বাঁকুড়া, 1 ডিসেম্বর : উচ্চশিক্ষিত হয়েও চাকরি নেই ৷ দু'টো বিষয়ে এমএ (Double MA), বিএড করা বাঁকুড়ার দেবনাথ বাগদি একজন সাধারণ কৃষক ৷ চাষবাস করে দিন গুজরান না-হওয়ায়, তাঁর পাশে দাঁড়িয়েছে তাঁর বড় মেয়ে ৷ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী মেয়েটি সার্কাসে কাজ করে অর্থ উপার্জন করছে ৷
বাঁকুড়া (Bankura Farmer) জেলার পাত্রসায়র ব্লকের বামিরা গ্রাম ৷ সেখানেই বাস দেবনাথ বাগদী ও তাঁর পরিবারের । দুই মেয়ে এবং স্ত্রীকে নিয়ে সংসার । জোড়া বিষয়ে সেরেছেন স্নাতকোত্তর ডিগ্রি (Double MA)৷ সঙ্গে পূর্ণ করেছেন শিক্ষক প্রশিক্ষণের বিএড ডিগ্রি (BEd) ৷ তবুও ভাগ্যের নিষ্ঠুর পরিহাসে আজ দেবনাথ বাগদী এক সাধারণ গ্রামীণ কৃষক । তবে চাষবাস করেও সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন ৷ নুন আনতে পান্তা ফুরোচ্ছে ৷
সংসার চালানোর মূল উৎস কৃষিকাজ ৷ এ বছর ধানের ফলন ভাল হলেও শোষক পোকার আক্রমণে নষ্ট হয়ে গিয়েছে সব ফসল ৷ যার জেরে চরম সমস্যায় পড়েছে গোটা পরিবার । দেবনাথবাবুর (Bankura news) দুই মেয়ে সায়ন্তী ও বৃষ্টি ৷ বড় মেয়ে সায়ন্তী দশম শ্রেণিতে পড়ে ৷ বাবার আর্থিক অনটন দূর করার জন্য সে গান-বাজনা এবং পড়াশোনার পাশাপাশি একটি সার্কাস সংস্থায় কাজ করার জীবিকাকে বেছে নিয়েছে ।
আরও পড়ুন: Sovan Baisakhi : সিঁদুর খেলাটা ছেলেখেলা ছিল না, বৈশাখীর মেয়ে আমারও সন্তান : শোভন
দেবনাথবাবুর বড় মেয়ে সায়ন্তী জানালেন, "ছোট থেকে দেখে আসছি বাবার সংগ্রামকে, অনেক দূর পড়াশোনা করেও ফল কিছু মেলেনি ৷ তাই বাবাকে আর্থিক ভাবে সাহায্য করার জন্য সার্কাসের এই কাজকে বেছে নিয়েছি ৷" দেবনাথবাবুর কথায়, "আমার দুই কন্যা সন্তানের মধ্যে আমার বড় কন্যা ছেলের ভূমিকা পালন করে আমায় অনেকটাই সাহায্য করছে ৷ এত পড়াশোনা করলেও কোনও চাকরি পাইনি ৷"
কোনও রকমে পেট চললেও বেকারত্বের জ্বালা তাড়িয়ে বেড়ায় গোটা পরিবারকে ৷ শিক্ষার আলো তাঁর মেয়েদের অন্তত জীবনে প্রতিষ্ঠিত করুক, এটাই প্রার্থনা দেবনাথ বাগদীর ৷