ETV Bharat / state

Bishnupur: এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে পুরনো সঙ্গীত মহাবিদ্যালয় আজও মেলেনি সরকারি স্বীকৃতি - এশিয়ার সবচেয়ে প্রাচীন সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়

এশিয়ার সবচেয়ে প্রাচীন সঙ্গীত মহাবিদ্যালয় হলেও এখনও মেলেনি সরকারি স্বীকৃতি ৷ 136 বছরের পুরনো মিউজিক কলেজ লড়াই চালাচ্ছে তার অস্বিস্ত টিকিয়ে রাখার ৷ বিষ্ণুপুরের লাল মাটি, টেরাকোটার মন্দির, দলমাদল কামান আর মল্লরাজাদের বৃহৎ সাম্রাজ্যের ধ্বংসাবশেষের মাঝে উঁকি দিচ্ছে ঐতিহ্যের এই সঙ্গীত কলেজ তথা রামশরণ সংগীত মহাবিদ্যালয় ৷

Bishnupur
এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে পুরনো সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়
author img

By

Published : Sep 16, 2021, 3:38 PM IST

Updated : Sep 16, 2021, 5:37 PM IST

বাঁকুড়া, 16 সেপ্টেম্বর: মল্লগড় বিষ্ণুপুরের ইতিহাস কথিত আছে বহু উপাখ্যানে ৷ কিন্তু কিছু ইতিহাস হয়তো আজও লুকিয়ে আছে মানুষের দৃষ্টির অগোচরে ৷ যেখানে বিষ্ণুপুরের লাল মাটি, টেরাকোটার মন্দির, দলমাদল কামান আর মল্লরাজাদের বৃহৎ সাম্রাজ্যের ধ্বংসাবশেষের কথাই মানুষজন বেশি জানেন ৷ কিন্তু এখানও লুকিয়ে রয়েছে এক সৃষ্টির উৎস ৷ সুর সৃষ্টির প্রাণকেন্দ্র রামশরণ সংগীত মহাবিদ্যালয় ৷ মহারাজাদের বৃহৎ ধ্বংসাবশেষের মধ্যে সুর-সৃষ্টির উৎস হিসেবে নিজের অস্বিস্ত টিকিয় রাখার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে এই সংগীত মহাবিদ্যালয়।

শুধুমাত্র ভারতবর্ষে নয়, এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে পুরনো সঙ্গীত মহাবিদ্যালয় বলে গণ্য করা হয় বিষ্ণুপুরের এই সঙ্গীত চর্চার প্রাচীন কেন্দ্রেকে ৷ ১৮৮৫ সালে তৎকালীন মল্লরাজা রামকৃষ্ণ সিংহদেবের অনুপ্রেরণায় কিছু সাংস্কৃতিক সম্পন্ন মানুষের প্রচেষ্টাই গড়ে ওঠেছিল এই প্রতিষ্ঠান ৷ প্রধান অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেছিলেন অনন্তলাল বন্দোপাধ্যায় ৷ তার পর শুরু হয় দীর্ঘ পথ চলা। এই প্রতিষ্ঠানে বিষ্ণুপুর ঘরানার ধ্রুপদের সঙ্গে সঙ্গে চর্চিত হত বাংলা রাগ-সংগীতের নানা দিক। অবশেষে ১৯৪৫ সালে এই প্রতিষ্ঠান একটি মহাবিদ্যালয়ের রূপ ধারণ করে ৷ এই মহাবিদ্যালয় থেকে সঙ্গীত বিভাগে স্নাতক হয়েছেন বহু মানুষ ৷

এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে পুরনো সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়
এই মহাবিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় অধ্যক্ষ থেকে শুরু করে অধ্যাপকরা বিষ্ণুপুর পৌরসভা কর্তৃক যৎসামান্য ভাতা নিয়ে কাজ করে চলেছেন ৷ অতিমারি মধ্যে অন্য সমস্ত প্রতিষ্ঠানের মতোই এই মিউজিক মহাবিদ্যালয়ও বন্ধ। কিন্তু শিল্পীদের শিল্প সৃষ্টি থেমে নেই চার দেওয়ালের মধ্যে ৷ কিন্তু সমস্যা একটাই, এর অনেক পরে সঙ্গীত মহাবিদ্যালয় তৈরি হয়ে সরকারি স্বীকৃতি মিলে গিয়েছে কবে ৷ কিন্তু প্রাচীন এই ঐতিহ্যবাহী মহাবিদ্যালয় ভাগ্যে ছিঁকে ছিড়েনি ৷ রামশরণ সংগীত মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ তথা বিষ্ণুপুর ঘরানার একজন প্রবাদপ্রতীম সংগীত শিল্পী পন্ডিত সুজিত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "এই মহাবিদ্যালয় সরকারিকরকণ না-হলে আমরা কীভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের ডিগ্রি প্রদান করব ? সঙ্গীত শিক্ষার ডিগ্রি ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে অর্থকরী না-হয়ে উঠলে কী লাভ ? পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে আমার সবিনয়ে আবেদন, এই মহাবিদ্যালয় দ্রুত সরকারিকরণ হোক ৷"

আরও পড়ুন: মল্লগড়ের লালবাঁধ আজও ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে

একই সুর বিষ্ণুপুর পৌরসভার সহ-পৌরপ্রশাসক গৌতম গোস্বামীর গলাতেও ৷ তিনি বলেন, " পৌরসভার আয় থেকে যত সামান্য ভাতা আমরা প্রদান করি অধ্যাপকদের ৷ বিষ্ণুপুর ঘরানার এত প্রাচীন একটা মহাবিদ্যালয় যাতে সরকার অধিগ্রহণ করে তার জন্য আমরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় এবং সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন করব ৷"

সারা বিষ্ণুপুরবাসী-সহ জেলাবাসীর কাছে এই মহাবিদ্যালয় একটা আবেগ ৷ কিন্তু পুরোনো থাম, শেওলা ধরা দেওয়াল বিশিষ্ট এশিয়া মহাদেশের সবয়েচে পুরনো সংগীত মহাবিদ্যালয় সরকারের দৃষ্টি গোচরে আসুক ৷ তাহলে সঙ্গীত চর্চার এই আদি কেন্দ্র প্রাণ ফিরে পাবে ৷ এই আশাতেই বুক বাঁধছেন জেলার সঙ্গীতপ্রেমী মানুষ।

বাঁকুড়া, 16 সেপ্টেম্বর: মল্লগড় বিষ্ণুপুরের ইতিহাস কথিত আছে বহু উপাখ্যানে ৷ কিন্তু কিছু ইতিহাস হয়তো আজও লুকিয়ে আছে মানুষের দৃষ্টির অগোচরে ৷ যেখানে বিষ্ণুপুরের লাল মাটি, টেরাকোটার মন্দির, দলমাদল কামান আর মল্লরাজাদের বৃহৎ সাম্রাজ্যের ধ্বংসাবশেষের কথাই মানুষজন বেশি জানেন ৷ কিন্তু এখানও লুকিয়ে রয়েছে এক সৃষ্টির উৎস ৷ সুর সৃষ্টির প্রাণকেন্দ্র রামশরণ সংগীত মহাবিদ্যালয় ৷ মহারাজাদের বৃহৎ ধ্বংসাবশেষের মধ্যে সুর-সৃষ্টির উৎস হিসেবে নিজের অস্বিস্ত টিকিয় রাখার লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে এই সংগীত মহাবিদ্যালয়।

