ETV Bharat / state

বড়জোড়ায় সমবায় সমিতিতে দেড় কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগ, গ্রেপ্তার 1 - সমবায় সমিতিতে আর্থিক তছরুপ

সদস্যদের অভিযোগের ভিত্তিতে থানায় ডেপুটেশন দিয়েছিলেন বিধায়ক । তারপর তদন্তে সামনে আসে আর্থিক তছরুপের বিষয়টি । তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রায় দেড় কোটি টাকার হিসেবে গরমিল রয়েছে ।

Money Corruption
টাকা তছরুপ
author img

By

Published : Dec 5, 2019, 10:33 PM IST

Updated : Dec 7, 2019, 8:27 PM IST

বড়জোড়া, 5 ডিসেম্বর : কখনও ঋণ নিলে সরকারি ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছিল না । আবার কখনও জমানো টাকা তুলতে গেলে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছিল । তাই সমস্যার সমাধানে স্থানীয় বিধায়কের দ্বারস্থ হয় এলাকাবাসী । তাদের কথা শুনে থানায় ডেপুটেশন দেন বিধায়ক সুজিত চক্রবর্তী । তারপর শুরু হয় তদন্ত । সেই তদন্তেই ভৈরবপুর গ্রামের কৃষি উন্নয়ন সমবায় সমিতিতে আর্থিক তছরুপের বিষয় সামনে আসে । তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রায় দেড় কোটি টাকার হিসেবে গরমিল রয়েছে । সূত্র মারফত এই আর্থিক তছরুপের কথা জানতে পেরে সরাসরি ভৈরবপুর গ্রামে যান ETV ভারতের প্রতিনিধি । কথা বলেন প্রতারিতদের সঙ্গে । তাঁরা সরাসরি অভিযোগের আঙুল তোলে সমবায় সমিতির ম্যানেজার ও কোষাধ্যক্ষের দিকে ।

বাঁকুড়ার বড়জোড়া ব্লকের ভৈরবপুর গ্রামের কৃষি উন্নয়ন সমবায় সমিতি । প্রায় 1700 উপভোক্তা রয়েছে এই সমিতিতে । 13টি মৌজার বিভিন্ন গ্রামের মানুষ এই সমবায় সমিতির উপর নির্ভরশীল । ব্যাঙ্কিং পরিষেবা, সহায়ক মূল্যে ধান কেনা, জমির সার কেনাবেচা, স্বনির্ভর গোষ্ঠীদের ঋণদানের মতো কাজকর্ম হয়ে থাকে এই সমবায় সমিতিতে । কিছুদিন ধরে বিভিন্ন রকমের অভিযোগ উঠছিল সমবায় সমিতির কোষাধ্যক্ষ ও ম্যানেজারের বিরুদ্ধে । কারও অভিযোগ, জমানো টাকা তুলতে গেলে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে । আবার SHG নামক একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর অভিযোগ, ঋণ নিলে সরকারি ভর্তুকি দেওয়া হত না । যতবারই ঋণ নেওয়া হয়েছে সমিতির তরফে জানানো হয়েছে, সরকার থেকে কোনও ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে না । সমস্যার সমাধান করতে বড়জোড়ার বিধায়ক সুজিত চক্রবর্তীর কাছে যান প্রতারিতরা । পুরো বিষয়টি তাঁকে জানান । তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে থানার সার্কেল ইন্সপেক্টরের কাছে ডেপুটেশন দেন বিধায়ক সুজিত চক্রবর্তী । তারপরই শুরু হয় তদন্ত । সেই তদন্তেই সামনে আসে আর্থিক তছরুপের বিষয়টি । তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, 2017 থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় দেড় কোটি টাকার হিসেবে গরমিল রয়েছে ।

সূত্র মারফত খবর পেয়ে ভৈরবপুর গ্রামে যান ETV ভারতের প্রতিনিধি । সেখানে গিয়ে সমবায় সমিতির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন । কেউ বললেন, "বাড়ি তৈরির জন্য প্রায় দেড় লাখ টাকা রেখেছিলাম । কিন্তু টাকা চুরি করে নিল কোষাধ্যক্ষ । এখন সরকার যদি কিছু অনুদান দেয় তবে আমরা উপকৃত হই ।"

কৃষি সমবায় সমিতিতে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ । দেখুন ভিডিয়ো...

