বাঁকুড়া, 17 জুন : আধুনিক সভ্যতার প্লাস্টিক সামগ্রীর দাপটে বাংলা হারাতে বসেছে বাঁশ ও বেত শিল্পের নান্দনিক ব্যবহার । বাঁশ এবং বেতের তৈরি বিভিন্ন পণ্যের চাহিদা কমে যাওয়ায় ভাল নেই এই শিল্পের সঙ্গে জড়িত কারিগররা (Traditional bamboo industry)। তবুও বাপ-ঠাকুরদার এই পেশাকে এখনও জীবিকার প্রধান বাহক হিসাবে আঁকড়ে রেখেছে বাঁকুড়ার গঙ্গাজল ঘাটির রাজামেলা গ্রামের প্রায় 80টি পরিবার ।
বর্তমানে প্রযুক্তির যুগে বাঁশ ও বেত শিল্পের তৈরি মনমুগ্ধ বিভিন্ন জিনিসকে হার মানিয়ে জায়গা করে নিয়েছে স্বল্প দামের প্লাস্টিক ও স্টিলের তৈরি পণ্য । তাই মনমুগ্ধ করা সেইসব সামগ্রা এখন হারিয়ে যাওয়ার পথে । কদর না থাকায় গ্রামাঞ্চল থেকে হারিয়ে যাচ্ছে ঐতিহ্যবাহী বাঁশের তৈরি বিভিন্ন নিত্য প্রয়োজনীয় আকর্ষণীয় আসবাবপত্র ।
অভাবের তাড়নায় এই শিল্পের কারিগররা বংশ পরম্পরায় বাপ-ঠাকুরদার পেশা ছেড়ে অন্য পেশার দিকে ছুটছে । শত অভাব অনটনের মাঝেও জেলার গঙ্গাজল ঘাটির রাজামেলায় হাতে গোনা কয়েকটি পরিবার আজও পৈতৃক এই পেশাটি ধরে রেখেছেন । যেখানে একযুগ আগেও এই এলাকায় একাধিক পরিবার এই পেশার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল । সহজলভ্য-আর্কষণীয় বিভিন্ন প্লাস্টিক পণ্য ও অন্য দ্রব্য মূল্যের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় টিকতে না পারায় এই শিল্পের অনেক কারিগররা তাদের বাপ-ঠাকুরদার পেশা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন ।
আরও পড়ুন : প্লাস্টিক ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা, না-মানলে জরিমানা
গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী এসব বাঁশ শিল্পের কারিগররা তাদের পূর্ব পুরুষের এই পেশা আকঁড়ে ধরে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করেও হিমশিম খাচ্ছেন । দিন দিন বিভিন্ন জিনিসপত্রের মূল্য যে ভাবে বাড়ছে তার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে না এই শিল্পের তৈরি বিভিন্ন পণ্যের মূল্য । যার কারণে কারিগররা জীবন সংসারে টিকে থাকতে হিমশিম খাচ্ছেন । মূলত সরকারি উদাসীনতার অভাবেই এলকার বাঁশ-বেতের ওই কুটিরশিল্প মুখ থুবড়ে পড়েছে বলে শিল্পীদের অভিযোগ । বছরের পর বছর হন্যে হয়ে ঘুরেও ঋণের সংস্থান না-হওয়ায় কত দিন আর ওই পেশায় টিঁকে থাকতে পারবেন, তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন তাঁরা ।