তারাপীঠ, 9 ফেব্রুয়ারি: বছর দু'য়েক ধরে ভালোবাসতেন একে অপরকে । নিজেরাই বিয়ের সিদ্ধান্তও নিয়ে ফেলেছিলেন । কিন্তু আর্থিক অবস্থা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে । সেই তাঁদেরই ইচ্ছে পূরণ করল জয় মা তারাশ্রীতা ভক্তবৃন্দ । শনিবার রাত্রে বিভিন্ন সম্প্রদায়ের তিন জোড়া যুবক-যুবতির বিয়ে হয় তারাপীঠে (Mass Marriage at Tarapith)। করোনার কারণে বছর তিনেক বন্ধ ছিল গণবিবাহের আসর । করোনা কমতেই এবার তারাপীঠের তিন জোড়া ছেলেমেয়ের বিয়ে দিল জয় মা তারাশ্রীতা ভক্তবৃন্দ ।
মুসলিম দম্পতি সাইনুল শা ও কমলা খাতুন । দু'জনেরই বাড়ি তারাপীঠ থানার ফুলিডাঙা গ্রামে । দীর্ঘদিন থেকে তাঁরা একে অপরকে ভালবাসত । দিন এনে দিন খাওয়া পরিবারে বিয়ে তাঁদের কাছে ছিল আকাশ কুসুম বিষয় । বিষয়টি জানতে পারেন তারাশ্রীতা ভক্তবৃন্দের সদস্যরা । তাঁরাই দুই পরিবারের সঙ্গে কথা বলে বিয়ের ব্যবস্থা করেন । একই মঞ্চে বিয়ে দেওয়া হল কেরাব হেমরম ও মুংলি হাঁসদা এবং সুমন্ত মাল ও সুস্মিতা মালের । তিনটি ভিন সম্প্রদায়ের বিয়ে দেওয়া হল তাদের রীতি মেনেই ।
শুধু বিয়ে নয়, তাঁদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে সোনার কানের দুল, সোনার আংটি, হিরের নোজ পিন, পায়ের আংটি, তোড়া, খাট, বিছানা, বেনারসি থেকে গয়না । বিয়ে হবে আর খাওয়াদাওয়া থাকবে না সেটা তো হয় না । তাই বর ও কনেপক্ষের জন্য ছিল বিরিয়ানি, চিকেন চাপ, খেজুর গুড়ের মিষ্টি, আইসক্রিম ৷ তারাশ্রীতা ভক্তবৃন্দের কর্ণধার কল্লোল সাহা বলেন, "এটা আমাদের 20-তম গণবিবাহ । তারাপীঠ থেকেই গণবিবাহ শুরু করেছিলাম । পরবর্তীকালে দিঘা, সুন্দরবন এবং উত্তরবঙ্গে গণবিবাহের ব্যবস্থা করি । এখনও পর্যন্ত 500 ছেলেমেয়ের বিয়ে দিতে পেরেছি । শীঘ্রই পুরীর সুমদ্রতটে বিয়ের ব্যবস্থা করব ।"
সংস্থার সহ-সম্পাদক বাপি সাহা বলেন, "বহু মানুষ অর্থের অভাবে ছেলেমেয়ের বিয়ে দিতে পারে না । আমরা তাদের পাশে দাঁড়িয়ে বিয়ের ব্যবস্থা করলাম । মানুষ প্রচুর অর্থ উপার্জন করে । কিন্তু এই সমস্ত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে দুঃস্থ মেয়েদের বিয়ে দেওয়ার একটা আলাদা আনন্দ ।"
আরও পড়ুন : গণবিবাহের আয়োজনে চোখ ধাঁধানো জৌলুস, হাজির মন্ত্রী থেকে আমলা