহাট 1 নম্বর ব্লকের বড়শাল পঞ্চায়েতের উপপ্রধান ভাদু শেখ খুন হন ৷ তাঁর ঘনিষ্ঠ ছিলেন লালন শেখ ৷ বগটুই গ্রামে লালনের বাড়ির ঠিক উল্টোদিকে বানিরুল শেখের বাড়ি ৷ ওই দিন সন্ধ্যায় বগটুই মোড়ে ভাদু শেখ খুন হওয়ার পর রাতেই খুনের বদলা নিতে পরপর 8-10টি বাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় (Bagtui Massacre) ৷ ঘটনাস্থলেই মারা যায় এক পরিবারের 7 সদস্য-সহ 9 জন ৷ পরে আরও একজনের মৃত্যু হয় ৷ এই ঘটনার পর প্রায় ন'মাস কেটে গিয়েছে ৷ স্বাভাবিক পথে ফিরছিল বগটুই গ্রাম ৷
ফের সংবাদ শিরোনামে উঠে আসে বগটুইয়ের নাম ৷ গত 4 ডিসেম্বর ঝাড়খণ্ডের পাকুড় থেকে গ্রেফতার হয় মূল অভিযুক্ত লালন শেখ ৷ তারপর সে রামপুরহাটে সিবিআই হেফাজতে একটি অস্থায়ী ক্যাম্পে ছিল ৷ সেখানে 12 ডিসেম্বর তাকে ক্যাম্পের শৌচালয়ে গলায় গামছার ফাঁস লাগানো অবস্থায় পাওয়া যায় ৷ সে আত্মহত্যা করেছে নাকি সিবিআই হেফাজতে তাকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে- এ নিয়ে প্রশ্ন ওঠে ৷
আরও পড়ুন: সিবিআই হেফাজতে মৃত্যু বগটুইকাণ্ডে মূল অভিযুক্ত লালন শেখের, আত্মহত্যা বলে দাবি কেন্দ্রীয় সংস্থার
সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে পঞ্চাশ লক্ষ টাকা ঘুষ ও খুনের অভিযোগ তোলেন লালনের স্ত্রী রেশমা বিবি ৷ আদালতের নির্দেশে ন'মাস পর খুলে দেওয়া হয় লালনের বাড়ি ৷ বাড়িতে ঢুকেই লালনের মেয়ে রুকসারা খাতুন বলেন, "আমরা সবেমাত্র চারদিন নিজেদের বাড়িতে ফিরেছি ৷ ঘরে এসে বাবা নেই ৷ টপি নেই ৷ কিছু ভালো লাগছে না ৷" লালনের স্ত্রী রেশমাবিবি বলেন, "আমরা টপিকে পুলিশের মাধ্যমে ফেরত চাইব ৷"
লালনের প্রিয় কুকুরটিকে এবার ঘরে আনতে চায় লালন শেখের মেয়ে, স্ত্রী ৷ এদিকে সরকারি বিধি মেনে সিউড়ির ভট্টাচার্য্য পাড়ায় রয়েছে কুকুরটি ৷ রেশমাবিবি বলেন, "লালন ক্রশবিড কুকুরটিকে দু'বছর আগে বাড়িতে এনেছিলেন ৷ নাম রেখেছিলেন টপি ৷ সে ছিল আমাদের নয়নের মণি ৷ বাড়িতে সারাদিন ছাড়া থাকত ৷ কুকুরটিকে ঘটনাচক্রে ছেড়ে দিয়ে ঘর বন্ধ করে আমাদের পালিয়ে যেতে হয়েছিল ৷ তারপরে আর কী কী হয়েছে, জানি না ৷ আমরা রামপুরহাট থানার মাধ্যমে আমাদের প্রিয় টপিকে ফিরে পেতে চাই ৷" অন্যদিকে সিউড়িতে অলোক ভট্টাচার্যের বাড়িতে গত ন'মাস ধরে রয়েছে টপি ৷ তিনি জানান, আইনের দাবিতে কুকুরটিকে ছেড়ে দিতে হবে ৷ কিন্তু আমাদের সেই জিমি, আদরের গুলুকে ছেড়ে থাকা বেশ কষ্টের হবে ।" লালনের টপি এখন সিউড়িতে জিমি হিসাবে বড় হচ্ছে ।
আরও পড়ুন: 'আমার স্বামীর দেহের উপর অনেক অত্য়াচার হয়েছে, আর নয় !' বললেন লালনের স্ত্রী