সমবায় সমিতির সদস্য লক্ষ্মী রাজের স্বামী প্রতিবন্ধী । সমিতিতে 60 হাজার টাকা রেখেছিলেন । কিন্তু তাঁর অভিযোগ, কোষাধ্যক্ষ 30 হাজার টাকা করে দু'বার তুলে নেয় । তারপর ফিক্সড করিয়ে দেয় টাকা । কিন্তু তার কোনও রশিদ দেয়নি । আর টাকাও ফেরত পাননি । তাই এতদিনের পুঁজি হারিয়ে কার্যত দিশেহারা লক্ষ্মী ।

আর্থিক তছরুপের বিষয়টি সামনে আসার পর থেকেই পলাতক কোষাধ্যক্ষ বিশ্বনাথ রাজ ও ম্যানেজার কুমারকান্তি রায় । তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে জানতে বিশ্বনাথ ও কুমারকান্তির বাড়িতে যান ETV ভারতের প্রতিনিধি । কিন্তু তাদের পরিবারের লোক জন স্পষ্ট জানিয়ে দেন, বাড়িতে নেই তারা । অন্যদিকে সংবাদমাধ্যমের তরফে খবর করার পর জেলা প্রশাসনের তরফে সমিতির চেয়ারম্যান, সম্পাদক, ম্যানেজার, ফিল্ড সুপারভাইজ়ার সহ তন্ময় গোস্বামী নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে বড়জোড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে । ইতিমধ্যে সমিতির মনোনীত সেক্রেটারি নেপাল ঘোড়ুইকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে ।

একদিকে তদন্তের স্বার্থে মঙ্গলবার (3 ডিসেম্বর) থেকে বন্ধ সমবায় সমিতি । অন্যদিকে দুর্নীতির জেরে হারাতে বসেছে সমস্ত পুঁজি । এই সমস্যার সমাধান কী, তা এখনও অজানা ।

বড়জোড়া, 5 ডিসেম্বর : কখনও ঋণ নিলে সরকারি ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছিল না । আবার কখনও জমানো টাকা তুলতে গেলে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছিল । তাই সমস্যার সমাধানে স্থানীয় বিধায়কের দ্বারস্থ হয় এলাকাবাসী । তাদের কথা শুনে থানায় ডেপুটেশন দেন বিধায়ক সুজিত চক্রবর্তী । তারপর শুরু হয় তদন্ত । সেই তদন্তেই ভৈরবপুর গ্রামের কৃষি উন্নয়ন সমবায় সমিতিতে আর্থিক তছরুপের বিষয় সামনে আসে । তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, প্রায় দেড় কোটি টাকার হিসেবে গরমিল রয়েছে । সূত্র মারফত এই আর্থিক তছরুপের কথা জানতে পেরে সরাসরি ভৈরবপুর গ্রামে যান ETV ভারতের প্রতিনিধি । কথা বলেন প্রতারিতদের সঙ্গে । তাঁরা সরাসরি অভিযোগের আঙুল তোলে সমবায় সমিতির ম্যানেজার ও কোষাধ্যক্ষের দিকে ।

