সিউড়ি, 3 জুন: রাজ্যের কাজের সুযোগ সুবিধা নেই ৷ তাই রুটিরুজির টানে ভিনরাজ্যে পাড়ি দিতে হয় এরাজ্যের শ্রমিকদের ৷ পরিবারের সদস্যদের একটু ভালো রাখতে চেন্নাই পাড়ি দিয়েছিলেন বীরভূমের 8 পরিযায়ী শ্রমিক ৷ কে জানত, করমণ্ডল এক্সপ্রেসের টিকিটে 'যাত্রা শুভ হোক' লেখা থাকলেও, এদিনের যাত্রা অভিশপ্ত হবে ৷ শুক্রবার চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রেস দুর্ঘটনার কবলে পড়েন 8 শ্রমিক ৷ যাদের মধ্যে 3 জন এখনও নিখোঁজ ৷ গুরুতর আহত 2 শ্রমিক বালাসোর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৷ তবে অপর 3 শ্রমিক ফিরে এসেছেন নিজের গ্রামে ৷
সূত্রে খবর, বীরভূমের সিউড়ির 1 নম্বর ব্লকের নগরি ঝোরো গ্রাম থেকে চেন্নাইয়ে রওনা দিয়েছিলেন 5 শ্রমিক। তাদের মধ্যে লাবলু মাল নামে এক শ্রমিকের খোঁজ মিলছে না দুর্ঘটনার পর থেকে। মহিম ডোম নামে এক শ্রমিক গুরুতর জখম অবস্থায় বালাসের হাসপাতালে চিকিৎসাধীন । কোনও ক্রমে প্রাণে বেঁচেছেন শ্যামসুন্দর ডোম, সুজাতা ডোম ও অনিল ডোম । এমনটাই জানা গিয়েছে তাদের পরিবার সূত্রে ৷
এছাড়াও সাঁইথিয়া থানার কোপাইয়ের নওয়ালডাঙা গ্রাম থেকেও তিন জন শ্রমিক এই ট্রেনেই চেন্নাই যাচ্ছিলেন ৷ তাদের মধ্যে মৃত্যুঞ্জয় কোড়া ও তুফান কোড়া নামে দুই শ্রমিকের হদিশ মিলছে না দুর্ঘটনার পর থেকেই ৷ তাদের সঙ্গে থাকা আরেক শ্রমিক ধনঞ্জয় কোড়া গুরুতর জখম অবস্থায় বালাসোর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৷
আরও পড়ুন : হাজারেরও বেশি যাত্রী নিয়ে বালাসোর থেকে হাওড়ায় আসছে দু'টি ট্রেন
এদিকে নিঁখোজ শ্রমিকদের ফোন সুইটচ অফ পেয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েছেন পরিবারের লোকজন ৷ নিখোঁজদের পরিজনরা জানিয়েছেন, ট্রেন দূর্ঘটনার পর থেকে ফোনে তাঁরা ওই শ্রমিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না ৷ ফোন বন্ধ হয়ে গিয়েছে । তবে এখনও পর্যন্ত বীরভূম জেলায় কতজন ওই দূর্ঘটনার কবলে বা হতাহত হয়েছেন সেই পূর্ণাঙ্গ তথ্য প্রকাশ করতে পারেনি জেলা প্রশাসন ৷
আরও পড়ুন : জানালা ভেঙে ট্রেনের ছাদে উঠে প্রাণে বাঁচলেন সুন্দরবনের 12 জন বাসিন্দা
উল্লেখ্য, শুক্রবার সন্ধ্যায় একই লাইনে চলে আসায় মালগাড়ির সঙ্গে শালিমার-চেন্নাই করমণ্ডল এক্সপ্রেসের ধাক্কা লাগে ৷ যার জেরে একাধিক বগি লাইনচ্যুত হয় চেন্নাইগামী করমণ্ডল এক্সপ্রসের ৷ ওড়িশা প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, এখনও পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা 288 জন । আহত 900 জনের বেশি । হতাহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে এমনই আশঙ্কা ৷ জোর কদমে চলছে উদ্ধার কাজ ৷ বহু মানুষের এখনও খোঁজ মিলছে না ৷ কত জনের মোবাইল হারিয়ে যাওয়ায় যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ৷ আশঙ্কায় দিন গুনছেন পরিবারের লোকজন ৷