বোলপুর, 26 সেপ্টেম্বর: বিশ্বভারতীকে রাস্তা না দেওয়ার আর্জি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিলেন শান্তিনিকেতনের আশ্রমিকেরা ৷ তাঁদের অভিযোগ, গুরুদেব শান্তিনিকেতনকে মুক্তাকাশে দেখতে চেয়েছিলেন বরাবরই । কিন্তু, উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী চতুর্দিকে প্রাচীর দিয়ে বিশ্বভারতীকে রুদ্ধ করে দিচ্ছেন । এমনকি এই রাস্তা যখন বিশ্বভারতীর কাছে ছিল, তখন আশ্রমিকদেরও প্রায় সময় যাতায়াত বন্ধ করে দিয়েছিল । উল্লেখ্য, উপাচার্য এই রাস্তা চেয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে চিঠি দিয়েছেন । তারপরেই পালটা চিঠি দিলেন আশ্রমিকেরা ।
সম্প্রতি ইউনেস্কো শান্তিনিকেতন আশ্রমকে 'ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ'-এর তকমা দিয়েছে । তাই উপাসনাগৃহের সামনে থেকে কালিসায়র পর্যন্ত প্রায় তিন কিলোমিটার রাস্তা চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী । কারণ এই রাস্তার দুই দিকে একাধিক ঐতিহ্যবাহী ভবন, স্থাপত্য ও ভাস্কর্য রয়েছে ৷ ভারী যান চলাচলের ফলে কম্পন থেকে সেগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে ৷ তাই রাস্তাটি যান নিয়ন্ত্রণের জন্য বিশ্বভারতীকে দেওয়ার আর্জি জানান উপাচার্য ।
এ দিন পালটা চিঠি দিয়ে রাস্তাটি বিশ্বভারতীকে না-দেওয়ার জন্য আর্জি জানিয়ে চিঠি দিলেন শান্তিনিকেতনের আশ্রমিকেরা থেকে শুরু করে ব্যবসায়ী ও সাধারণ মানুষজন ৷ চিঠিতে স্বাক্ষর করেছেন ঠাকুর পরিবারের সদস্য-সহ বিশ্বভারতীর কয়েকজন অধ্যাপকও ৷ রাস্তা বিশ্বভারতীকে না দেওয়ার আর্জি জানানোর কারণ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে, বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর শান্তিনিকেতনকে খোলা আকাশের নীচে উন্মুক্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করে গিয়েছেন । কিন্তু, বিশ্বভারতীর বর্তমান উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী পৌষমেলার মাঠ থেকে আশ্রমের দিকে দিকে প্রাচীর দিয়ে ঘিরে দিয়েছেন ।
আরও পড়ুন: উপাসনা গৃহের সামনের রাস্তা চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি বিশ্বভারতীর উপাচার্যের
এছাড়া উপাসনা গৃহের সামনের রাস্তাটি যখন বিশ্বভারতীর কাছে ছিল, তখন প্রায়শই আশ্রমিক ও সাধারণ মানুষকে যাতায়াত করতে বাধা দেওয়া হত ৷ বিশ্বভারতীর নিরাপত্তারক্ষীরা প্রায় সময় রাস্তা আটকে রাখতেন ৷ পুনরায় রাস্তাটি পেয়ে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ এমন কাজ করতে পারে এই আশংকা করা হচ্ছে ।
প্রসঙ্গত, যাতায়াতের রাস্তা বন্ধ করায় আশ্রমিকরা মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন । সেই মতো 2020 সালের 28 ডিসেম্বর বীরভূম জেলা সফরে বোলপুরে গিয়ে রাস্তাটি নিয়ে নিয়েছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় । তবে যাতে এই রাস্তা দিয়ে ভারী যান চলাচল না করে, তার জন্য হাইট বার লাগিয়ে দেওয়া হয়েছিল ৷
আশ্রমিক সুবীর বন্দ্যোপাধ্যায় ও কবিগুরু হস্তশিল্প মার্কেট ব্যবসায়ী আমিনুল হুদা বলেন, "বিশ্বভারতীকে এই রাস্তা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিয়েছিলেন ৷ কিন্তু, এই উপাচার্য এসেই সেই রাস্তা আশ্রমিকদের জন্য বন্ধ করে দিয়েছিলেন ৷ তাই মুখ্যমন্ত্রী রাস্তা ফিরিয়ে নিয়েছিলেন । আবার উপাচার্য রাস্তা চাইছেন ৷ আমরা মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আর্জি জানিয়েছি রাস্তা না-দেওয়ার জন্য । রাস্তা পেয়ে আবারও একই কাজ করবেন উপাচার্য । আর এই রাস্তা দিয়ে ভারী যান চলাচল করে না ৷ হাইট বার আগে থেকেই লাগানো আছে ।"