রামপুরহাট, 5 সেপ্টেম্বর : দীর্ঘ 34 বছর ধরে ছাত্র পড়িয়েছেন । অবসর গ্রহণ করেছেন মাস কয়েক আগে । যদিও তা খাতা-কলমেই । ছাত্রদের অনুরোধে ফের ফিরতে হয়েছে স্কুলে । প্রিয় মাস্টারমশাইয়ের টানে গরমের ছুটিতেও স্কুলে এসেছে পড়ুয়ারা । স্কুল খুলে ক্লাসের ব্যবস্থা করেছে কর্তৃপক্ষও । রাষ্ট্রপতি পুরস্কারপ্রাপ্ত ডঃ নিখিল কুমার সিনহা পড়িয়ে চলেছেন বিনা পারিশ্রমিকে । পড়াতে যে তাঁর ভালো লাগে ।
বাবা মুদিখানা দোকানে কাজ করতেন । প্রথমে দুনিগ্রাম প্রাথমিক বিদ্যালয় । তারপর রামপুরহাট উচ্চ বিদ্যালয় । বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিগ্রি অর্জনের পর বোটানিতে Ph.D করেন তিনি । কর্মজীবন শুরু হয় নিজের স্কুল রামপুরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ে । সেখানে ছাত্র মানুষ করে কাটিয়ে দিয়েছেন 34টা বছর । পেয়েছেন সেরা সম্মান । রাষ্ট্রপতি পুরস্কারের পালক জুড়েছে তাঁর শিক্ষকতার মুকুটে । চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে অবসর নিয়েছেন । ভেবেছিলেন, এইবার বিরাম । কিন্তু, কোথায় কী । ছাত্ররা যে সরকারি নিয়মের তোয়াক্কাই করে না । তাই ওদের অনুরোধেই ফের ফিরেছেন স্কুলে ।

এই বয়সে এত অনুপ্রেরণা পান কোথা থেকে ? উত্তরে এক গাল হেসে নিখিলবাবু বলেন, "আসলে বাবা খুব কর্মঠ ছিলেন । কাজ করতে ভালোবাসতেন । আর আমার মাস্টারমশাই, যাঁর সাহায্যে আমি Ph.D করেছি, তিনিও খুব পরিশ্রমী ছিলেন । ওঁরাই আমার অনুপ্রেরণা ।"
নিখিলবাবুর প্রিয় বিষয় বোটানি । আর প্রভাব পড়েছে তাঁর বাড়িতে । লুপ্তপ্রায় বহুগাছ লাগিয়েছেন নিজ উদ্যোগে । বাড়িতে যেখানে ফাঁকা জায়গা দেখেন সেখানে গাছ পুঁতে দেন । বলেন, "প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় গাছ তো লাগাতেই হবে ।"
রামপুরহাট উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মহম্মদ নুরুজ্জামান বলেন, "ওঁর প্রতি গোটা স্কুল কৃতজ্ঞ । ধন্যবাদ দিয়ে ছোটো করব না ।"
এই সংক্রান্ত খবর : অবসরের পরও বিনা পারিশ্রমিকে পড়িয়ে চলেছেন মগড়ার ধ্রুব স্যার
স্কুলের পরিচালন কমিটির সম্পাদক এরশাদ হোসেন বলেন, "নিখিলবাবুর প্রতি আমরা আজীবন ঋণী । উনি আমাদের স্কুলের অহংকার, আমাদের গর্ব ।"