বাঁকুড়ার বড়জোড়া ব্লকের ভৈরবপুর গ্রামের কৃষি উন্নয়ন সমবায় সমিতি । প্রায় 1700 উপভোক্তা রয়েছে এই সমিতিতে । 13টি মৌজার বিভিন্ন গ্রামের মানুষ এই সমবায় সমিতির উপর নির্ভরশীল । ব্যাঙ্কিং পরিষেবা, সহায়ক মূল্যে ধান কেনা, জমির সার কেনাবেচা, স্বনির্ভর গোষ্ঠীদের ঋণদানের মতো কাজকর্ম হয়ে থাকে এই সমবায় সমিতিতে । কিছুদিন ধরে বিভিন্ন রকমের অভিযোগ উঠছিল সমবায় সমিতির কোষাধ্যক্ষ ও ম্যানেজারের বিরুদ্ধে । কারও অভিযোগ, জমানো টাকা তুলতে গেলে ফিরিয়ে দেওয়া হচ্ছে । আবার SHG নামক একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীর অভিযোগ, ঋণ নিলে সরকারি ভর্তুকি দেওয়া হত না । যতবারই ঋণ নেওয়া হয়েছে সমিতির তরফে জানানো হয়েছে, সরকার থেকে কোনও ভর্তুকি দেওয়া হচ্ছে না । সমস্যার সমাধান করতে বড়জোড়ার বিধায়ক সুজিত চক্রবর্তীর কাছে যান প্রতারিতরা । পুরো বিষয়টি তাঁকে জানান । তাঁদের অভিযোগের ভিত্তিতে থানার সার্কেল ইন্সপেক্টরের কাছে ডেপুটেশন দেন বিধায়ক সুজিত চক্রবর্তী । তারপরই শুরু হয় তদন্ত । সেই তদন্তেই সামনে আসে আর্থিক তছরুপের বিষয়টি । তদন্তের রিপোর্ট অনুযায়ী, 2017 থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় দেড় কোটি টাকার হিসেবে গরমিল রয়েছে ।

সূত্র মারফত খবর পেয়ে ভৈরবপুর গ্রামে যান ETV ভারতের প্রতিনিধি । সেখানে গিয়ে সমবায় সমিতির সদস্যদের সঙ্গে কথা বলেন । কেউ বললেন, "বাড়ি তৈরির জন্য প্রায় দেড় লাখ টাকা রেখেছিলাম । কিন্তু টাকা চুরি করে নিল কোষাধ্যক্ষ । এখন সরকার যদি কিছু অনুদান দেয় তবে আমরা উপকৃত হই ।"

কৃষি সমবায় সমিতিতে আর্থিক তছরুপের অভিযোগ । দেখুন ভিডিয়ো...

সমবায় সমিতির সদস্য লক্ষ্মী রাজের স্বামী প্রতিবন্ধী । সমিতিতে 60 হাজার টাকা রেখেছিলেন । কিন্তু তাঁর অভিযোগ, কোষাধ্যক্ষ 30 হাজার টাকা করে দু'বার তুলে নেয় । তারপর ফিক্সড করিয়ে দেয় টাকা । কিন্তু তার কোনও রশিদ দেয়নি । আর টাকাও ফেরত পাননি । তাই এতদিনের পুঁজি হারিয়ে কার্যত দিশেহারা লক্ষ্মী ।

আর্থিক তছরুপের বিষয়টি সামনে আসার পর থেকেই পলাতক কোষাধ্যক্ষ বিশ্বনাথ রাজ ও ম্যানেজার কুমারকান্তি রায় । তাদের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে জানতে বিশ্বনাথ ও কুমারকান্তির বাড়িতে যান ETV ভারতের প্রতিনিধি । কিন্তু তাদের পরিবারের লোক জন স্পষ্ট জানিয়ে দেন, বাড়িতে নেই তারা । অন্যদিকে সংবাদমাধ্যমের তরফে খবর করার পর জেলা প্রশাসনের তরফে সমিতির চেয়ারম্যান, সম্পাদক, ম্যানেজার, ফিল্ড সুপারভাইজ়ার সহ তন্ময় গোস্বামী নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে বড়জোড়া থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে । ইতিমধ্যে সমিতির মনোনীত সেক্রেটারি নেপাল ঘোড়ুইকে গ্রেপ্তারও করা হয়েছে ।

একদিকে তদন্তের স্বার্থে মঙ্গলবার (3 ডিসেম্বর) থেকে বন্ধ সমবায় সমিতি । অন্যদিকে দুর্নীতির জেরে হারাতে বসেছে সমস্ত পুঁজি । এই সমস্যার সমাধান কী, তা এখনও অজানা ।

Intro:বড়জোড়া থানার ভৈরবপুর কৃষি সমবায় সমিতিতে দেড় কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগ, পলাতক অভিযুক্তরা।