শুধুমাত্র ভারতবর্ষে নয়, এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে পুরনো সঙ্গীত মহাবিদ্যালয় বলে গণ্য করা হয় বিষ্ণুপুরের এই সঙ্গীত চর্চার প্রাচীন কেন্দ্রেকে ৷ ১৮৮৫ সালে তৎকালীন মল্লরাজা রামকৃষ্ণ সিংহদেবের অনুপ্রেরণায় কিছু সাংস্কৃতিক সম্পন্ন মানুষের প্রচেষ্টাই গড়ে ওঠেছিল এই প্রতিষ্ঠান ৷ প্রধান অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেছিলেন অনন্তলাল বন্দোপাধ্যায় ৷ তার পর শুরু হয় দীর্ঘ পথ চলা। এই প্রতিষ্ঠানে বিষ্ণুপুর ঘরানার ধ্রুপদের সঙ্গে সঙ্গে চর্চিত হত বাংলা রাগ-সংগীতের নানা দিক। অবশেষে ১৯৪৫ সালে এই প্রতিষ্ঠান একটি মহাবিদ্যালয়ের রূপ ধারণ করে ৷ এই মহাবিদ্যালয় থেকে সঙ্গীত বিভাগে স্নাতক হয়েছেন বহু মানুষ ৷

এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে পুরনো সঙ্গীত মহাবিদ্যালয়
এই মহাবিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় অধ্যক্ষ থেকে শুরু করে অধ্যাপকরা বিষ্ণুপুর পৌরসভা কর্তৃক যৎসামান্য ভাতা নিয়ে কাজ করে চলেছেন ৷ অতিমারি মধ্যে অন্য সমস্ত প্রতিষ্ঠানের মতোই এই মিউজিক মহাবিদ্যালয়ও বন্ধ। কিন্তু শিল্পীদের শিল্প সৃষ্টি থেমে নেই চার দেওয়ালের মধ্যে ৷ কিন্তু সমস্যা একটাই, এর অনেক পরে সঙ্গীত মহাবিদ্যালয় তৈরি হয়ে সরকারি স্বীকৃতি মিলে গিয়েছে কবে ৷ কিন্তু প্রাচীন এই ঐতিহ্যবাহী মহাবিদ্যালয় ভাগ্যে ছিঁকে ছিড়েনি ৷ রামশরণ সংগীত মহাবিদ্যালয়ের অধ্যক্ষ তথা বিষ্ণুপুর ঘরানার একজন প্রবাদপ্রতীম সংগীত শিল্পী পন্ডিত সুজিত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "এই মহাবিদ্যালয় সরকারিকরকণ না-হলে আমরা কীভাবে ছাত্র-ছাত্রীদের ডিগ্রি প্রদান করব ? সঙ্গীত শিক্ষার ডিগ্রি ছাত্র-ছাত্রীদের কাছে অর্থকরী না-হয়ে উঠলে কী লাভ ? পশ্চিমবঙ্গ সরকারের কাছে আমার সবিনয়ে আবেদন, এই মহাবিদ্যালয় দ্রুত সরকারিকরণ হোক ৷"

আরও পড়ুন: মল্লগড়ের লালবাঁধ আজও ইতিহাসের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে

একই সুর বিষ্ণুপুর পৌরসভার সহ-পৌরপ্রশাসক গৌতম গোস্বামীর গলাতেও ৷ তিনি বলেন, " পৌরসভার আয় থেকে যত সামান্য ভাতা আমরা প্রদান করি অধ্যাপকদের ৷ বিষ্ণুপুর ঘরানার এত প্রাচীন একটা মহাবিদ্যালয় যাতে সরকার অধিগ্রহণ করে তার জন্য আমরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় এবং সংশ্লিষ্ট দফতরে আবেদন করব ৷"

সারা বিষ্ণুপুরবাসী-সহ জেলাবাসীর কাছে এই মহাবিদ্যালয় একটা আবেগ ৷ কিন্তু পুরোনো থাম, শেওলা ধরা দেওয়াল বিশিষ্ট এশিয়া মহাদেশের সবয়েচে পুরনো সংগীত মহাবিদ্যালয় সরকারের দৃষ্টি গোচরে আসুক ৷ তাহলে সঙ্গীত চর্চার এই আদি কেন্দ্র প্রাণ ফিরে পাবে ৷ এই আশাতেই বুক বাঁধছেন জেলার সঙ্গীতপ্রেমী মানুষ।

Last Updated : Sep 16, 2021, 5:37 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.