Body:বাঁকুড়ার বড়জোড়া ব্লকের ভৈরবপুর গ্রামে কৃষি উন্নয়ন সমবায় সমিতিতে নিজেদের পরিশ্রমের টাকা রেখে অনেকেই নিঃস্ব হয়ে পড়েছেন তছরুপের জেরে। ভৈরবপুর সমবায় সমিতিতে প্রায় সতেরোশো উপভোক্তা রয়েছে। এলাকার 13 টি মৌজার বিভিন্ন গ্রামের মানুষ এই সমবায় সমিতির উপর নির্ভরশীল। ব্যাঙ্কিং পরিষেবা, সহায়ক মূল্যে ধান কেনা, জমির স্যার বেচাকেনা, স্বয়ংবর গোষ্ঠীদের ঋণদান ইত্যাদি কাজকর্ম হয়ে থাকে এই সমবায় সমিতিতে। কিছুদিন ধরে বিভিন্ন রকমের অভিযোগ উঠেছিল দুর্নীতির সমিতিতে। কেউ তার জীবনের জমা পুঞ্জি সঞ্চয় করে রেখেছিলেন এই সমিতিতে কিন্তু প্রয়োজনে সেই টাকা তুলতে গেলে ফিরিয়ে দেওয়া হয় তাকে। এস এইচ জি গ্রুপ এর মহিলারা তো আবার এখানে লোন নিলে সরকারি সাবসিডি তাদের দেওয়া হতো না। বলা হতো সরকার থেকে কোন সাবসিডি দেওয়া হচ্ছে না। কিছুদিন আগে এই সমস্ত অভিযোগ নিয়ে বড়জোড়া থানায় ডেপুটেশন দেন স্থানীয় মানুষজন। এরপর ঘটনার তদন্ত শুরু হয়। প্রাথমিক তদন্তে ধরা পড়ে 2017 সাল থেকে এই পর্যন্ত প্রায় দেড় কোটি টাকার হিসাবের গরমিল। তদন্ত শুরু হওয়ার পর থেকেই এই সময়ের অভিযুক্ত কর্মকর্তারা ক্যাশিয়ার পলাতক। বিষয়টি বিধানসভায় এলাকার বিধায়ক সুজিত চক্রবর্তী সরকারের নজরে আনেন দিন কয়েক আগে। গত পরশু জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা ওই সমবায় যান এবং তদন্তের স্বার্থে সমবায় টি তালা বন্ধ করে দেন। ইটিভি ভারত একমাত্র সংবাদমাধ্যম ঘটনার খবর পেয়ে স্থানীয় মানুষদের সঙ্গে কথা বললে উঠে আছে ভুরি ভুরি অভিযোগ। অভিযোগ, এমন কিছু মানুষকে একাধিকবার এই সমবায় থেকে মোটা অঙ্কের টাকা দেওয়া হয়েছে যারা কোনভাবেই এই সময়ের সদস্য বা উপভোক্তা নন। গতকাল সমিতির চেয়ারম্যান, সম্পাদক, ব্রাঞ্চ ম্যানেজার, ফিল্ড সুপারভাইজার সমেত জনৈক তনময় গোস্বামীর বিরুদ্ধে বড়জোড়া থানায় এফ আই আর দায়ের করা হয় প্রশাসনের তরফে। এদের বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির 420, 120B,408 ধারায় অভিযোগ করা হয়েছে। 31 টি সেল্ফ হেল্প গ্রুপ এর মহিলা রা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন যারা এই সমবায় তাদের অর্থ জমা করেছেন। স্থানীয়দের দাবি, এই সমবায়ে যে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে তা নিরপেক্ষ তদন্ত হলে কয়েক কোটি টাকা তছরুপের ঘটনা সামনে আসবে।


Conclusion:বাইট: বংশীধর রায়, উপভোক্তা বাইট: লক্ষী রাজ, তারক বাগদি, উপভোক্তা বাইট: সুজয় চৌধুরী( স্থানীয় সিপিএম নেতা) অলোক মুখার্জী( স্থানীয় তৃণমূল নেতা)
Last Updated : Dec 7, 2019, 8:27 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.